কলকাতা, 30 জানুয়ারি: সত্যজিৎ রায়ের ছোট গল্প নিয়ে এবার হাজির গ্রাফিক নভেল 'খগম' (Satyajit Ray Story Khagam as Graphic Novel)। নতুন প্রকশনা সংস্থা 'সিঙ্গল শট'-এর হাত ধরে এল এই বই । গ্রাফিক ছবিতে 'খগম' ফুটিয়ে তোলার নেপথ্যে শমীক চট্টোপাধ্যায় । সুতরাং এক লাফে শৈশব ফিরে পাওয়ার রসদ এবার হাতের মুঠোয়। তাও আবার গ্রাফিক্সে। আর এতে অত্যন্ত খুশি সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ রায়। সত্যজিৎ রায়ের সেরা ছোট গল্পগুলোর অন্যতম, ‘খগম’ এসে গেল গ্রাফিক নভেল আকারে । শিল্পে আর্ট ডিরেক্টর-ইলাস্ট্রেটর শুভব্রত বসু। 'সিঙ্গল শট'-এর প্রকাশনায় শুক্রবার সাউথ সিটি স্টারমার্কে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ পেল এই বই।
বিশিষ্ট পরিচালক সন্দীপ রায়, কমলেশ্বর মুখোপাধ্যায়, লেখক-পরিচালক তথা বিজ্ঞাপন জগতের আর এক জনপ্রিয় মুখ রঙ্গন চক্রবর্তী-সহ একাধিক অতিথির উপস্থিতিতে প্রকাশ পেয়েছে গ্রাফিক নভেল ‘খগম’ । উচ্ছ্বসিত সত্যজিৎ-পুত্র সন্দীপ । তাঁর কথায়, “বাবার লেখা 'খগম' একটি অন্যতম সেরা গল্প। গ্রিনিং ট্রি থেকে শমীক যখন 'খগম'-এর গ্রাফিক নভেল করার প্রস্তাব নিয়ে আসে, তখন খুবই খুশি হয়েছিলাম । বাবার কাজ, তাঁর ভাবধারা, শিল্পরুচি অক্ষুণ্ণ রেখেও যে তারা নতুন দৃষ্টিভঙ্গীতে এই কাজ করতে সফল হবে, এই বিশ্বাস আমার ছিল । বই, বিশেষত বাংলা বই পড়ার চর্চা এখনকার জেনারেশনে প্রায় নেই বললেই চলে । এই গ্রাফিক নভেল পড়ে যদি পাঠক আসল গল্পটি পড়েন এবং তাঁদের মধ্যে যদি বাংলায় বাবার লেখা আরও নানান গল্প পড়ার উৎসাহ জেগে ওঠে, সেটিই হবে এই প্রচেষ্টার আসল সার্থকতা ।”
সত্যজিতের গল্পকে আরও এক নতুন পথে হাঁটতে দেখে খুশি কমলেশ্বরও । সংবাদমাধ্যমকে তিনি বলেন, “শমীক, অন্তরা ও তাঁদের গ্রিনিং ট্রি অনেক দিন ধরেই নানা প্রকার বিজ্ঞাপন ও অন্যান্য ভিজ্যুয়াল আর্টের কাজ করেন । সুতরাং ওঁরা যখন গ্রাফিক নভেলের কাজ শুরু করেছিলেন, আমি নিশ্চিত ছিলাম কাজটা ভালো হবে কিন্তু সে কাজ বড় সহজ নয় । কারণ, যাঁর ছোটগল্পের উপর কাজ, তিনি সত্যজিৎ রায়! কিন্তু যাবতীয় চাপ থাকা সত্ত্বেও গ্রীনিং ট্রি ও সিঙ্গল শট প্রায় দুঃসাধ্য কাজটা করে ফেলল জমিয়ে । সত্যজিৎ-রচিত গল্পের এই অভিনব পরিবেশন সকলকে মুগ্ধ করুক- এই আশা রাখি।“
সত্যজিতের গল্পের এই অন্য রকম স্বাদ মনে ধরেছে রঙ্গনেরও । তাঁর কথায়, “খগম সত্যজিতের অবিস্মরণীয় গল্পগুলোর একটা । শমীক ও তাঁর দলবলের কৃতিত্ব যে তাঁরা এই গল্পের শিরশিরানিকে, তার নানান মুহূর্তের আঘাতগুলোকে, বাঁক আর বিস্ময়গুলোকে গ্রাফিক ভাবে ফুটিয়ে তুলতে পেরেছে । শব্দ পড়ার থেকে ছবি পড়ার এই অভিজ্ঞতা তাই অনেকটাই আলাদা।“
বহুদিনের ইচ্ছেকে বাস্তব করে তুলতে পেরে তৃপ্ত শমীক নিজেও । তিনি বলেন, “গ্রাফিক্সের কাজ বহু দিন ধরে করছি এবং বরাবরই এই কাজ করতে খুব ভালো লাগে। এত দিন পর্যন্ত অন্য অনেকের জন্য গ্রাফিক্সের কাজ করেছি । অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল নিজের জন্য এই কাজ করব । সেই থেকেই মাথায় এল গ্রাফিক নভেলের কথা । ইংরেজি বা অন্য বিদেশী ভাষায় গ্রাফিক নভেলের অনেক কাজ হয়েছে । বাংলা সাহিত্যে এত সুন্দর সব গল্প রয়েছে। কিন্তু এই প্রজন্মের বাচ্চারা বাংলা ভাষা থেকে দূরে থাকায় তাদের কাছে সেগুলো পৌঁছচ্ছে না। সে কথা মাথায় রেখেই বাংলায় গ্রাফিক নভেল করার ইচ্ছেটা সত্যিতে পরিণত করতে চাইলাম এবং এক্ষেত্রে ‘খগম’-এর চেয়ে রোমাঞ্চকর গল্প আর কী-ই বা হতে পারে!”
আরও পড়ুন: ভারতে সবচেয়ে দ্রুত 250 কোটির ক্লাবে ঢুকতে চলেছে 'পাঠান', দাবি বিশ্লেষকদের
বহুদিনের ইচ্ছেকে বাস্তব করে তুলতে পেরে তৃপ্ত শমীক নিজেও। বললেন, “গ্রাফিক্সের কাজ বহু দিন ধরে করছি এবং বরাবরই এই কাজ করতে খুব ভালো লাগে। এত দিন পর্যন্ত অন্য অনেকের জন্য গ্রাফিক্সের কাজ করেছি। অনেক দিনের ইচ্ছে ছিল নিজের জন্য এই কাজ করব। সেই থেকেই মাথায় এল গ্রাফিক নভেলের কথা। ইংরেজি বা অন্য বিদেশি ভাষায় গ্রাফিক নভেলের অনেক কাজ হয়েছে। বাংলা সাহিত্যে এত সুন্দর সব গল্প রয়েছে। কিন্তু এই প্রজন্মের বাচ্চারা বাংলা ভাষা থেকে দূরে থাকায় তাদের কাছে সেগুলো পৌঁছচ্ছে না। সে কথা মাথায় রেখেই বাংলায় গ্রাফিক নভেল করার ইচ্ছেটা সত্যিতে পরিণত করতে চাইলাম। এবং এ ক্ষেত্রে ‘খগম’-এর চেয়ে রোমাঞ্চকর গল্প আর কী-ই বা হতে পারে!”