হংকং, 2 জুলাই : হংকয়ের রাস্তা ৷ চলছে বিক্ষোভ ৷ জড়ো হয়েছে প্রায় 1000 জনেরও বেশি লোক ৷ কারও হাতে স্বাধীন হংকয়ের পতাকা ৷ কারও হাতে স্লোগান বোর্ড ৷ আর তাতে রয়েছে ব্রিটেনের পতাকা ৷ বিক্ষোভকারীদের সরাতে তৎপর হংকং পুলিশ ৷ ছোড়া হচ্ছে কাঁদানে গ্যাস , গোলমরিচের গোলা , রবারের বুলেট , এমনকী জলকামানও ৷ গতকালের হংকয়ের রাস্তার এই ছবি চিন কর্তৃক আরোপিত বিতর্কিত জাতীয় সুরক্ষা আইনের প্রতিবাদের ৷ গতকাল হংকংয়ে লাগু হয়েছে নতুন জাতীয় নিরাপত্তা আইন ৷ আর গতকালই আইনভঙ্গের অভিযোগে গ্রেপ্তার হয়েছে 370 জন হংকংবাসী ৷
চিন কর্তৃক আরোপিত হংকংয়ের জাতীয় সুরক্ষা আইন নিয়ে বহুদিন ধরে বির্তক চলছে ৷ প্রতিবাদও চলছে বহুদিন ধরে ৷ মঙ্গলবার সকালে আইনটি অনুমোদিত হলেও , জনসাধারণকে আইনটি সম্বন্ধে জানানো হয় মঙ্গলবার রাত 11 নাগাদ ৷ তারপর গতকাল থেকে আইনটি পুরোদমে লাগু করা হয় ৷ সেই সময়ই অল্প সংখ্যক লোক আইনটির প্রতিবাদ করে ৷ দিনের সাথে সাথে প্রতিবাদ বড়ো আকারের বিক্ষোভে পরিণত হয় ৷ আইনটিকে পড়তে হয় সমালোচনার মুখেও ৷
সমালোচনা করে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেন ," এই আইনের দ্বারা চিন আন্তর্জাতিক চুক্তিভঙ্গ করেছে ৷" এছাড়া ব্রিটেনের বিদেশ সচিব ডমিনিক রাব সমালোচনা করে আইনটিকে "কবর খুঁড়ে দেওয়ার মতো একটি ভুল পদক্ষেপ " বলে বর্ণনা করেন ৷ অস্ট্রেলিয়া ও জাপানও এই আইনটির বিরুদ্ধে মত প্রকাশ করেছে ।
জনসন প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন একটি নতুন ভিসা চালু করার ৷ এই ভিসার মেয়াদ পাঁচ বছর ৷ আর এই ভিসা দেখিয়ে হংকংয়ের 2.9 মিলিয়ন নাগরিক ব্রিটেনে বসবাস করতে পারবে এবং সেখানে কাজও করতে পারবে ৷ এমনকী তারা ব্রিটেনের নাগরিকত্বের জন্য আবেদনও করতে পারবেন ৷
শুধু বিশ্ব রাজনীতি নয় ৷ আইনটির নিন্দা করেছে হংকংয়ের মিডিয়া টাইকুন জিমি লাই, যিনি জনপ্রিয় অ্যাপল ডেইলি পত্রিকার প্রতিষ্ঠাতা । তিনি বলেছেন, "নতুন সুরক্ষা আইন কার্যকর করার অর্থ হংকংকে মেরে ফেলা ।"
যদিও হংকয়ের জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষা কমিটির মুখ্য কার্যনিবাহী ক্যারি লেম বলেন , 1997 সালে হস্তান্তরের পর চিন-হংকয়ের কূটনৈতিক সম্পর্ককে মজবুত করতে এই আইনটি গুরুত্বপূর্ণ ৷ তিনি এই আইনের শাস্তি প্রদানের বিষয়টি নিয়ে বলেন , এই আইনটির উদ্দেশ্য "কেবল শাস্তি প্রদান নয়, প্রতিরোধ করাও ছিল।" মানবাধিকার আইন লঙ্খিত হচ্ছে বলে প্রশ্ন ওঠার বিষয়টিকে নিয়ে তিনি বলেন, "কিছু মানবাধিকার নিরঙ্কুশ ছিল না ।"