কলকাতা, 31 জুলাই: বিরসা দাশগুপ্ত পরিচালিত বাংলা ছবি 'মুখোশ' দিয়ে টলিউডে অভিষেক হয়েছিল শাহির রাজের । টোটা রায়চৌধুরীর ছোটবেলার চরিত্রে অভিনয় করেন শাহির । চরিত্রের নাম ছিল ডেভিড পল । এসভিএফ-এর প্রযোজনায় নির্মিত এই ছবিতে অভিনয় করার পর একাধিক ছবিতে নানান ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে দেখা যায় তাঁকে । আর এবার রাজ চক্রবর্তীর আসন্ন ওয়েব সিরিজ 'আবার প্রলয়'-এ তাঁকে দেখা যাবে মানব পাচারের সঙ্গে যুক্ত একটি চরিত্রে ৷ নতুন চরিত্র এবং অন্যান্য কাজ নিয়ে ইটিভি ভারতের সঙ্গে কথা বললেন শাহির রাজ।
ইটিভি ভারত: 'আবার প্রলয়' তে আপনার চরিত্রটা কেমন?
শাহির: চরিত্রের নাম জ্যাক। এক কথায় খুব খারাপ একজন মানুষ । মূলত হিউম্যান ট্র্যাফিকিং-এর গল্প এটা । সুন্দরবনের প্রেক্ষাপটে তৈরি হয়েছে গল্প । যেখানে অনিমেষ দত্ত চরিত্রটিকে আবার ফিরিয়ে আনা হয়েছে । জ্যাক একজন হিউম্যান ট্র্যাফিকার । তার কোনও হুশ নেই । যা খুশি করে ।কোনও বিবেক বোধ নেই ওর । এক কথায় 'জ্যাক অফ ফরবিডেন ট্রেডস' ।
ইটিভি ভারত: চরিত্রটার জন্য অফার কে দেয় ?
শাহির: অফারটা দেন সিরিজের ক্রিয়েটিভ ডিরেক্টর সোহিনী দাশগুপ্ত । উনি অভিনয়ও করেছেন এই সিরিজে । আমার খুব কাছের মানুষ জয়জিৎ দাস আমার কথা বলেন ওঁকে । সোহিনীদির মারফত কাজের অফার আসে । এরপর রাজদার সঙ্গে মিটিং হয় । প্রথম মিটিংয়ের পর দু'সপ্তাহ আমাকে বাড়িতে বসে চরিত্রটাকে নিজের ভিতরে ভিতরে তৈরি করার সুযোগ দেওয়া হয় । এরপর ছিল একটা লম্বা জার্নি ।
ইটিভি ভারত: প্রস্তুতি কীভাবে নিলেন ?
শাহির: প্রস্তুতিটা অনেক দিনেরই । রাজদা আর সোহিনীদি চরিত্রটার একটা আন্দাজ দেন আমাকে । দু’সপ্তাহ সময় দেন চরিত্রটাকে তৈরি করতে । অডিশন হয়নি কোনও । বাড়িতে নিজেকে তৈরি করেছি নানাভাবে । সে অনেক লম্বা জার্নি । এক বন্ধুর সাহায্য নিয়ে ওখানকার মানুষের কথা বলার ধরন শিখেছি, বাইক নিয়ে কায়দা করা শিখেছি । রাজদা আমাকে দু'সপ্তাহ নিজের ভিতর জ্যাককে তৈরি করার সময় দিয়েছিলেন । আমি মেথড অ্যাক্টিং প্রসেসে বিশ্বাস করি । এরপর এক মাসের ল্যাঙ্গুয়েজ কোচিং ক্লাস হল রাজদার অফিসে । কলকাতার লোকের মতো নয় সুন্দরবনের লোকেদের বাংলা । অম্লান মজুমদার ক্লাস নিতেন । এ ছাড়াও চুল রঙ করা থেকে নাচের প্রস্তুতি নেওয়া, বডি ল্যাঙ্গুয়েজ ঠিক করা, সবই ছিল তালিকায় । আমি কখনও নাচ করিনি কোনও ছবিতে । বাবা যাদব, রাহুল সোনাভেন শিখিয়েছেন নাচ । সাড়ে তিন মাস গোটা প্রসেসটা চলে । শুটিং আর নাচের ক্লাস একসঙ্গে চলেছে আমাদের ।
আরও পড়ুন: খোলা চুল ও মোহময়ী লুক, নতুন সাজে মন জিতলেন ঋতাভরী
ইটিভি ভারত: আসন্ন অন্য কাজ কী আছে ?
