ETV Bharat / international

Climate Change: রোগের নাম ‘জলবায়ু পরিবর্তন’, প্রথম আক্রান্ত সত্তরের বৃদ্ধা

দূষণ এবং অত্যধিক গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমনে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে দীর্ঘ দিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন বিজ্ঞানীরা ৷ উন্নত দেশগুলিকে এব্যাপারে সতর্ক করতে রাস্তায় নেমে একটানা আন্দোলনও চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবেশ সচেতন মানুষজন ৷ তাতে প্রাথমিক ভাবে সাড়া মিললেও, হাঁকডাকই সার ৷ জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে তেমন কোনও বড় পদক্ষেপ করতে দেখাই যায়নি বিশ্বের তাবড় দেশকে ৷

Elderly woman becomes worlds first patient to be diagnosed with Climate Change
জলবায়ু পরিবর্তনের প্রকোপ এ বার মানবশরীরেও
author img

By

Published : Nov 9, 2021, 7:56 PM IST

টরন্টো, 9 সেপ্টেম্বর: আর শুধু পরিবশ নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের হানা এ বার সরাসরি মানবশরীরে ৷ কানাডায় 70 বছর বয়সি এক মহিলা আক্রান্ত হলেন ‘জলবায়ু পরিবর্তন’ রোগে ৷ একটানা তাপপ্রবাহ এবং দূষিত বাতাসে তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে এই রোগ ৷ পরিবেশের উপর জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বহু বছর ধরে সতর্ক করে আসছেন বিজ্ঞানীরা ৷ কিন্তু সরাসরি এবার মানবশরীরে থাবা বসালো জলবায়ু পরিবর্তন ৷ আক্রান্ত ওই মহিলাই বিশ্বের প্রথম ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তনে আক্রান্ত রোগী ৷

আক্রান্ত ওই মহিলা কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অধিবাসী ৷ বেশ কিছু দিন আগে হাঁপানির উপসর্গ দেখা দেয় তাঁর ৷ সেই থেকে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন ৷ দীর্ঘ দিন ওই মহিলাকে পর্যবেক্ষণ করে, তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পূর্ণ করে ওই চিকিৎসকেরাই জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রথম রোগী ওই মহিলা ৷ এমনিতেই ডায়বিটিস রয়েছে ওই মহিলার ৷ হৃদযন্ত্রের সমস্যাও রয়েছে ৷ একটি ট্রেলারের মধ্যে তাঁর বাস, যার মধ্যে বাতাস চলাচলের সঠিক ব্যবস্থা নেই ৷ কিছুদিন আগে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি ৷

আরও পড়ুন: America: দেড় বছর পর উঠল নিষেধাজ্ঞা, বিদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য দরজা খুলে দিল আমেরিকা

সংবাদমাধ্যমে ওই মহিলার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আচমকা দুর্বল হয়ে পড়েন ওই মহিলা ৷ যতই জল খান না কেন, মুখের ভিতরটা শুকিয়ে যেতে থাকে বার বার ৷ অস্বাভাবিক রকম ঝিমুনি এবং ক্লান্তি বোধ করতে থাকেন ৷ ডিহাইড্রেশন হয়েছে বুঝেই চিকিৎসা করাতে আসেন ৷ কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যায়, সমস্যা আরও গভীরে ৷ তাতেই তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ খুঁটিয়ে দেখে, বিশ্লেষণ করে দেখা হয় প্রত্যেক উপসর্গ ৷ তাতেই বোঝা যায় যে, ওই মহিলা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়েছেন ৷

দূষণ এবং অত্যধিক গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমনে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে দীর্ঘ দিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন বিজ্ঞানীরা ৷ উন্নত দেশগুলিকে এব্যাপারে সতর্ক করতে রাস্তায় নেমে একটানা আন্দোলনও চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবেশ সচেতন মানুষজন ৷ তাতে প্রাথমিক ভাবে সাড়া মিললেও, হাঁকডাকই সার ৷ জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে তেমন কোনও বড় পদক্ষেপ করতে দেখাই যায়নি বিশ্বের তাবড় দেশকে ৷ বরং পাহাড়-জঙ্গল সাফ করে খনিজ উত্তোলন, বহুতল নির্মাণ, কয়লার জোগান বাড়িয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে আরও শক্তিশালী করা থেকে বিরত হচ্ছে না কেউই ৷

