কলকাতা, 5 সেপ্টেম্বর: গানের রানার তিনি ৷ সুরের আঙিনায় অবাধ বিচরণ ছিল সলিল চৌধুরীর। ভালোবাসার গান, জীবনে সংঘবদ্ধ হওয়ার গান, গণ আন্দোলনের গান- সহ নানা গানে তাঁর বিচরণ ছিল অবাধ এবং উজ্জ্বল। তাঁর সঙ্গীত সফরের সঙ্গী হিসেবে দীর্ঘদিন সহযোগী-যন্ত্রী হিসেবে কাজ করেছেন পণ্ডিত দেবজ্যোতি মিশ্র। সলিল চৌধুরীকে প্রকৃতই গুরু মানেন তিনি। 1995 সালের 5 সেপ্টেম্বর, শিক্ষক দিবসেই গুরুকে হারিয়েছিলেন দেবজ্যোতি মিশ্র। তাই শিক্ষক দিবসে শিল্পী তাঁর গুরুকে দিলেন অন্যরকম দক্ষিণা ৷ দেবজ্যোতি মিশ্রের ভাবনায় সলিল চৌধুরীকে নিয়ে সান ফ্রান্সিসকোতে মঞ্চস্থ হল একটি মিউজিক্যাল থিয়েটার।
তিনি বলেন, "সলিল চৌধুরীকে নিয়ে তাঁর একটা জীবন ভিত্তিক মিউজিক্যাল থিয়েটার করার কথা মাথায় আসে আমার। এ কথা সানফ্রান্সিসকোর বে অঞ্চলের ডালিয়া চটোপাধ্যায় সেন জানতে পেরে এই প্রযোজনার কথা ভাবেন এবং অনিন্দ্য চক্রবর্তী নাটকটি পরিচালনা করেন। এটি কলকাতায় এবং অন্যান্য শহরে পরিবেশন করব আমরা। সম্ভবত এদেশে এটাই প্রথম সলিল চৌধুরীর জীবন ভিত্তিক কোনও মিউজিক্যাল থিয়েটার সৃষ্টি করা হল।"
দেবজ্যোতি মিশ্র তাঁর গুরু সলিল চৌধুরীকে নিয়ে আগেই বলেছেন, "সলিল চৌধুরী অত বড় কম্পোজার হয়েও সেলেব্রিটি সুলভ আচরণ করেননি কখনও । সবার মধ্যে মিশে যেতে পারতেন । ওঁর মুম্বইয়ের বাড়িতে ছিল মিউজিশিয়ানদের জন্য অবারিত দ্বার। সলিলদা শিখিয়েছেন কীভাবে সবার সঙ্গে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে বাঁচা যায় । এই যে নিজেকে সেলিব্রিটি ভেবে অন্যদের থেকে দূরে থেকে বাঁচার চেয়ে, সবার সঙ্গে বাঁচার যে আনন্দ, সেটা সলিলদার জীবনযাপন থেকে শেখা।"
সলিল চৌধুরীর জন্ম শতবর্ষ আসন্ন। তার সূত্রপাত হয়ে গেল সানফ্রান্সিসকোর বে শহরের বঙ্গ মেলায়। সলিল চৌধুরীর জীবন ভিত্তিক মিউজিক্যাল থিয়েটার 'উজ্জীবন' সাড়া জাগিয়েছে ভিন দেশে। সম্পূর্ণ চিত্রনাট্য, সঙ্গীতাংশের দায়িত্বে ছিলেন দেবজ্যোতি মিশ্র। চল্লিশ মিনিটের নাটকে উঠে এসেছে অসমের চা বাগান থেকে কিংবদন্তির মুম্বই সফর। 'দো বিঘা জমিন', তো কখনও 'আনন্দ' ছবির 'জিন্দেগী ক্যায়সি পহেলি', কখনো 'মধুমতী', 'না মন লাগে না', 'এই দুনিয়ায় ভাই সবই হয়', 'পথে এবার নামও সাথী' থেকে 'ও আলোর পথযাত্রী' এই সব গানে মঞ্চে চরিত্র হয়ে উঠে এসেছেন সলিল চৌধুরী, লতা মঙ্গেশকর, হেমন্ত মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় প্রমুখ। নাটকটি নির্দেশনা করেছেন অনিন্দ্য চক্রবর্তী। গানের দায়িত্বে ছিলেন শুভেন এবং তাঁর দল। নৃত্য পরিচালনা করেন চান্দ্রেয়ী মুখোপাধ্যায়্য, শিঞ্জিনী গুপ্ত, ডালিয়া সেন।
আরও পড়ুন: বুসান চলচ্চিত্র উৎসবে যাচ্ছে সুমন ঘোষের ছবি, ক্লাউড নাইনে অভিনেত্রী সুদীপ্তা
সলিল চৌধুরীর ভূমিকায় নজর কাড়েন সব্যসাচী বসু, ঝড়ুয়ার ভূমিকায় সায়নী রায়, লতা মঙ্গেশকরের ভূমিকায় চান্দ্রেয়ী মুখোপাধ্যায়, রাজ কাপুর ও চ্যাপলিন - পিনাকী মুখোপাধ্যায়, ছবি বিশ্বাস হয়েছেন অনির্বাণ মাইতি, হেমন্ত মুখোপাধ্যায় হন অনিরুদ্ধ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিমল রায়ের ভূমিকায় দেখা যায় সৌমেন ঘোষকে।