ETV Bharat / international

প্রতি মিনিটে মৃত্যু 11 জনের, করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর খিদের জ্বালা - করোনার থেকেও ভয়ঙ্কর খিদের জ্বালা

করোনায় প্রতি মিনিটে গড়ে 7 জনের মৃত্যু হচ্ছে । আর খিদের জ্বালায় প্রতি মিনিটে গড়ে মরছেন 11 জন । পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দেয় বাস্তবটা কতটা রূঢ় ।

Oxfam
প্রতীকী ছবি
author img

By

Published : Jul 9, 2021, 2:38 PM IST

Updated : Jul 9, 2021, 7:07 PM IST

কায়রো, 9 জুলাই : 'ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় । পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি' । সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কবিতার লাইনটি অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে দিয়েছে বাস্তবের রূঢ়তা । বিশ্বে প্রতি মিনিটে 11 জন মানুষ খিদের জ্বালায় প্রাণ হারাচ্ছেন । সম্প্রতি অক্সফ্যামের একটি রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে । শুধু তাই নয়, দুর্ভিক্ষের ন্যায় পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও গতবছরের তুলনায় ছয় গুণ বেড়েছে ।

খিদের জ্বালা । গায়ের রক্ত জল করে দেওয়ার মতো পরিসংখ্যান উঠে এসেছে অক্সফ্যামের রিপোর্টে । প্রতি মিনিটে করোনায় যত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন, তার থেকেও বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন খিদের জ্বালায় । করোনায় প্রতি মিনিটে গড়ে 7 জনের মৃত্যু হচ্ছে । আর খিদের জ্বালায় প্রতি মিনিটে গড়ে মরছেন 11 জন ।

এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দেয় বাস্তবটা কতটা রূঢ় । আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কী পরিমাণ অকল্পনীয় দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিশ্বের একটি বড় অংশের মানুষকে । অক্সফ্যাম আমেরিকার সিইও অ্যাবি ম্যাক্সম্যান বলছেন, কোনও একজন ব্যক্তিও যদি এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যান, সেটাও অনেক বেশি । আর এখানে পরিসংখ্যান তো যে বিশাল অঙ্কের কথা বলছে তা গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো ।

আরও পড়ুন : করোনার জেরে খাদ্য সংকটের সম্মুখীন বিশ্বব্যাপী 265 মিলিয়ন মানুষ

অক্সফ্যামের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে প্রায় 15 কোটি 50 লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় দিন গুজরান করছেন । মানে দিনের বেলা খেলে রাতে খেতে পারবেন কি না জানা নেই । রাতে যদিও বা খাবার পান, ঘুমোতে যাওয়ার সময় চিন্তা... কাল পেটে একটু নুন-ভাতটুকু জুটবে কি ! হয়ত বা কখনও খিদের জ্বালায় রাতের পর রাত জেগে গোঙানি বেরিয়েছে । গত বছরের তুলনায় প্রায় 2 কোটি বেড়েছে এই ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটানো মানুষের সংখ্যা । আর এর একটি বড় কারণ সংশ্লিষ্ট দেশের সামরিক কোনও দ্বন্দ্ব । পরিসংখ্যান বলছে, এই ধরনের ক্ষেত্রে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ খিদের জ্বালায় ভুগছেন কারণ, তাঁদের দেশ সামরিক দ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে ।

Oxfam
প্রায় 15 কোটি 50 লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন

এখন করোনার কারণে যে টালমাটাল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সঙ্কট... এই দুইয়ের ধাক্কায় 5 লাখ 20 হাজারেরও বেশি মানুষকে না খেয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে । করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিবর্তে একাধিক দেশ নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে নেমে গিয়েছিল । টালমাটাল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সঙ্কটে যে সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন একটি বড় অংশের মানুষ, তাতে শেষ পেরেকটি পোঁতার কাজ করেছে এই সামরিক দ্বন্দ্ব ।