আরও পড়ুন: Covaxin : কোভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিল ব্রিটিশ সরকার

ঘরে ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, রাস্তাঘাটে থিকথিক করা যানবাহন, বাজি পোড়ানো, শিল্প এবং রাসায়নিক বর্জ্য দহনের প্রভাবে দিন দিন আরও বিষময় হয়ে উঠছে বাতাস ৷ মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে বেড়ে চলেছে তাপমাত্রা ৷ এমনকি ঋতুর পর্যায়ক্রমেও বদল দেখা দিতে শুরু করেছে ৷ এমনকি উষ্ণায়নের ফলে দুই মেরুর বরফ গলে বাড়তে শুরু করেছে সমুদ্রের জলস্তরও ৷ এমন পরিস্থিতিতে কানাডার ওই মহিলা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পরিবেশ এবং সমাজ সচেতন মানুষ ৷

উল্লেখ্য, উষ্ণায়নের ফলে গত জুন মাসে কানাডার তাপমাত্রা প্রায় 50 ডিগ্রিতে পৌঁছয় । তীব্র তাপপ্রবাহে দেশে 500-র বেশি মানুষ মারা যান । জুলাই-আগস্ট মাসে দেশে বাতাসের গুণমান 43 গুণ বেশি ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায় । সেখান থেকেই সত্তরোর্ধ্ব ওই মহিলা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রকোপে পড়েছেন বলে মত চিকিৎসকদের । তাই দেশের সমস্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা মিলে পৃথিবীর স্বাস্থ্যরক্ষায় ‘ডক্টর্স অ্যান্ড নার্সেস ফর প্ল্যানেটারি হেলথ’ সংগঠন গড়ে তুলেছেন ৷ জলবায়ু পরিবর্তন পরিবেশ তো বটেই, মানবশরীরের পক্ষে কতটা বিপজ্জনক, তা বোঝাতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালাবেন তাঁরা ৷

টরন্টো, 9 সেপ্টেম্বর: আর শুধু পরিবশ নয়, জলবায়ু পরিবর্তনের হানা এ বার সরাসরি মানবশরীরে ৷ কানাডায় 70 বছর বয়সি এক মহিলা আক্রান্ত হলেন ‘জলবায়ু পরিবর্তন’ রোগে ৷ একটানা তাপপ্রবাহ এবং দূষিত বাতাসে তাঁর শরীরে বাসা বেঁধেছে এই রোগ ৷ পরিবেশের উপর জলবায়ুর পরিবর্তনের প্রভাব নিয়ে বহু বছর ধরে সতর্ক করে আসছেন বিজ্ঞানীরা ৷ কিন্তু সরাসরি এবার মানবশরীরে থাবা বসালো জলবায়ু পরিবর্তন ৷ আক্রান্ত ওই মহিলাই বিশ্বের প্রথম ‘ক্লাইমেট চেঞ্জ’ অর্থাৎ জলবায়ু পরিবর্তনে আক্রান্ত রোগী ৷

আক্রান্ত ওই মহিলা কানাডার ব্রিটিশ কলম্বিয়ার অধিবাসী ৷ বেশ কিছু দিন আগে হাঁপানির উপসর্গ দেখা দেয় তাঁর ৷ সেই থেকে চিকিৎসকদের পর্যবেক্ষণে ছিলেন ৷ দীর্ঘ দিন ওই মহিলাকে পর্যবেক্ষণ করে, তাঁর শারীরিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা সম্পূর্ণ করে ওই চিকিৎসকেরাই জানিয়েছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রথম রোগী ওই মহিলা ৷ এমনিতেই ডায়বিটিস রয়েছে ওই মহিলার ৷ হৃদযন্ত্রের সমস্যাও রয়েছে ৷ একটি ট্রেলারের মধ্যে তাঁর বাস, যার মধ্যে বাতাস চলাচলের সঠিক ব্যবস্থা নেই ৷ কিছুদিন আগে আচমকাই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি ৷

আরও পড়ুন: America: দেড় বছর পর উঠল নিষেধাজ্ঞা, বিদেশি ভ্রমণকারীদের জন্য দরজা খুলে দিল আমেরিকা

