এক কাপ চায়ে আমি তোমাকে চাই... কবীর সুমন হয়ত এই কথাটা কোনওদিনই বলে উঠতে পারতেন না যদি তাঁর ইয়া বড় একটা গোঁফ থাকত । ভাবুন তো যাঁদের ইয়া বড় বড় গোঁফ, তাঁদের চা খেতে গেলে কত জ্বালা । চায়ে চুমুক দিতে গেলেই গোঁফে চা লেগে একাকার কাণ্ড । চা খাওয়ার আমেজটাই একেবারে মাটি আর কী ।
উনবিংশ শতাব্দীর শেষ দিক । তখন পশ্চিমী মুলুকগুলিতে মোটা মোটা গোঁফ রাখার চল ছিল । তখনকার দিনে ওটাই ছিল 'স্টাইল স্টেটমেন্ট' । গোঁফে তা দেওয়ার জন্য বিশেষ একধরনের ওয়াক্স ব্যবহারের রেওয়াজ ছিল । কিন্তু চা খেতে গেলেই ঘটত বিপত্তি । চায়ে চুমুক দিতে গেলে গোঁফ তো ভিজতই । তার উপর চায়ের গরম ভাপে ওয়াক্স যেত গলে । আর সযত্নে তা দেওয়া গোঁফের কোণা যেত নুইয়ে । একেবারে যাচ্ছেতাই কাণ্ড ।
আর এই সমস্যার কথা মাথায় রেখেই এক উদ্ভাবনী পথ বের করে ব্রিটেন । উনিশ শতকের সাতের দশকে ব্রিটেনের বাজারে আসে এক বিশেষ ধরনের চায়ের পেয়ালা । গোঁফবিলাসী ব্রিটিশ পুরুষদের মুশকিল আসানে আসে বিশেষ কাপ ।
-
Happy Movember! If you want to keep your moustache looking clean and lovely you need a moustache cup like this one presented to Sergeant W Johnson in 1892. #movember #myAWM pic.twitter.com/ZwV7MtmEcz
— Aust War Memorial (@AWMemorial) October 31, 2018 " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="
">Happy Movember! If you want to keep your moustache looking clean and lovely you need a moustache cup like this one presented to Sergeant W Johnson in 1892. #movember #myAWM pic.twitter.com/ZwV7MtmEcz
— Aust War Memorial (@AWMemorial) October 31, 2018Happy Movember! If you want to keep your moustache looking clean and lovely you need a moustache cup like this one presented to Sergeant W Johnson in 1892. #movember #myAWM pic.twitter.com/ZwV7MtmEcz
— Aust War Memorial (@AWMemorial) October 31, 2018
বিশেষ এই কাপগুলি বাইরে থেকে দেখতে আর পাঁচটা সাধারণ কাপের মতোই । আসল জাদুটা রয়েছে কাপের ভিতরের দিকে । কাপের ভিতরের দিকে উপরের প্রান্তের কাছেই একটি শেলফের মতো ব্যবস্থা করা থাকত কাপগুলিতে । শেলফগুলি দেখতে অনেকটা প্রজাপতির মতো । আর সেখানে একটি ছোটো ফুটো করা থাকত । সেই ফুটো দিয়েই কাপ দিয়ে চা চলে যেত মুখে । এতে গোঁফও নষ্ট হত না, আর চা-প্রেমেও খামতি হত না ।
আরও পড়ুন : রাশিয়ার এই গ্রামে সবাই জানে মাদারি-কা-খেল !
এই কাপ প্রথম তৈরি করেছিলেন ব্রিটেনের এক মৃৎশিল্পী । নাম হারভে অ্যাডামস । আর একবার এই কাপ বাজারে আসার সঙ্গে সঙ্গে নিমেষে চাহিদা উঠে যায় তুঙ্গে । এত বিক্রি হয়েছিল যে, এই কাপ তৈরির মাত্র 15 বছরের মধ্যে বিক্রি-বাট্টা ছেড়ে অবসরযাপন শুরু করে দেন হারভে ।
প্রথমে ব্রিটেন, পরে গোটা ইউরোপে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে হারভে অ্যাডামসের তৈরি এই কাপ । পরে অ্যামেরিকাতেও বেশ জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় এই কাপ । তবে সবকিছুর মতো এই কাপেরও সুখের দিন শেষ হয় । প্রথম বিশ্বযুদ্ধের সময় থেকে বড়-মোটা গোঁফের চল ধীরে ধীরে কমতে থাকে । গোঁফ-দাঁড়িওয়ালা মুখে গ্যাস মাস্ক ঠিকভাবে সিল হত না । পাশাপাশি যুদ্ধের সময় গোঁফের যত্নও নেওয়া যেত না ঠিক ভাবে । মোটা গোঁফের রেওয়াজ কমতে থাকায়, গোঁফ বাঁচানোর কাপও আস্তে আস্তে হারিয়ে যেতে থাকে বাজার থেকে ।