ETV Bharat / international

ভারত-বাংলাদেশ সম্পর্ক : পারস্পরিক লাভ - ভারত ও বাংলাদেশ সম্পর্ক

টিকা রফতানির ক্ষেত্রে গুরুত্বের তালিকায় বাংলাদেশকে উপরের দিকে রেখেছে ভারত । ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে পারলে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্কও শক্তিশালী হয় । এই তথ্যকে ভারত কখনোই অবহেলা করেনি ।

indo-bangladesh-relationship-mutually-beneficial
indo-bangladesh-relationship-mutually-beneficial
author img

By

Published : Mar 31, 2021, 1:21 PM IST

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা দিবসে বার্তা দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান । সেখানে তিনি ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন । বলেছিলেন, "ভারতীয় সৈনিকরা আমাদের জন্য তাঁদের জীবন বলিদান দিয়েছেন । আমাদের জনগণ তাঁদের সেই বলিদান সব সময় মনে রাখবেন ।" বাংলাদেশের জনককে মহাত্মা গান্ধি শান্তি পুরস্কার দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে দুই দিনের সফর ছিল ঐতিহাসিক ।

সীমান্ত ছাড়াও বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক সংযোগ ভাগ করে নেয় । বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র এটা প্রমাণ করেছে যে তারা ধর্মের তুলনায় ভাষার বন্ধনে অনেক বেশি আবদ্ধ । আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সৃষ্টির অনুপ্রেরণা । দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সময় বাংলাদেশকে হেনরি কিসিংগার বাস্কেট কেস হিসেবে উপহাস করেছিলেন । তার পরও বাংলাদেশ উন্নয়নের সব নিরিখে পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে দিয়েছে । তাই এটা সত্যিই বাংলাদেশের জন্য সুবর্ণজয়ন্তী ।

ইন্দিরা গান্ধি ও মুজিবুর রহমানের মধ্যে ইন্দো-বাংলা চুক্তি সাক্ষরিত হয় 1975 সালে । এই চুক্তি একাধিক ভালো ও খারাপ সময় দেখেছে । এর জন্য একাধিক ইস্যু ছিল । এর মধ্যে রয়েছে--- শরণার্থী সমস্যা, নদীর জল বণ্টন সংক্রান্ত সমস্যা, সীমান্ত সমস্যা, সীমান্তে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারত বিরোধী শক্তির শিবির, বাংলাদেশের সমস্ত সমস্যার জন্য ভারতকে দায়ী করে অপপ্রচার । আর এই সমস্ত সমস্যাই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে । সেনা শাসনের পর বাংলাদেশে যখন গণতন্ত্রের শিকড় ক্রমশ বিস্তার লাভ করে, তখন থেকেই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কমতে শুরু করে । জমি সমস্যা 2015 সালে পাকাপাকি ভাবে মিটে যায় । যদি 10 বছর ধরে আটকে থাকা তিস্তা জল বণ্টন চুক্তি সম্পাদিত হয়, তাহলে এই উপমহাদেশে অগ্রগতির নতুন ইতিহাস লেখা হবে ।

আরও পড়ুন: ওড়াকান্দিতে নারীশিক্ষা ও মতুয়া কল্যাণে ঢালাও সহায়তার আশ্বাস মোদির

1980 সাল থেকে বাংলাদেশের অগ্রগতির হার ক্রমশ গতি পেতে শুরু করে । এটা শুরু হয়েছিল ভারতের সঙ্গে মাথা পিছু রোজগারের প্রতিযোগিতা দিয়ে । শিল্প ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে সাফল্য পেয়েছে, তা বিস্ময়কর । চার দশক আগে বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষিক্ষেত্রের অংশীদারিত্ব ছিল 33.2 শতাংশ । কৃষিক্ষেত্রের অবদান কমে হয়েছে 14.2 শতাংশ । আর জিডিপিতে শিল্পের অবদান 17 শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে 36.6 শতাংশ । প্রায় একমাস আগে রাষ্ট্রসঙ্ঘের উন্নয়নের নীতি সংক্রান্ত একটি কমিটি বাংলাদেশকে সবচেয়ে কম উন্নত দেশের তালিকা থেকে বের করে আনার দাবি তুলেছিল । ওই কমিটির প্রস্তাব, বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যুক্ত করা হোক । যদি এই প্রস্তাবের অনুমোদন মেলে, তাহলে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলির সঙ্গে কোনওরকম কর এবং রফতানির উর্ধ্বসীমা ছাড়া বাণিজ্য করতে পারবে ।

