ওয়াশিংটন, 18 অক্টোবর: হামাসের সঙ্গে যুদ্ধ যাতে আরও বৃহত্তর সংঘাতে রূপান্তরিত না-হয়, সেই চেষ্টায় বুধবার ইজরায়েলে যাচ্ছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন ৷ গাজার হাসপাতালে বোমা হামলায় কয়েকশো মানুষের মৃত্যুর পর এই যুদ্ধ প্রশমনে কূটনৈতিক প্রচেষ্টা আরও কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে ৷
বাইডেনের জর্ডনেও সফর করার কথা ছিল ৷ কিন্তু তিনি ওয়াশিংটন থেকে বেরিয়ে যাওয়ায় আরব নেতাদের সঙ্গে তাঁর বৈঠক বাতিল করা হয়েছে ৷ মুখোমুখি কথোপকথনের মাধ্যমে জটিলতা কাটাতে চাইছেন তিনি ৷ তিনি ইজরায়েলে গিয়ে সে দেশের প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহুর সঙ্গে গুরুত্বপূর্ণ বৈঠকে মিলিত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে ৷ 7 অক্টোবর হামাসের বেনজির আক্রমণে প্রাণ গিয়েছিল প্রায় 1,400 ইজরায়েলির ৷ তারই পালটা জবাব দিতে গাজায় আরও বড় হামলার প্রস্তুতি নিচ্ছে ইজরায়েল ৷
হোয়াইট হাউসের জাতীয় নিরাপত্তার মুখপাত্র জন কারবি এয়ার ফোর্স ওয়ানে থাকা সাংবাদিকদের বলেন যে, বাইডেন ইজরায়েলিদের কাছ থেকে সেখানকার গ্রাউন্ড লেভেল পরিস্থিতি সম্পর্কে ধারণা পেতে চান এবং 'কিছু কঠিন প্রশ্ন' জিজ্ঞাসা করবেন তিনি । তিনি তাদের (ইজরায়েলি) বন্ধু হিসাবে জিজ্ঞাসা করবেন ৷ হামাসের আক্রমণে নিহত ও পণবন্দি ইজরায়েলিদের পরিবারের সঙ্গে দেখা করারও পরিকল্পনা আছে মার্কিন প্রেসিডেন্টের ৷
আরও পড়ুন: গাজার হাসপাতালে ইজরায়েলি বোমা হামলার তীব্র নিন্দায় সরব রাষ্ট্রসংঘ-হু
গাজায় ইজরায়েলি হামলায় প্রায় 2,800 জন প্যালেস্তাইন নাগরিকের নিহত হওয়ার খবর পাওয়া গিয়েছে । আরও 1,200 জন ধ্বংসস্তূপের নিচে চাপা পড়ে আছেন ৷ তাঁরা জীবিত বা মৃত বলে জানিয়েছে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ । এই পরিসংখ্যান অবশ্য মঙ্গলবার আল-আহলি হাসপাতালে বিস্ফোরণের আগের ৷ বিস্ফোরণের কোনও সুস্পষ্ট কারণ পাওয়া যায়নি । হামাস পরিচালিত গাজার স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, ইজরায়েলের বিমান হামলায় এই ধ্বংসযজ্ঞ চালানো হয়েছে । ইজরায়েলি সামরিক বাহিনী এই হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে এবং তাদের মতে, আরেকটি জঙ্গি গোষ্ঠী প্যালেস্তিনিয়ান ইসলামিক জিহাদের ছোড়া রকেট ভুল দিকে ধাবিত হওয়ায় এই ঘটনা ঘটেছে ৷ তবে ওই সংস্থাও দায় অস্বীকার করেছে ।
বাইডেন একটি বিবৃতিতে বলেছেন যে, তিনি গাজার আল আহলি আরব হাসপাতালে বিস্ফোরণ এবং এর ফলে মারাত্মক প্রাণহানির ঘটনায় ক্ষুব্ধ ও গভীরভাবে দুঃখিত । তিনি আরও বলেন, ঠিক কী ঘটেছে সে সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ চালিয়ে যেতে তিনি তাঁর জাতীয় নিরাপত্তা দলকে নির্দেশ দিয়েছেন । হাসপাতালে মৃত্যুর পরে বিক্ষোভ ছড়িয়ে পড়ে গাজায় ৷ এই হাসপাতাল আহত প্যালেস্তিনীয়দের চিকিৎসা করছিল এবং আরও অনেককে আশ্রয় দিয়েছিলেন যারা লড়াই থেকে আশ্রয় খুঁজছিলেন।
পশ্চিম তীরের প্রধান শহরগুলোর রাস্তায় শত শত প্যালেস্তাইনির উপস্থিতি লক্ষ্য করা যাচ্ছে ৷ বৈরুট, লেবানন এবং আম্মান, জর্ডনে ছড়িয়ে পড়া বিক্ষোভে আরও বেশি লোক যোগ দিয়েছিলেন, ইজরায়েলি দূতাবাসের বাইরেও বিক্ষুব্ধ জনতা জড়ো হয়েছিলেন । হাসপাতালের বিস্ফোরণ নিয়ে ক্ষোভের কারণে জর্ডন সফর বাতিল করেন বাইডেন ৷