শাহির: আসন্ন কাজ 'পারিয়া ভলিউম ওয়ান' । তথাগত মুখোপাধ্যায়ের ছবি । মুখ্য চরিত্রে বিক্রম চট্টোপাধ্যায় । অভিমন্যু আমি । এছাড়া 'গেট আপ কিংশুক' । আমার চরিত্রের নাম কিংশুক । এটা নন্দন ঘোষের ছবি । এই প্রথমবার কোনও ছবিতে মুখ্য চরিত্রে আমি । পরিচালক অভিরূপ ঘোষের ওয়েব সিরিজ 'বাংলার সেরা ভূতের গল্প'তেও রয়েছি । আমার চরিত্রের নাম বিশু ।
ইটিভি ভারত: বাংলা ধারাবাহিকে কাজ করার ইচ্ছা নেই?
শাহির: কেন নয় ৷ নিশ্চয় আছে।
ইটিভি ভারত: নিজেকে নানান চরিত্রে ভাঙতে গড়তে কেমন লাগে?
শাহির: নানান চরিত্রে নিজেকে ভাঙতে গড়তে ভালো লাগে । ঘটনাচক্রে এখনও পর্যন্ত যে যে কাজ করেছি প্রত্যেকটার আলাদা আলাদা রূপ । আর 'আবার প্রলয়'তে আমাকে একেবারে পাল্টে দিয়েছে রাজদা আর সোহিনীদি । আসলে আমি টাইপকাস্ট হতে চাইনা কখনও । নানান ধরনের চরিত্রে অভিনয় করতে চাই । আমি প্রচণ্ড ভক্ত আল পাচিনোর ।
ইটিভি ভারত: কীরকম চরিত্র পছন্দ?
শাহির: যে কোনও চরিত্রই পছন্দ । তবে দু'ধরনের ছবির প্রতি দুর্বলতা আছে । এক হল, ওয়ার ফিল্ম মানে যুদ্ধ নিয়ে সিনেমা । সেখানে হয় সৈনিকের চরিত্র করতে চাই, নয়তো যুদ্ধটির সঙ্গে জড়িয়ে থাকতে চাই। দাদু আর্মিতে ছিলেন বলে আমার বাড়ির ৭০ শতাংশ বই যুদ্ধ নিয়ে। মাফিয়া ফিল্মের প্রতিও দুর্বলতা আছে আমার।
আরও পড়ুন: শুটিংয়ের ছবি শেয়ার করে 'ফাইটার' সিদ্ধার্থ আনন্দকে শুভেচ্ছা হৃতিকের
ইটিভি ভারত: রাজের সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা?
শাহির: রাজ দা'র সঙ্গে কাজের অভিজ্ঞতা এক কথায় বোঝানো কঠিন। রাজ দা'র প্রযোজনা সংস্থা হল একটা পরিবার। যার অংশ হয়ে উঠেছি আমি। রাজ' দা ভালো কাজের প্রশংসা করেন। এটা একজন অভিনেতাকে কাজের উৎসাহ জোগায়। অভিনেতার চাওয়া পাওয়া বোঝার চেষ্টা করেন সবসময়। সরস্বতী পুজোয় আমাকে সবার সামনে প্রশংসা করেছিলেন। আমার কাছে সেটা ছিল এক পরম প্রাপ্তি ।