আরও পড়ুন : মেলেনি সরকারি সাহায্য, অনাহারে দিন কাটছে বৃদ্ধার

অক্সফ্যামের রিপোর্টে উঠে এসেছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গোটা বিশ্বে সামরিক খাতে খরচ বেড়েছে 51 বিলিয়ন আমেরিকান ডলার । পৃথিবী থেকে খিদের জ্বালা নির্মূল করতে রাষ্ট্র সংঘের যে পরিমাণ টাকার দরকার, তার থেকে কমপক্ষে ছয় গুণ বেশি ব্যয় হয়েছে এই সামরিক খাতে । রিপোর্টে আফগানিস্তান, ইথিয়োপিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেনের মতো দেশগুলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে । এর মধ্যে প্রতিটি দেশই সামরিক দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ।

Oxfam
টালমাটাল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সঙ্কট... এই দুইয়ের ধাক্কায় 5 লাখ 20 হাজারেরও বেশি মানুষকে না খেয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে

যুদ্ধের এক অস্ত্রের মতো করে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষুধার সমস্যাকে । সাধারণ নাগরিকদের খাদ্য-পানীয় থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে । বাজারে বোমা পড়ছে, শস্য ধ্বংস হচ্ছে, গবাদি পশু মারা যাচ্ছে... মানুষ খাবার পাচ্ছে না, ভয়ে-আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন । অক্সফ্যামের তরফে এই দেশগুলির কাছে আবেদন করা হয়েছে, খাদ্য সমস্যার সমাধান করতে তারা যেন দ্বন্দ্বের রাস্তা থেকে সরে আসে । বিভিন্ন সংস্থা যাতে মানুষের কাছে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে যেতে পারে, সেই কাজে সাহায্য করারও অনুরোধ করা হয়েছে ।

কায়রো, 9 জুলাই : 'ক্ষুধার রাজ্যে পৃথিবী গদ্যময় । পূর্ণিমার চাঁদ যেন ঝলসানো রুটি' । সুকান্ত ভট্টাচার্যের এই কবিতার লাইনটি অক্ষরে অক্ষরে মিলিয়ে দিয়েছে বাস্তবের রূঢ়তা । বিশ্বে প্রতি মিনিটে 11 জন মানুষ খিদের জ্বালায় প্রাণ হারাচ্ছেন । সম্প্রতি অক্সফ্যামের একটি রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে । শুধু তাই নয়, দুর্ভিক্ষের ন্যায় পরিস্থিতির মধ্যে দিন কাটাচ্ছেন, এমন মানুষের সংখ্যাও গতবছরের তুলনায় ছয় গুণ বেড়েছে ।

খিদের জ্বালা । গায়ের রক্ত জল করে দেওয়ার মতো পরিসংখ্যান উঠে এসেছে অক্সফ্যামের রিপোর্টে । প্রতি মিনিটে করোনায় যত মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন, তার থেকেও বেশি মানুষ প্রাণ হারাচ্ছেন খিদের জ্বালায় । করোনায় প্রতি মিনিটে গড়ে 7 জনের মৃত্যু হচ্ছে । আর খিদের জ্বালায় প্রতি মিনিটে গড়ে মরছেন 11 জন ।

এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দেয় বাস্তবটা কতটা রূঢ় । আমাদের চোখে আঙুল দিয়ে দেখিয়ে দেয় কী পরিমাণ অকল্পনীয় দুর্ভোগের মুখোমুখি হতে হচ্ছে বিশ্বের একটি বড় অংশের মানুষকে । অক্সফ্যাম আমেরিকার সিইও অ্যাবি ম্যাক্সম্যান বলছেন, কোনও একজন ব্যক্তিও যদি এমন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে যান, সেটাও অনেক বেশি । আর এখানে পরিসংখ্যান তো যে বিশাল অঙ্কের কথা বলছে তা গায়ে কাঁটা দেওয়ার মতো ।