সংবাদমাধ্যমে ওই মহিলার চিকিৎসকেরা জানিয়েছেন, আচমকা দুর্বল হয়ে পড়েন ওই মহিলা ৷ যতই জল খান না কেন, মুখের ভিতরটা শুকিয়ে যেতে থাকে বার বার ৷ অস্বাভাবিক রকম ঝিমুনি এবং ক্লান্তি বোধ করতে থাকেন ৷ ডিহাইড্রেশন হয়েছে বুঝেই চিকিৎসা করাতে আসেন ৷ কিন্তু পরীক্ষা করে দেখা যায়, সমস্যা আরও গভীরে ৷ তাতেই তাঁকে পর্যবেক্ষণে রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় ৷ খুঁটিয়ে দেখে, বিশ্লেষণ করে দেখা হয় প্রত্যেক উপসর্গ ৷ তাতেই বোঝা যায় যে, ওই মহিলা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হয়েছেন ৷

দূষণ এবং অত্যধিক গ্রিন হাউস গ্যাসের নির্গমনে পরিবেশের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে বলে দীর্ঘ দিন ধরেই সতর্ক করে আসছেন বিজ্ঞানীরা ৷ উন্নত দেশগুলিকে এব্যাপারে সতর্ক করতে রাস্তায় নেমে একটানা আন্দোলনও চালিয়ে যাচ্ছেন পরিবেশ সচেতন মানুষজন ৷ তাতে প্রাথমিক ভাবে সাড়া মিললেও, হাঁকডাকই সার ৷ জলবায়ু পরিবর্তন রুখতে তেমন কোনও বড় পদক্ষেপ করতে দেখাই যায়নি বিশ্বের তাবড় দেশকে ৷ বরং পাহাড়-জঙ্গল সাফ করে খনিজ উত্তোলন, বহুতল নির্মাণ, কয়লার জোগান বাড়িয়ে তাপবিদ্যুৎ কেন্দ্রগুলিকে আরও শক্তিশালী করা থেকে বিরত হচ্ছে না কেউই ৷

আরও পড়ুন: Covaxin : কোভ্যাকসিনকে ছাড়পত্র দিল ব্রিটিশ সরকার

ঘরে ঘরে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত যন্ত্র, রাস্তাঘাটে থিকথিক করা যানবাহন, বাজি পোড়ানো, শিল্প এবং রাসায়নিক বর্জ্য দহনের প্রভাবে দিন দিন আরও বিষময় হয়ে উঠছে বাতাস ৷ মাত্রাতিরিক্ত দূষণের কারণে বেড়ে চলেছে তাপমাত্রা ৷ এমনকি ঋতুর পর্যায়ক্রমেও বদল দেখা দিতে শুরু করেছে ৷ এমনকি উষ্ণায়নের ফলে দুই মেরুর বরফ গলে বাড়তে শুরু করেছে সমুদ্রের জলস্তরও ৷ এমন পরিস্থিতিতে কানাডার ওই মহিলা জলবায়ু পরিবর্তনের শিকার হওয়ায় সিঁদুরে মেঘ দেখছেন পরিবেশ এবং সমাজ সচেতন মানুষ ৷

উল্লেখ্য, উষ্ণায়নের ফলে গত জুন মাসে কানাডার তাপমাত্রা প্রায় 50 ডিগ্রিতে পৌঁছয় । তীব্র তাপপ্রবাহে দেশে 500-র বেশি মানুষ মারা যান । জুলাই-আগস্ট মাসে দেশে বাতাসের গুণমান 43 গুণ বেশি ক্ষতিকারক হয়ে দাঁড়ায় । সেখান থেকেই সত্তরোর্ধ্ব ওই মহিলা জলবায়ু পরিবর্তনের প্রকোপে পড়েছেন বলে মত চিকিৎসকদের । তাই দেশের সমস্ত চিকিৎসক এবং স্বাস্থ্যকর্মীরা মিলে পৃথিবীর স্বাস্থ্যরক্ষায় ‘ডক্টর্স অ্যান্ড নার্সেস ফর প্ল্যানেটারি হেলথ’ সংগঠন গড়ে তুলেছেন ৷ জলবায়ু পরিবর্তন পরিবেশ তো বটেই, মানবশরীরের পক্ষে কতটা বিপজ্জনক, তা বোঝাতে সচেতনতামূলক কর্মসূচি চালাবেন তাঁরা ৷

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.