ওয়েস্ট পাম বিচ, 28 ডিসেম্বর : 9 বিলিয়ন মার্কিন ডলারের প্যান্ডেমিক রিলিফ প্যাকেজে স্বাক্ষর করলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। যা ব্যবসা ও নাগরিকদের নগদ অর্থের যোগান দেবে। আর এই প্যাকেজের দাবি দীর্ঘদিন ধরে করে আসছিলেন অ্যামেরিকানরা। রবিবার রাতে এক বিবৃতির মাধ্যমে এই কথা জানিয়েছেন ট্রাম্প। রবিবার সন্ধ্যায় ট্রাম্পের টুইট, কোভিড ত্রাণ নিয়ে ভালো খবর আসছে। তবে এর থেকে বেশি কিছু ট্রাম্পও জানাননি। আবার হোয়াইট হাউজ়ও কিছু বলেনি। এই বিলের ফলে সরকারি সংস্থাগুলি সেপ্টেম্বরের মধ্যে 1.4 ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার পাবে। এছাড়া আরও কিছু প্রয়োজনে অর্থ খরচ করা হবে।
অ্যামেরিকায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন শেষ হয়েছে গত মাসে। জিতেছেন ডেমোক্র্যাট প্রার্থী জো বাইডেন। আগামী মাসেই তিনি প্রেসিডেন্ট পদে বসবেন। ডেমোক্র্যাটদের তরফে এই সাহায্য আরও বেশি করা হবে বলে ইতিমধ্যে প্রতিশ্রুতি দেওয়া হয়েছে। আর এই পরিস্থিতিতে রিপাবলিকানরা অপেক্ষা করাকেই শ্রেয় বলে মনে করেছেন।
তবে কোভিড-19 ত্রাণ ও খরচ সংক্রান্ত বিল এখনও ধোঁয়াশার মধ্যে রয়েছে। কারণ, বেকারদের সহায়তা করার তহবিলের পরিমাণ কমানো হয়েছে। এই বিষয়ে পদক্ষেপ করার জন্য আইন প্রণেতারা ট্রাম্পকে অনুরোধ করেছিলেন। ট্রাম্প যদিও দুই পক্ষের কাউকেই গুরুত্ব দেননি। কয়েকমাস সময় কাটিয়ে দেওয়ার পর গত সপ্তাহে তিনি জানান যে হাউজ ও সেনেটে এই বিল পাস হয়ে গিয়েছে। তবে ত্রাণের বিষয়টি বাড়াতে এটা আবার বিবেচনা করা হবে বলে তিনি জানিয়েছিলেন।
আরও পড়ুন: মার্কিন মুলুকে গুলিবিদ্ধ হায়দরাবাদের ব্যক্তি
সেনেটের বার্নি স্যান্ডার্স জানিয়েছেন, অনেক মানুষ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন। নিজের অহংকার সরিয়ে রেখে অবশেষে প্রেসিডেন্ট সঠিক কাজটি করলেন। অন্যদিকে রিপাবলিকান সেনেটার প্যাট টমি জানান, ট্রাম্প চান যাতে তাঁকে ভালো কাজের জন্য মনে রাখা হয়। কিন্তু এটা যদি না করেন, তাহলে তাঁকে তাঁর খারাপ ব্যবহারের জন্য মনে রাখা হবে। তাই ট্রাম্পের উচিত, দ্রুত বিলে সই করে দেওয়া। টমির সঙ্গেই সহমত মেরিল্যান্ডের গর্ভনর রিপাবলিকান পার্টির ল্যারি হোগান।
রবিবার ওয়েস্ট পাম বিচের গল্ফ কোর্সে ফুরফুরে মেজাজে ছিলেন ট্রাম্প। তবে, তিনি কোভিড-19 সংক্রান্ত ওই বিল স্বাক্ষর করার কোনও ইঙ্গিতই দেননি। সম্প্রতি এই বিল নিয়ে তাঁর ক্ষোভ তিনি লুকিয়ে রাখেননি। ঘনিষ্ঠ মহলেও যেমন তিনি জানিয়েছেন, তেমনই তিনি টুইটারে বিষয়টি জানান।
কয়েকদিন আগে ডেমোক্র্যাটরা হাউজের সদস্যদের ওয়াশিংটনে এসে ভোট দেওয়ার আবেদন করেছিল। ট্রাম্প 2000 মার্কিন ডলারের যে রিলিফ চেক দেওয়ার কথা বলেছে, সেই প্রেক্ষিতেই ওই ভোটের আবেদন জানানো হয়। কারণ, কংগ্রেস শুধুমাত্র 600 মার্কিন ডলার দেওয়ার বিষয়ে অনুমতি দিয়েছে। কিন্তু সেনেটে যেহেতু রিপাবলিকানদের আধিপত্য রয়েছে, তাই আবেদনে সাড়ে মেলেনি। এদিকে ওয়াশিংটন কোনওরকম সতর্কীকরণ ছাড়া চুক্তির দিকে ঝুঁকছে। কারণ, ট্রাম্প এর পক্ষে। আর কংগ্রেসের উভয় হাউজ থেকেই এর ব্যাপক অনুমোদন পাওয়া গিয়েছে। তাই হোয়াইট হাউজ রিপাবলিকানদের জানিয়েছে যে ট্রাম্প এতে সমর্থন করবেন।
আরও পড়ুন: অ্যামেরিকায় কোরোনা ভ্যাকসিন দেওয়া শুরু, অভিনন্দন ট্রাম্পের
ট্রাম্প বিলে স্বাক্ষর করতে ব্যর্থ হলে 11 মিলিয়ন মানুষ বেকার ভাতা পাওয়া থেকে বঞ্চিত হবেন। কারণ, শনিবার এই সংক্রান্ত দুটি ফেডেরাল প্রোগ্রামের মেয়াদ শেষ হয়ে গিয়েছে। এছাড়া আরও অনেকে বেকারত্ব সংক্রান্ত সুবিধা থেকে আগামী কয়েক সপ্তাহে অনেকেই বঞ্চিত হবেন। তবে এটা নির্ভর করছে যে তাঁরা কোন প্রদেশে বসবাস করেন, কোন প্রোগ্রামের উপর ভরসা করে আছেন, আর কবে সাহায্য পাওয়ার জন্য আবেদন করেছেন। অ্যান্ড্রু স্টেটনার, একটি বেকারত্ব বিমা বিশেষজ্ঞ জানান যে 9.5 মিলিয়ন মানুষ এর উপর নির্ভরশীল। তাঁরা আর আবেদন করতে পারবেন না।