কলকাতা, 27 জুন: এক সময়ে যে বাড়িতে কান পাতলে ভেসে আসত সুর, আজ তা মিশেছে ইট-বালির ধ্বংসস্তুপে ৷ একসময়ে যে বাড়িতে গুণীদের যাতায়াত লেগে থাকত, আজ সেখানেই অনাদরে পড়ে রয়েছে প্রখ্যাত শিল্পীর ছবি ৷ কানন দেবীর পর লেক গার্ডেন্সে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের ঐতিহ্যবাহী বাড়ি ভেঙে ফেলা হচ্ছে। আপাতত প্রোমোটারদের সেই বাড়ি। ঐতিহ্যকে ধুলোয় মিশিয়ে সেখানে উঠবে আকাশচুম্বী বাড়ি ৷
জানা গিয়েছে, ইতিমধ্যেই শুরু হয়ে গিয়েছে ভাঙাভাঙি পর্ব। ফলে রাস্তায় গড়াগড়ি যাচ্ছে গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের বাড়িতে সযত্নে রাখা উস্তাদ বড়ে গুলাম আলি খাঁ সাহেবের ছবি। যে ছবির পাশে এতকাল রাখা ছিল স্বয়ং সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়, শ্যামল গুপ্তর ছবি। কেউ দাম দিল না সেই সব ছবির। ভাঙাভাঙির সময়ে সংরক্ষণ করতে এগিয়ে এলেন না কেউই।
গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় একটি প্রতিষ্ঠান। তাঁর উপরে অধিকার সকলের। তাঁর এবং শ্যামল গুপ্তর এই বাড়িটি আপামর বাঙালির কাছে সম্পদসম। তাই কেন ভেঙে ফেলা হল এই বাড়ি, তা জানতে সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের কন্যা সৌমি সেনগুপ্তকে ফোন করা হলে তিনি বলেন, "আমার বাড়ি আমার সিদ্ধান্তেই ভাঙা হচ্ছে। আমি অনুমতি না-দিলে তো ভাঙা হত না। এটা আমাদের একেবারে ব্যক্তিগত বিষয়।"
যতই তাঁদের ব্যক্তিগত বিষয় হোক না কেন, সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় আপামর বাঙালির। তাই কৈফিয়ত চাইতে মরিয়া হয়ে উঠেছে সকলে। প্রতিবাদের ঝড় উঠেছে সামাজিক মাধ্যমে। লেক গার্ডেন্সের ডি/613 নম্বর বাড়িটি সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায় এবং শ্যামল গুপ্তর ভালোবাসার বাড়ি, যা আজ পরিণত হয়েছে শুধুই ধ্বংসস্তূপে। গীতশ্রীর মৃত্যুর বছর পেরোতে না-পেরোতেই তাঁর শেষ চিহ্নটুকুও রইল না আর। গীতশ্রীর মৃত্যুর পর অনেকেই ভেবেছিলেন বাড়িটি হয়ত সংরক্ষিত হবে। কিন্তু আজ যেদিকে তাকানো যায় শুধুই বালি, সুড়কির গুঁড়ো। আর ইতিউতি পড়ে আছে নানান ফটোফ্রেম। সঙ্গীতশিল্পী কৌশিকী চক্রবর্তী সামাজিক মাধ্যমে দুঃখপ্রকাশ করেছেন এই ঘটনার।
- " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="">
আরও পড়ুন: এলোকেশি সত্যবতীর চোখে চোখ সত্যান্বেষীর, দুর্গ রহস্যে ব্যোমকেশ-জায়ার প্রথম লুক সামনে আনলেন দেব
প্রসঙ্গত, মৃত্যুর আগে 'পদ্মশ্রী' সম্মান ফিরিয়ে দিয়েছিলেন গীতশ্রী সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়। এতটাই অভিমানী ছিলেন তিনি। এর কয়েকদিন পরেই অব্শ্য অমরলোকে পাড়ি দেন তিনি। তবে মানুষের হৃদয়ের মণিকোঠা থেকে তিনি পালাবেন কোথায়?