ETV Bharat / entertainment

Goutam Ghose: 'চলচ্চিত্র নির্মাণে বাকস্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে'; ইটিভি ভারতে একান্ত সাক্ষাৎকারে পরিচালক গৌতম ঘোষ - Goutam Ghose opens up

সদ্য শেষ করেছেন ইন্দো-ইতালিয়ান একটা ছবি ৷ ইচ্ছা রয়েছে ওয়েব সিরিজ নিয়ে কাজ করারও ৷ ইটিভি ভারতের মুখোমুখি হয়ে নানা বিষয়ে একান্ত সাক্ষাৎকারে জাতীয় পুরস্কারপ্রাপ্ত পরিচালক গৌতম ঘোষ ৷

Etv Bharat
একান্ত সাক্ষাৎকারে পরিচালক গৌতম ঘোষ
author img

By ETV Bharat Bangla Team

Published : Oct 15, 2023, 6:54 PM IST

Updated : Oct 16, 2023, 2:08 PM IST

ইটিভি ভারতে একান্ত সাক্ষাৎকারে পরিচালক গৌতম ঘোষ

বোলপুর, 15 অক্টোবর: 'ভারতবর্ষে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে বাকস্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে', ইটিভি ভারতের একান্ত সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক দাবি প্রখ্যাত পরিচালক তথা অভিনেতা গৌতম ঘোষের। খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে তাঁরও ওয়েবসিরিজ করার ইচ্ছে রয়েছে। এছাড়া, বাংলা সিনেমার মান অবনমন থেকে একাধিক প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ নিয়েও মতামত প্রকাশ করেন পরিচালক।

ইটিভি ভারত: আপনি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেন। কোথাও গিয়ে মনে হচ্ছে বাংলা সিনেমার মান কমছে?

গৌতম ঘোষ: "মান জিনিসটা এমন, যার একটা সামাজিক প্রেক্ষিত রয়েছে। আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে তার একটা পরিবর্তন আছে। আমাদের দেশের বাংলা সিনেমায় আমি অনেক উত্থান-পতন দেখেছি। 50 -এর দশকে সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, অসিত সেন, রাজেন তরফদার এনারা অন্য ভাবে সিনেমাকে দেখার চেষ্টা করেছিলেন। যা আন্দোলন তৈরি করেছিল ৷ পরবর্তীতে আমরা চেষ্টা করেছি। একটা সিনেমা যখন তুমি মোবাইলে দেখতে, সেখানে সিনেমার স্পেস ভালোভাবে বোঝা যায় না ৷ একটা সময় যখন টেলিভিশন এল, টেলিভিশনের জন্য ছবি তৈরি হল। তখন টেলিভিশনের পর্দাটাকে ভেবেই করতে হতো। আমি যদিও কোনদিন করিনি। আমার বড় পর্দাই ভালো লাগে। আবার বর্তমানে ইয়াং ছেলেমেয়েরা হাতে মোবাইল নিয়ে খুব উন্নত মানের সিনেমা করছে। এক কথায় সিনেমা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তবে আমার মনে হয় নতুন ধরনের একটা আন্দোলন তৈরি হবে। ইয়াং ছেলে মেয়েদের কাছে সিনেমা এখন একা নয়। তবে আসল কথা এত কিছুর ভিড়ে প্রকৃত সিনেমাকে খুঁজে নিতে হবে।"

ইটিভি ভারত: ওয়েব সিরিজ নির্মাণের দাপটে সিনেমা দেখা বা সিনেমা তৈরির প্রবণতা কমছে?

গৌতম ঘোষ: "কুঁড়েমি। কাজকর্ম করে এসে মানুষ ওয়েবসিরিজ দেখে নেয় ৷ তাও হলে যাচ্ছে মানুষ ৷ তবে ভারত ও বাংলাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা কমে গিয়েছে। হল ভেঙে মাল্টি স্টোরেজ বিল্ডিং হচ্ছে, দোকান হচ্ছে । কেরলে দেখলাম, একটি ছোট্ট জায়গার মধ্যে 400 সিনেমা হল। প্রচুর মানুষ সিনেমা দেখছেন ৷ সেখানে বড় পর্দায় ছবি করে অনেক বেশি লগ্নি ফিরিয়ে আনছে, যেটা আমাদের পশ্চিমবঙ্গে কম। বড় পর্দা থেকে টাকা প্রায় আসেই না।"

ইটিভি ভারত: আপনি কখনও ওয়েব সিরিজের পথে যাবেন?