কোন শুল্ক ছাড়া চিনে উৎপাদিত পণ্যের 97 শতাংশ রফতানি করার অনুমতি রয়েছে বাংলাদেশের কাছে । চিন ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে এই পছন্দসই ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশ 140 বিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করতে পারবে ।

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-এর মাধ্যমে চিন ভারতের চারিদিকে থাকা দেশগুলিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচ্ছে । বেজিং তাদের এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকেও ছাড়েনি । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পূবে তাকাও নীতিকে আরও উন্নত করেছেন এবং পূবের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণও করেছেন । বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন দিশা দেওয়ার জন্য তিনি একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন । টিকা রফতানির ক্ষেত্রে গুরুত্বের তালিকায় বাংলাদেশকে উপরের দিকে রেখেছে ভারত । ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে পারলে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্কও শক্তিশালী হয় । এই তথ্যকে ভারত কখনোই অবহেলা করেনি । বাংলাদেশ যারা দ্রুত বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাচ্ছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে পারলে ভারতেরও লাভ হবে ।

বাংলাদেশের প্রতিষ্ঠা দিবসে বার্তা দিয়েছিলেন শেখ মুজিবুর রহমান । সেখানে তিনি ভারতের প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছিলেন । বলেছিলেন, "ভারতীয় সৈনিকরা আমাদের জন্য তাঁদের জীবন বলিদান দিয়েছেন । আমাদের জনগণ তাঁদের সেই বলিদান সব সময় মনে রাখবেন ।" বাংলাদেশের জনককে মহাত্মা গান্ধি শান্তি পুরস্কার দিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির বাংলাদেশে দুই দিনের সফর ছিল ঐতিহাসিক ।

সীমান্ত ছাড়াও বাংলাদেশ ভারতের সঙ্গে ঐতিহাসিক, সামাজিক, সাংস্কৃতিক এবং আধ্যাত্মিক সংযোগ ভাগ করে নেয় । বাংলাদেশ প্রজাতন্ত্র এটা প্রমাণ করেছে যে তারা ধর্মের তুলনায় ভাষার বন্ধনে অনেক বেশি আবদ্ধ । আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসের নেপথ্যে রয়েছে বাংলাদেশ সৃষ্টির অনুপ্রেরণা । দেশ হিসেবে আত্মপ্রকাশ করার সময় বাংলাদেশকে হেনরি কিসিংগার বাস্কেট কেস হিসেবে উপহাস করেছিলেন । তার পরও বাংলাদেশ উন্নয়নের সব নিরিখে পাকিস্তানকে পিছনে ফেলে দিয়েছে । তাই এটা সত্যিই বাংলাদেশের জন্য সুবর্ণজয়ন্তী ।

ইন্দিরা গান্ধি ও মুজিবুর রহমানের মধ্যে ইন্দো-বাংলা চুক্তি সাক্ষরিত হয় 1975 সালে । এই চুক্তি একাধিক ভালো ও খারাপ সময় দেখেছে । এর জন্য একাধিক ইস্যু ছিল । এর মধ্যে রয়েছে--- শরণার্থী সমস্যা, নদীর জল বণ্টন সংক্রান্ত সমস্যা, সীমান্ত সমস্যা, সীমান্তে ধ্বংসাত্মক কার্যকলাপ, বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ভারত বিরোধী শক্তির শিবির, বাংলাদেশের সমস্ত সমস্যার জন্য ভারতকে দায়ী করে অপপ্রচার । আর এই সমস্ত সমস্যাই ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দূরত্ব তৈরি করে । সেনা শাসনের পর বাংলাদেশে যখন গণতন্ত্রের শিকড় ক্রমশ বিস্তার লাভ করে, তখন থেকেই দুই প্রতিবেশীর মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি কমতে শুরু করে । জমি সমস্যা 2015 সালে পাকাপাকি ভাবে মিটে যায় । যদি 10 বছর ধরে আটকে থাকা তিস্তা জল বণ্টন চুক্তি সম্পাদিত হয়, তাহলে এই উপমহাদেশে অগ্রগতির নতুন ইতিহাস লেখা হবে ।

