হংকং, 24 জানুয়ারি: গালওয়ান কাণ্ডের পর আবারও চিনের সঙ্গে ভারতের সম্মুখ সমরের আশঙ্কা৷ তবে এবারের লড়াই সীমান্তে মাটির অধিকার নিয়ে নয়৷ বরং জলের সুষম বণ্টন নিয়ে৷ সংবাদমাধ্য়মের হাতে আসা তথ্য় বলছে, বিশ্বের উচ্চতম নদী ইয়ারলুং জ্য়া়ংবোর উপর বাঁধ দেওয়ার পরিকল্পনা করেছে বেজিং৷ যার বাস্তবায়নে কপাল পুড়বে ভারতের৷ কারণ, বাঁধের কাজ সম্পূর্ণ হলেই নদীপথের পরবর্তী নিচু এলাকায় জলের প্রবাহ কমে যাবে৷ তাতে জলধারার সরবরাহ কমবে ভারতের অংশে৷
প্রসঙ্গত, ইয়ারলুং জ্য়া়ংবো আদতে আমাদের চেনা ব্রহ্মপুত্রেরই চিনা পরিচয়৷ পরবর্তীতে এই নদী তিব্বত হয়ে ভারতে প্রবেশ করেছে৷ আমাদের দেশে আমরা এই নদীকে ব্রহ্মপুত্র নদ হিসাবেই চিনি৷
জলবণ্টন চুক্তি অনুসারে, ব্রহ্মপুত্র থেকে নির্দিষ্ট পরিমাণ জল পাওয়ার অধিকার রয়েছে চিনের দুই পড়শি ভারত ও বাংলাদেশের৷ সেক্ষেত্রে এই তিন পক্ষের কোনও একজন যদি নদীবক্ষে বাঁধ নির্মাণের পরিকল্পনা করে, তবে তা রূপায়ণের আগে অবশ্য়ই সবাইকে আলোচনার টেবিলে বসতে হবে৷ বলা বাহুল্য়, চিন এসবের ধার ধারেনি৷ আর জটিলতা তৈরি হচ্ছে সেখানেই৷
চিনের সঙ্গে ভারতের সাম্প্রতিক সম্পর্কে চিড় ধরলেও বাংলাদেশ কিন্তু বরাবরই বেজিংয়ের সঙ্গে সুসম্পর্ক রেখেই চলেছে৷ তবে ইয়ারলুং জ্য়া়ংবোর উপর বাঁধ দেওয়ার প্রশ্নে তারাও নয়াদিল্লির পাশেই দাঁড়িয়েছে ঢাকা৷ চিনের এই দাদাগিরির তীব্র প্রতিবার জানিয়েছে শেখ হাসিনার দেশও৷
প্রসঙ্গত, শুধুমাত্র ভারত ও বাংলাদেশই নয়৷ চিনের দাদাগিরিতে ভুগতে হবে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার একাধিক দেশকেও৷ ইতিমধ্য়েই চিনের বৃহত্তম নদী মেকংয়ের উপর 11টি বিশাল বাঁধ তৈরি করেছে বেজিং৷ যার ফলে মায়ানমার, লাওস, থাইল্য়ান্ড, কম্বোডিয়া এবং ভিয়েতনামে ওই নদীপথে জলের প্রবাহ মারাত্মক কমে গিয়েছে৷ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নদীর বাস্তুতন্ত্র৷ রুজিতে টান পড়েছে নদীর উপর নির্ভরশীল মানুষজনেরও৷ চিনের এই ভূমিকায় ক্ষোভ বাড়ছে ভুক্তভোগীদের৷ এবার যদি ইয়ারলুং জ্য়া়ংবোতেও বাঁধ নির্মাণে অনড় থাকে চিন, তাহলে আগামী দিনে তা নিয়ে ভারতের সঙ্গে তার সংঘাত বাড়বে বলেই আশঙ্কা ওয়াকিবহাল মহলের৷