কলকাতা, 15 নভেম্বর: একদিন-দু'দিনের কথা নয় । পাক্কা পঞ্চাশটি বছর (Ajanta cinema hall) । বেহালার অজন্তা সিনেমা হলে লাইটম্যানের চাকরি করতেন লক্ষ্মী অধিকারী । অর্থাৎ কোন আসনে কে বসবেন তা টর্চ হাতে দেখিয়ে দেওয়ার দায়িত্ব ছিল তাঁর কাঁধে(Light man of Ajanta cinema hall Laxmi Adhikari) ।
রোজকার মতো গতকালও সেই দায়িত্ব পালন করছিলেন তিনি। মঙ্গলবার নাইট-শো শেষ হতে কিছুটা দেরি হয়েছিল। তাই আর বাড়ি যেতে পারেননি, থেকে গিয়েছিলেন সিনেমা হলেই । পুরোনো সিনেমার স্ট্যান্ডির উপর চাদর পেতে ঘুমিয়েছিলেন । সেই ঘুম আর ভাঙেনি বুধের সকালে (Light man of Ajanta cinema hall Dies )। নিরাপত্তরক্ষীরা অনেক ডাকাডাকি করেও তাঁর সাড়া পাননি। দেহ শিথিল এবং ঠান্ডা হয়ে গিয়েছিল বলে জানিয়েছেন অজন্তার কর্ণধার শতদীপ সাহা। প্রয়াত লক্ষ্মী অধিকারী 70 পার করেছিলেন অনেকদিন ৷ এমনটাই জানান শতদীপ ৷
ঘুমের মধ্যেই বিদায় নিলেন অজন্তার লক্ষ্মী । আর তাই আজ বন্ধ রাখা হয়েছে এই প্রেক্ষাগৃহ । শতদীপ বলেন, "বহু পুরোনো কর্মচারী ছিলেন । কর্মচারী বললে ভুল হবে। পরিবারের একজন ছিলেন উনি । থাকতেন ঠাকুরপুকুরে । আমার অনেক স্মৃতি ওনাকে ঘিরে । খুব কষ্ট হচ্ছে আজ, বলে বোঝাতে পারব না । ছোটবেলায় আমাকে হাতে ধরে স্কুলে নিয়ে যেতেন । বাজারও করতেন অনেকসময় । আমার বায়না মেটাতে আমাকে স্কুলে যাওয়ার সময় লজেন্স কিনে দিতেন । এই সব স্মৃতি ভুলি কী করে? আজ হল বন্ধ রাখা হয়েছে ওনার জন্য।"
আরও পড়ুন: 'মহিষাসুরমর্দ্দিনী'র চরিত্র থেকে নারীর সম্মান এবং বলিউড, আড্ডায় ঋতুপর্ণা
শতদীপ আরও বলেন, "বাবাকে বলেছিলাম উনি আর পারছেন না কাজ করতে । বাবাও বলেছিলেন কাজ বন্ধ করতে । কিন্তু না । উনি ভালোবাসার টানেই চালিয়ে গিয়েছেন কাজ। ওনার সঙ্গে আমাদের আত্মিক টান অনেক দৃঢ় । তাই বাবাও আর জোর করেননি । বহাল রেখেছিলেন কাজে। কতটা ভালোবাসতেন উনি হলটাকে, তা আজকের ঘটনায় আরও স্পষ্ট হল।"