আরও পড়ুন : করোনার জেরে খাদ্য সংকটের সম্মুখীন বিশ্বব্যাপী 265 মিলিয়ন মানুষ

অক্সফ্যামের রিপোর্টে আরও বলা হয়েছে, এই মুহূর্তে প্রায় 15 কোটি 50 লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় দিন গুজরান করছেন । মানে দিনের বেলা খেলে রাতে খেতে পারবেন কি না জানা নেই । রাতে যদিও বা খাবার পান, ঘুমোতে যাওয়ার সময় চিন্তা... কাল পেটে একটু নুন-ভাতটুকু জুটবে কি ! হয়ত বা কখনও খিদের জ্বালায় রাতের পর রাত জেগে গোঙানি বেরিয়েছে । গত বছরের তুলনায় প্রায় 2 কোটি বেড়েছে এই ধরনের অনিশ্চয়তার মধ্যে দিন কাটানো মানুষের সংখ্যা । আর এর একটি বড় কারণ সংশ্লিষ্ট দেশের সামরিক কোনও দ্বন্দ্ব । পরিসংখ্যান বলছে, এই ধরনের ক্ষেত্রে প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মানুষ খিদের জ্বালায় ভুগছেন কারণ, তাঁদের দেশ সামরিক দ্বন্দ্বের মধ্যে রয়েছে ।

Oxfam
প্রায় 15 কোটি 50 লাখ মানুষ খাদ্য নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন

এখন করোনার কারণে যে টালমাটাল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সঙ্কট... এই দুইয়ের ধাক্কায় 5 লাখ 20 হাজারেরও বেশি মানুষকে না খেয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে । করোনার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের পরিবর্তে একাধিক দেশ নিজেদের মধ্যে লড়াইয়ে নেমে গিয়েছিল । টালমাটাল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সঙ্কটে যে সমস্যার মধ্যে দিয়ে যাচ্ছিলেন একটি বড় অংশের মানুষ, তাতে শেষ পেরেকটি পোঁতার কাজ করেছে এই সামরিক দ্বন্দ্ব ।

আরও পড়ুন : মেলেনি সরকারি সাহায্য, অনাহারে দিন কাটছে বৃদ্ধার

অক্সফ্যামের রিপোর্টে উঠে এসেছে, করোনা পরিস্থিতির মধ্যেও গোটা বিশ্বে সামরিক খাতে খরচ বেড়েছে 51 বিলিয়ন আমেরিকান ডলার । পৃথিবী থেকে খিদের জ্বালা নির্মূল করতে রাষ্ট্র সংঘের যে পরিমাণ টাকার দরকার, তার থেকে কমপক্ষে ছয় গুণ বেশি ব্যয় হয়েছে এই সামরিক খাতে । রিপোর্টে আফগানিস্তান, ইথিয়োপিয়া, দক্ষিণ সুদান, সিরিয়া, ইয়েমেনের মতো দেশগুলির কথা উল্লেখ করা হয়েছে । এর মধ্যে প্রতিটি দেশই সামরিক দ্বন্দ্বের মধ্যে দিয়ে যাচ্ছে ।

Oxfam
টালমাটাল অর্থনীতি এবং ক্রমবর্ধমান জলবায়ু সঙ্কট... এই দুইয়ের ধাক্কায় 5 লাখ 20 হাজারেরও বেশি মানুষকে না খেয়ে রাত কাটাতে হচ্ছে

যুদ্ধের এক অস্ত্রের মতো করে ব্যবহার করা হচ্ছে ক্ষুধার সমস্যাকে । সাধারণ নাগরিকদের খাদ্য-পানীয় থেকে বঞ্চিত করা হচ্ছে বছরের পর বছর ধরে । বাজারে বোমা পড়ছে, শস্য ধ্বংস হচ্ছে, গবাদি পশু মারা যাচ্ছে... মানুষ খাবার পাচ্ছে না, ভয়ে-আতঙ্কে রাত কাটাচ্ছেন । অক্সফ্যামের তরফে এই দেশগুলির কাছে আবেদন করা হয়েছে, খাদ্য সমস্যার সমাধান করতে তারা যেন দ্বন্দ্বের রাস্তা থেকে সরে আসে । বিভিন্ন সংস্থা যাতে মানুষের কাছে ত্রাণ নিয়ে পৌঁছে যেতে পারে, সেই কাজে সাহায্য করারও অনুরোধ করা হয়েছে ।

Last Updated : Jul 9, 2021, 7:07 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.