সোলান (হিমাচল প্রদেশ), 14 অগস্ট: আনিস ভিলা ৷ হিমাচল প্রদেশের সোলানে একটি বাংলোর নাম ৷ এর মালিক ভারতীয় বংশোদ্ভূত বিতর্কিত ঔপন্যাসিক সলমন রুশদি ৷ শুক্রবার নিউইয়র্কে একটি সাহিত্য আলোচনাসভায় তাঁকে ছুরি দিয়ে আঘাত করে নিউ জার্সির এক যুবক ৷ এখন হাসপাতালে ভেন্টিলেটরের বাইরে আছেন, কথা বলছেন (Anees Villa of Salman Rushdie in Himachal Pradesh cries for attention) ৷
ফিরে আসা যাক হিমালচলের বাংলোয় ৷ সোলানের সিলি রোডে 1927 সালে এটি তৈরি হয় এবং পরে তা কিনে নেন রুশদির দাদু ৷ 1953-1969 পর্যন্ত সময়কালে এর মালিককে খুঁজে না পেয়ে জানানো হয় যে, তাঁরা পাকিস্তানে চলে গিয়েছেন ৷ 1969 সালে এই ভিলাটি রুশদির বাবা মহম্মদ আনিস আহমেদ তাঁকে উপহার দিয়েছিলেন ৷ তাঁর নামে এর নাম হয় 'আনিস ভিলা' ৷ এই বাংলোটি হিমাচল প্রদেশ সরকারের শিক্ষা দফতর এবং অন্য সরকারি কাজে ব্যবহার করা হয়েছে ৷
1992 সালে ইন্দো-ব্রিটিশ নাগরিক সলমন রুশদি এই বাংলোর অধিকার দাবি করে আইনি লড়াইয়ে নামেন ৷ 5 বছর পর 1997-এ 2 হাজার 934 বর্গ ইয়ার্ডের আনিস ভিলার মালিকানা পান তিনি ৷ কিন্তু এখন বাংলোটি ভাঙাচোরা অবস্থায় রয়েছে ৷ নিজের ভিটেমাটি ভুলে গেলেন বিশ্বের অন্যতম ধনী লেখক ?
আরও পড়ুন: একটি উপন্যাস এবং তার সঙ্গী কিছু অঘটন, রইল টাইম লাইন
এই বাংলোয় 14টি ঘর আছে ৷ 6টি বড় ঘর, শোয়ার ঘর, একটি হল, রান্নাঘর এবং জামাকাপড় ধোয়ার জায়গা ৷ শেষ 2002-এ এসেছিলেন 'স্যাটানিক ভার্সেস'-এর লেখক ৷ গোবিন্দ রাম এবং তাঁর পরিবারের হাতে এই বাংলো দেখাশোনার ভার দিয়ে গিয়েছিলেন ৷ তাঁরা মান্ডির বাসিন্দা ৷ 25 বছর আগে সপরিবার গোবিন্দ রাম এখানে আসেন এবং তখন থেকে এই বাংলোতে রয়েছেন ৷ গোবিন্দ রামের স্ত্রী ব্যাসা দেবী জানালেন, সলমন রুশদি তাঁর স্বামীকে বলেছিলেন, "বাংলোটা সারানোর জন্য আমি সময়ে সময়ে টাকা পাঠিয়ে দেব ৷" কিন্তু 2015-র পর থেকে না তো গোবিন্দ রামের 8 হাজার টাকা বেতন এসেছে, আর না তো বাংলো মেরামতির টাকা ৷ এমনকী রুশদি নিজেও আর কখনও তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করেননি ৷ তাঁর আত্মীয়রাও খোঁজ নেননি, কী দশা হয়েছে রুশদির পৈতৃক বাংলোর ৷
গোবিন্দ রাম নিজের পকেট থেকেই টাকা দিয়ে সাধ্যমতো মেরামত করে চলেছেন আনিস ভিলা ৷ 2015 থেকে সাত বছর ধরে তিনিই বিদ্যুৎ এবং জলের বিল দিয়ে যাচ্ছেন ৷ ছাদে ফাটল ধরায় দুটো ঘর দিয়ে জল পড়ছে ৷ গোবিন্দ রাম এবং তাঁর পরিবার জানালেন, শনিবার এক প্রতিবেশীর কাছ থেকে তাঁরা রুশদির উপর আক্রমণ চালানোর ঘটনাটি জানতে পেরেছেন ৷
প্রসঙ্গত উল্লেখ্য, হিমাচল প্রদেশ সরকারের বিরুদ্ধে মামলায় জয়ী হয়ে 2000 সালে সলমন রুশদি প্রথম এই বাংলোতে আসেন ৷ এখানেই এক রাতে তিনি তাঁর আইনজীবী বিজয় এসটি শঙ্কর দাসকে জানিয়েছিলেন, তিনি আনিস ভিলাকে লেখকদের জন্য উৎসর্গ করতে এবং একে গ্রন্থাগারে পরিণত করতে চান ৷ এখন যা শুধুই স্বপ্ন মাত্র !
আরও পড়ুন: ভেন্টিলেটর থেকে বেরলেন, কথাও বললেন রুশদি