ETV Bharat / international

কাটল সঙ্কট, স্বস্তিতে অ্যামেরিকা

author img

By

Published : Dec 19, 2020, 10:04 AM IST

জো বাইডেন অ্যামেরিকার জনতার কাছে আবেদন করেছিলেন বিভেদের পৃষ্ঠা উলটে দিয়ে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে । বাইডেন জানিয়েছিলেন, তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে কোভিড মোকাবিলায় ব্যাপকহারে টিকাকরণ, গরিবদের আর্থিক সাহায্য ও অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন ।

জো বাইডেন
জো বাইডেন

হায়দরাবাদ, 19 ডিসেম্বর : স্বাধীনতা, সাম্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মূল নীতির ওপর নির্মিত, বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মার্কিন গণতন্ত্রের ইমারত এবার সবথেকে টালমাটাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেছে । নভেম্বরে দেশের 46তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন আট কোটি ভোটে জিতেছেন । অনিশ্চয়তা দেখা দেয়, যখন দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প হার স্বীকার করতে অস্বীকার করেন । কিন্তু ট্রাম্পের অতি উৎসাহকেও হার মানতে হয়, যখন বাইডেন ইলেক্টোরাল কলেজ থেকেও 306টি ভোট নিশ্চিত করে ফেলেন । জয়ের পর বাইডেন ট্যুইট করেন, "অ্যামেরিকায় রাজনীতিবিদরা ক্ষমতা দখল করেন না - মানুষ সেটা তাঁদের হাতে দেয় । এই দেশে গণতন্ত্রের শিখা বহুদিন আগেই জ্বলে উঠেছিল । আর আমরা জানি যে কোনও কিছুই তা সে মহামারী হোক বা ক্ষমতার অব্যবহার, সেই শিখাকে নেভাতে পারবে না ।"

তিনি অ্যামেরিকার জনতার কাছে আবেদন করেন বিভেদের পৃষ্ঠা উলটে দিয়ে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে । বাইডেন জানান যে তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে কোভিড মোকাবিলায় ব্যাপকহারে টিকাকরণ, গরিবদের আর্থিক সাহায্য ও অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন । ভোটের দৌড়ে নেমে ট্রাম্প প্রাণপণ চেষ্টা করেন, গায়ের রঙের ভিত্তিতে মার্কিন সমাজকে বিভক্ত করতে । পরাজয় সত্ত্বেও যে রেকর্ড পরিমাণ ভোট তিনি পেয়েছেন, তার থেকেই এই বিষয়টাই স্পষ্ট হয় । বাইডেন জয় চুরি করেছেন, ট্রাম্পের এই অযৌক্তিক অভিযোগের কারণে ওয়াশিংটনের পথে ঘাটে খণ্ডযুদ্ধ পর্যন্ত বেধে যায় । একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ব্যবহার অভূতপূর্ব, যখন তিনি সেইসব আধিকারিকদের কটূক্তি করেন, যাঁরা বলেছিলেন যে ভোটে কোনও বেনিয়ম হয়নি । তিনি বিচারব্যবস্থাকেই শুধু সমালোচনা করে ক্ষান্ত হননি, পাশাপাশি তাঁর মতো করে যারা চলতে চাননি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সেইসব ব্যক্তিদের অপসারিতও করেন তিনি । তাঁর আচরণ কোভিড মহামারীর থেকেও বেশি বিপজ্জনক ছিল । ট্রাম্পবাহিনী চেষ্টা করেছিল যাতে 16টি ইলেক্টোরাল ভোট বদলে মিশিগানে নির্বাচনের অভিমুখ বদলে দেওয়া যায় । ফলাফল বদলাতে অস্বীকার করে মিশিগানের রিপাবলিকান স্পিকার বলেন, "আমি আমাদের নিয়ম, প্রথা, প্রতিষ্ঠানকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে ট্রাম্পের পক্ষে প্রস্তাব আনার কথা ভাবতেও পারি না।" স্পিকার আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যদি বেনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, তাহলে দেশকে হারাতে হতে পারে । তাঁর কথা থেকেই স্পষ্ট যে ট্রাম্প কতটা নিচে নেমেছিলেন । চার বছর আগে ইকোনমিস্ট পত্রিকার করা একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনকে বিশ্বের পক্ষে সবথেকে বড় বিপদ মনে করা হচ্ছে ।