আরও পড়ুন: ওড়াকান্দিতে নারীশিক্ষা ও মতুয়া কল্যাণে ঢালাও সহায়তার আশ্বাস মোদির

1980 সাল থেকে বাংলাদেশের অগ্রগতির হার ক্রমশ গতি পেতে শুরু করে । এটা শুরু হয়েছিল ভারতের সঙ্গে মাথা পিছু রোজগারের প্রতিযোগিতা দিয়ে । শিল্প ক্ষেত্রে বাংলাদেশ যে সাফল্য পেয়েছে, তা বিস্ময়কর । চার দশক আগে বাংলাদেশের জিডিপিতে কৃষিক্ষেত্রের অংশীদারিত্ব ছিল 33.2 শতাংশ । কৃষিক্ষেত্রের অবদান কমে হয়েছে 14.2 শতাংশ । আর জিডিপিতে শিল্পের অবদান 17 শতাংশ থেকে বৃদ্ধি পেয়ে হয়েছে 36.6 শতাংশ । প্রায় একমাস আগে রাষ্ট্রসঙ্ঘের উন্নয়নের নীতি সংক্রান্ত একটি কমিটি বাংলাদেশকে সবচেয়ে কম উন্নত দেশের তালিকা থেকে বের করে আনার দাবি তুলেছিল । ওই কমিটির প্রস্তাব, বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের তালিকায় যুক্ত করা হোক । যদি এই প্রস্তাবের অনুমোদন মেলে, তাহলে বাংলাদেশ উন্নত দেশগুলির সঙ্গে কোনওরকম কর এবং রফতানির উর্ধ্বসীমা ছাড়া বাণিজ্য করতে পারবে ।

কোন শুল্ক ছাড়া চিনে উৎপাদিত পণ্যের 97 শতাংশ রফতানি করার অনুমতি রয়েছে বাংলাদেশের কাছে । চিন ইতিমধ্যেই জানিয়েছে যে এই পছন্দসই ব্যবস্থার মাধ্যমে বাংলাদেশ 140 বিলিয়ন মার্কিন ডলার উপার্জন করতে পারবে ।

বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভ-এর মাধ্যমে চিন ভারতের চারিদিকে থাকা দেশগুলিকে নিজেদের নিয়ন্ত্রণে নিয়ে নিচ্ছে । বেজিং তাদের এই প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশকেও ছাড়েনি । প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি পূবে তাকাও নীতিকে আরও উন্নত করেছেন এবং পূবের জন্য পদক্ষেপ গ্রহণও করেছেন । বাংলাদেশের সঙ্গে সম্পর্ককে নতুন দিশা দেওয়ার জন্য তিনি একাধিক কর্মসূচি গ্রহণ করেছেন । টিকা রফতানির ক্ষেত্রে গুরুত্বের তালিকায় বাংলাদেশকে উপরের দিকে রেখেছে ভারত । ঢাকার সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে পারলে মায়ানমার, থাইল্যান্ড, কম্বোডিয়া, লাওস এবং ভিয়েতনামের সঙ্গে সম্পর্কও শক্তিশালী হয় । এই তথ্যকে ভারত কখনোই অবহেলা করেনি । বাংলাদেশ যারা দ্রুত বিশ্বের অর্থনৈতিক ব্যবস্থার উন্নতি ঘটাচ্ছে, তাদের সঙ্গে সম্পর্ক শক্তিশালী করতে পারলে ভারতেরও লাভ হবে ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.