নিউইর্য়ক, 4 নভেম্বর: গাজার বেশিরভাগ মানুষ এখন বেঁচে আছে দিনে দু'টুকরো আরবি রুটি খেয়ে ৷ রাষ্ট্রসংঘের তরফে মজুত করা ময়দা দিয়ে তৈরি করা হচ্ছে রুটিগুলি ৷ তবে রুটির থেকেও জলের চাহিদা বেশি ৷ রাস্তায় কেবল একটাই আর্তনাদ শোনা যাচ্ছে, 'জল চাই, জল দাও' ৷ শুক্রবার এমনটাই জানিয়েছেন রাষ্ট্রসংঘের প্যালেস্তাইন উদ্বাস্তু সংস্থার অধিকর্তা টমাস হোয়াইট ৷
তাঁর কথায়, "আমি গত কয়েক সপ্তাহে গাজার বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেরিয়েছি ৷ গাজা এখন মৃত্যুপুরী। এখন কোনও জায়গাই আর নিরাপদ নেই ৷ প্রাণ থাকবে কিনা তা নিয়েই সকলে ভয় পাচ্ছেন ৷ সামান্য খাবারের জোগান কী করে হবে সেটাই তাঁরা বুঝতে পারছেন না ৷ "
প্যালেস্তাইনের শরণার্থী সংস্থা ইউএনআরডব্লিউএ নামে পরিচিত ৷ এই সংস্থা গাজা জুড়ে প্রায় 89টি বেকারিকে সহায়তা করছে ৷ তাদের লক্ষ্য 1.7 মিলিয়ন মানুষের জন্য রুটি তৈরি করা। টমাস হোয়াইট গাজা থেকে একটি ভিডিয়ো বার্তায় রাষ্ট্রসংঘের 193 সদস্য দেশের কূটনীতিকদের এমনটাই বলেছেন । তবে তিনি জানান, গাজার নাগরিকরা এখন রুটির থেকেও বেশি জলের সন্ধান করছেন। রাষ্ট্রসংঘের ডেপুটি মিডইস্ট কোর্ডিনেটর লিন হেস্টিংস বলেছেন, "ইজরায়েল থেকে তিনটি জল সরবরাহ লাইনের মধ্যে মাত্র একটি চালু রয়েছে । বেশিরভাগ মানুষ নোনা জলের উপর নির্ভর করছে ৷ সেটা খেয়েই তারা বেঁচে রয়েছে ৷"
সাংবাদিক বৈঠকে রাষ্ট্রসংঘের একটি বিভাগের প্রধান মার্টিন গ্রিফিথস বলেন, "গাজায় জ্বালানি প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার বিষয়ে ইজরায়েল, মিশর, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং রাষ্ট্রসংঘের কর্তৃপক্ষের মধ্যে তীব্র আলোচনা চলছে । প্রতিষ্ঠান, হাসপাতাল চালানো এবং জল ও বিদ্যুৎ বিতরণের জন্য জ্বালানি অপরিহার্য । আমাদের অবশ্যই এই সরবরাহগুলিকে নির্ভরযোগ্যভাবে, পুনরাবৃত্তিমূলকভাবে এবং নির্ভরতার সঙ্গে গাজায় করার অনুমতি দিতে হবে ।"
আরও পড়ুন: যুদ্ধের প্যালেস্তাইনে এই প্রথম গাজা ছাড়ার অনুমতি বিদেশিদের, রাফাহ সীমান্তে ভিড়
লিন হেস্টিংস আরও জানান, হাসপাতাল, জল বিশুদ্ধকরণ প্ল্যান্ট, খাদ্য উৎপাদন এবং অন্যান্য প্রয়োজনীয় পরিষেবাগুলির জন্য অপরিহার্য ব্যাকআপ জেনারেটর ৷ তবে জ্বালানি সরবরাহ ফুরিয়ে যাওয়ায় একের পর এক জেনারেটর বন্ধ হয়ে যাচ্ছে । টমাস হোয়াইট আবার অন্য বড় সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করেছেন । তিনি বলেন, "নালার জল শোধন করা হচ্ছে না ৷ তার পরিবর্তে সমুদ্রে পাম্প করে ফেলা হচ্ছে । কিন্তু পৌরসভার কর্মীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গিয়েছে, জ্বালানি শেষ হয়ে গেলে এই কাজও করা যাবে না ৷ ফলে নালার জল রাস্তায় উঠে যাবে।"
(সংবাদ সূত্র -এপি)