আরও পড়ুন : ভোট গণনা নিয়ে কারচুপির অভিযোগ ট্রাম্পের , টুইট সরাল টুইটার

ট্রাম্প গত চার বছরে তাদের সঠিক প্রমাণ করতে কোনও কিছুই ছাড়েননি । প্রেসিডেন্ট পদগ্রহণের সমারোহে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আজ থেকে একটি নতুন দিশায় আমরা চালিত হব । সবপ্রথমে আমেরিকাই আসবে ।” কিন্তু তিনি সমস্ত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে একটা হাস্যকর জায়গায় নিয়ে যান এবং নিজেকে অদ্ভূত অহংকারে চালিত করতে থাকেন । তাঁর হঠকারী সিদ্ধান্তগুলোর জেরে তিনি আমেরিকাকে বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন । ট্রাম্প একপেশে ভাবে প্যারিস চুক্তি এবং ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন । তিনি ট্রান্স-আটলান্টিক জোট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও ত্যাগ করেন । যেভাবে তিনি চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংঘাতে গেছেন, তা আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন তৈরি করেছে । প্রতিটা পদক্ষেপে ট্রাম্প ভোটের পর ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধার সৃষ্টি করেছেন । তিনি এখন বলছেন যে তিনি 2024 সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন । বাইডেন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন কমলা হ্যারিসকে বেছে নিয়ে, যাঁর দক্ষিণ ভারতীয় শিকড়ের কথা সবার জানা । ট্রাম্প যাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন. মার্কিন রাজনীতির সেই কাঠামোকে এখন পুনরুদ্ধার করতে হবে বাইডেনকে । টিম বাইডেন-হ্যারিসের সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জ হল অ্যামেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করা ।

হায়দরাবাদ, 19 ডিসেম্বর : স্বাধীনতা, সাম্য ও আত্মনিয়ন্ত্রণের মূল নীতির ওপর নির্মিত, বিশ্বের অন্যতম প্রাচীন মার্কিন গণতন্ত্রের ইমারত এবার সবথেকে টালমাটাল অবস্থার মধ্যে দিয়ে গেছে । নভেম্বরে দেশের 46তম প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে জো বাইডেন আট কোটি ভোটে জিতেছেন । অনিশ্চয়তা দেখা দেয়, যখন দ্বিতীয়বার প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী ডোনাল্ড ট্রাম্প হার স্বীকার করতে অস্বীকার করেন । কিন্তু ট্রাম্পের অতি উৎসাহকেও হার মানতে হয়, যখন বাইডেন ইলেক্টোরাল কলেজ থেকেও 306টি ভোট নিশ্চিত করে ফেলেন । জয়ের পর বাইডেন ট্যুইট করেন, "অ্যামেরিকায় রাজনীতিবিদরা ক্ষমতা দখল করেন না - মানুষ সেটা তাঁদের হাতে দেয় । এই দেশে গণতন্ত্রের শিখা বহুদিন আগেই জ্বলে উঠেছিল । আর আমরা জানি যে কোনও কিছুই তা সে মহামারী হোক বা ক্ষমতার অব্যবহার, সেই শিখাকে নেভাতে পারবে না ।"

