বেজিং, 26 সেপ্টেম্বর : বেশ কিছু বিষয়ে এখনও উদ্বেগ থাকলেও চিনে ইতিমধ্যেই আপদকালীন পরিস্থিতির জন্য বিশেষ কিছু ক্ষেত্রে কোরোনা ভ্যাকসিনের প্রয়োগের সবুজ সংকেত দিয়েছে । চিনের অধিবাসী কান চাইয়ের শরীরে প্রয়োগ করা হয়েছিল ভ্যাকসিন । প্রথম ডোজ়ে সেভাবে কোনও প্রতিক্রিয়া হয়নি । কিন্তু দ্বিতীয় ডোজ় পড়তেই অদ্ভুত মাথা ঝিমঝিম অনুভব করতে থাকেন তিনি ।
কান চাই চিনের একজন বিশিষ্ট লেখক । সংবাদপত্রগুলিতেও তাঁর প্রতিবেদন প্রকাশিত হয় । চূড়ান্ত অনুমোদনের আগে, চিনে হাতে গোনা যে কয়েকজন আক্রান্তের শরীরে কোরোনা ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে, তাঁদের মধ্যে একজন কান চাই । চলতি মাসে একটি ওয়েবিনারে তিনি জানিয়েছিলেন, “আমি রাস্তা দিয়ে গাড়ি চালিয়ে যাচ্ছিলাম । হঠাৎ মাথা ঝিম ঝিম করতে শুরু করল । যেন আমি মদ্যপ অবস্থায় গাড়ি চালাচ্ছি । সঙ্গে সঙ্গে আমি গাড়ি রাস্তার ধারে দাঁড় করাই । কিছুক্ষণ বিশ্রাম নিই । তারপর আস্তে আস্তে সুস্থ বোধ করি ।”
কোরোনা ভাইরাসের সংক্রমণ রোধে গোটা বিশ্বের বিভিন্ন ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা ও সংশ্লিষ্ট সরকারগুলি কোরোনার প্রতিষেধক তৈরির দৌড়ে নেমেছে । এই পরিস্থিতিতে কান চাইয়ের শরীরে এই ধরনের প্রতিক্রিয়া ভ্যাকসিন প্রয়োগের নীতিগত ও সুরক্ষাগত দিক নিয়ে প্রশ্ন তুলতে শুরু করেছে ।
চিনা সংস্থাগুলির তরফে বলা হয়েছিল, মানবদেহে পরীক্ষামূলক প্রয়োগের আগে সুরক্ষা ও কার্যকারিতা খতিয়ে দেখতে গবেষক ও শীর্ষ আধিকারিকদের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হবে । জুন মাসে সেই সংক্রান্ত একটি নামের তালিকাও তৈরি করেছিল চিন । সেই তালিকাভুক্ত গবেষক ও আধিকারিকদের শরীরে ভ্যাকসিনের প্রয়োগ করা হয়েছিল । চিনের এক স্বাস্থ্য আধিকারিকের কথায়, চিন ইতিমধ্যেই এই ভাইরাসকে অনেকটাই নির্মূল করে দিয়েছে । এখন ভাইরাস যাতে আবারও ফিরে না আসে, তা নিশ্চিত করতে হবে ।
আরও পড়ুন : শিম্পাঞ্জি অ্যাডিনো ভাইরাসের জন্য ওয়াশিংটন বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে গাঁটছড়া ভারত বায়োটকের
তবে অন্য একটি মহলে আবার ভ্যাকসিনের এইভাবে জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে প্রয়োগের সিদ্ধান্ত নিয়েও প্রশ্ন তোলা হয়েছে । বলা হচ্ছে, চিনে যখন আর নতুন করে কোরোনার সংক্রমণ সেভাবে ঘটছে না, তবে জরুরিকালীন পরিস্থিতিতে ভ্যাকসিন প্রয়োগের দরকার কী ।
চিনে এখনও পর্যন্ত কতজনের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করা হয়েছে, তার সঠিক কোনও তথ্য এখনও পর্যন্ত পাওয়া যায়নি । তবে সূত্রের খবর, চিনের সরকার অধীনস্থ সিনোফার্মের থেকে ভর্তুকিপ্রাপ্ত সংস্থা CNBG পরীক্ষামূলক প্রয়োগের বাইরে এখনও পর্যন্ত প্রায় 3 লাখ 50 হাজার মানুষের শরীরে এই ভ্যাকসিন প্রয়োগ করেছে । সিনোভ্যাক নামে চিনের অন্য একটি ভ্যাকসিন প্রস্তুতকারী সংস্থা নিজেদের কর্মী ও তাঁদের পরিবারের প্রায় 90 শতাংশকে ভ্যাকসিন দিয়েছে ।
ভ্যাকসিন তৈরির দৌড়ে চিনের এই ধরনের লাগামছাড়া প্রয়োগ নিয়ে ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বিভিন্ন মহলে ।
আরও পড়ুন : কম সময়ে, কম খরচে কোরোনা নির্ণয় করবে ’ফেলুদা’ কিট