তিনি অ্যামেরিকার জনতার কাছে আবেদন করেন বিভেদের পৃষ্ঠা উলটে দিয়ে জাতীয় ঐক্য বজায় রাখতে । বাইডেন জানান যে তাঁর অগ্রাধিকারের তালিকায় রয়েছে কোভিড মোকাবিলায় ব্যাপকহারে টিকাকরণ, গরিবদের আর্থিক সাহায্য ও অর্থনীতির পুনরুজ্জীবন । ভোটের দৌড়ে নেমে ট্রাম্প প্রাণপণ চেষ্টা করেন, গায়ের রঙের ভিত্তিতে মার্কিন সমাজকে বিভক্ত করতে । পরাজয় সত্ত্বেও যে রেকর্ড পরিমাণ ভোট তিনি পেয়েছেন, তার থেকেই এই বিষয়টাই স্পষ্ট হয় । বাইডেন জয় চুরি করেছেন, ট্রাম্পের এই অযৌক্তিক অভিযোগের কারণে ওয়াশিংটনের পথে ঘাটে খণ্ডযুদ্ধ পর্যন্ত বেধে যায় । একজন মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ট্রাম্পের ব্যবহার অভূতপূর্ব, যখন তিনি সেইসব আধিকারিকদের কটূক্তি করেন, যাঁরা বলেছিলেন যে ভোটে কোনও বেনিয়ম হয়নি । তিনি বিচারব্যবস্থাকেই শুধু সমালোচনা করে ক্ষান্ত হননি, পাশাপাশি তাঁর মতো করে যারা চলতে চাননি, বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পদ থেকে সেইসব ব্যক্তিদের অপসারিতও করেন তিনি । তাঁর আচরণ কোভিড মহামারীর থেকেও বেশি বিপজ্জনক ছিল । ট্রাম্পবাহিনী চেষ্টা করেছিল যাতে 16টি ইলেক্টোরাল ভোট বদলে মিশিগানে নির্বাচনের অভিমুখ বদলে দেওয়া যায় । ফলাফল বদলাতে অস্বীকার করে মিশিগানের রিপাবলিকান স্পিকার বলেন, "আমি আমাদের নিয়ম, প্রথা, প্রতিষ্ঠানকে ঝুঁকির মধ্যে ফেলে ট্রাম্পের পক্ষে প্রস্তাব আনার কথা ভাবতেও পারি না।" স্পিকার আশঙ্কা প্রকাশ করেন, যদি বেনিয়মকে প্রশ্রয় দেওয়া হয়, তাহলে দেশকে হারাতে হতে পারে । তাঁর কথা থেকেই স্পষ্ট যে ট্রাম্প কতটা নিচে নেমেছিলেন । চার বছর আগে ইকোনমিস্ট পত্রিকার করা একটি সমীক্ষায় দেখা গিয়েছিল, ট্রাম্পের পুনর্নির্বাচনকে বিশ্বের পক্ষে সবথেকে বড় বিপদ মনে করা হচ্ছে ।

আরও পড়ুন : ভোট গণনা নিয়ে কারচুপির অভিযোগ ট্রাম্পের , টুইট সরাল টুইটার

ট্রাম্প গত চার বছরে তাদের সঠিক প্রমাণ করতে কোনও কিছুই ছাড়েননি । প্রেসিডেন্ট পদগ্রহণের সমারোহে ট্রাম্প বলেছিলেন, “আজ থেকে একটি নতুন দিশায় আমরা চালিত হব । সবপ্রথমে আমেরিকাই আসবে ।” কিন্তু তিনি সমস্ত গণতান্ত্রিক মূল্যবোধকে একটা হাস্যকর জায়গায় নিয়ে যান এবং নিজেকে অদ্ভূত অহংকারে চালিত করতে থাকেন । তাঁর হঠকারী সিদ্ধান্তগুলোর জেরে তিনি আমেরিকাকে বিশ্বের থেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন । ট্রাম্প একপেশে ভাবে প্যারিস চুক্তি এবং ইরানের সঙ্গে পরমাণু চুক্তি থেকে বেরিয়ে আসেন । তিনি ট্রান্স-আটলান্টিক জোট ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাকেও ত্যাগ করেন । যেভাবে তিনি চিনের সঙ্গে বাণিজ্যিক সংঘাতে গেছেন, তা আন্তর্জাতিক মহলে আলোড়ন তৈরি করেছে । প্রতিটা পদক্ষেপে ট্রাম্প ভোটের পর ক্ষমতা হস্তান্তরে বাধার সৃষ্টি করেছেন । তিনি এখন বলছেন যে তিনি 2024 সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে লড়বেন । বাইডেন গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিয়েছেন কমলা হ্যারিসকে বেছে নিয়ে, যাঁর দক্ষিণ ভারতীয় শিকড়ের কথা সবার জানা । ট্রাম্প যাকে ধূলিসাৎ করে দিয়েছেন. মার্কিন রাজনীতির সেই কাঠামোকে এখন পুনরুদ্ধার করতে হবে বাইডেনকে । টিম বাইডেন-হ্যারিসের সামনে প্রথম চ্যালেঞ্জ হল অ্যামেরিকাকে ঐক্যবদ্ধ করা ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.