গৌতম ঘোষ: আমি এখনও ঠিক করিনি। তবে আমার মাথায় একটা আছে। সেটা দেখি ৷ সদ্য নতুন ছবি শেষ করেছি । সেটার ইন্টারন্যাশনাল প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়া, আরও দু'টো ছবি আমার সই করা আছে। তবে পরবর্তীকালে ওয়েব সিরিজ করলেও করতে পারি ৷ আমার কেরিয়ারের প্রথম থেকেই প্রামাণ্য তথ্যচিত্র ও কাহিনী চিত্র পাশাপাশি করে গিয়েছি। আমার ভালো লাগে, আমি শিক্ষিত হই। ইন্দো-ইতালিয়ান একটা ছবি করছি, ছবিটার নেরেটিভটাই 3টে ভাষায়। তবে গল্পটা এখন বলব না। কলকাতায় 'মুজিব' তথ্যচিত্রটা করেও আমি খুব আনন্দ পেয়েছি।"

ইটিভি ভারত: রাজ্যে ও দেশে বর্তমান যা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, তাতে সিনেমা বা তথ্যচিত্র করতে গিয়ে বাকস্বাধীনতা খর্ব হয়?

গৌতম ঘোষ: "বাকস্বাধীনতা খর্ব তো হচ্ছেই ৷ অনেক জায়গায় অনেক ঘটনা ঘটেছে গত কয়েক বছরে। তবে আমার মনে হয় নির্ভীকভাবে কাহিনী চিত্র ও তথ্যচিত্র করা উচিত। কারন এটা গণতান্ত্রিক দেশ ৷ যদি সমস্যা হয়, সমস্যার বিরুদ্ধে রাস্তা আছে লড়াই করার। তর্ক-বিতর্ক তো হবেই ৷ গণতন্ত্রে তর্ক-বিতর্কটাই তো বড় কথা ৷ পরিচালকরা নিজেদের মধ্যে সেন্সার না করে, দেখা যাবে, যা হবে ভাবা উচিত ৷ চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শির।"

আরও পড়ুন: মহালয়ায় মা দুর্গার তিন রূপ নিয়ে পর্দায় আসছেন কোয়েল, পুজো ঘিরে ভাসলেন নস্ট্যালজিয়ায়

ইটিভি ভারতে একান্ত সাক্ষাৎকারে পরিচালক গৌতম ঘোষ

বোলপুর, 15 অক্টোবর: 'ভারতবর্ষে চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে গিয়ে বাকস্বাধীনতা খর্ব হচ্ছে', ইটিভি ভারতের একান্ত সাক্ষাৎকারে বিস্ফোরক দাবি প্রখ্যাত পরিচালক তথা অভিনেতা গৌতম ঘোষের। খোলামেলা সাক্ষাৎকারে তিনি আরও জানান, ভবিষ্যতে তাঁরও ওয়েবসিরিজ করার ইচ্ছে রয়েছে। এছাড়া, বাংলা সিনেমার মান অবনমন থেকে একাধিক প্রেক্ষাগৃহ বন্ধ নিয়েও মতামত প্রকাশ করেন পরিচালক।

ইটিভি ভারত: আপনি ভারতের বিভিন্ন রাজ্যে চলচ্চিত্র উৎসবে অংশ নেন। কোথাও গিয়ে মনে হচ্ছে বাংলা সিনেমার মান কমছে?

গৌতম ঘোষ: "মান জিনিসটা এমন, যার একটা সামাজিক প্রেক্ষিত রয়েছে। আর্থ-সামাজিক পরিবর্তনের সঙ্গে তার একটা পরিবর্তন আছে। আমাদের দেশের বাংলা সিনেমায় আমি অনেক উত্থান-পতন দেখেছি। 50 -এর দশকে সত্যজিৎ রায়, মৃণাল সেন, ঋত্বিক ঘটক, অসিত সেন, রাজেন তরফদার এনারা অন্য ভাবে সিনেমাকে দেখার চেষ্টা করেছিলেন। যা আন্দোলন তৈরি করেছিল ৷ পরবর্তীতে আমরা চেষ্টা করেছি। একটা সিনেমা যখন তুমি মোবাইলে দেখতে, সেখানে সিনেমার স্পেস ভালোভাবে বোঝা যায় না ৷ একটা সময় যখন টেলিভিশন এল, টেলিভিশনের জন্য ছবি তৈরি হল। তখন টেলিভিশনের পর্দাটাকে ভেবেই করতে হতো। আমি যদিও কোনদিন করিনি। আমার বড় পর্দাই ভালো লাগে। আবার বর্তমানে ইয়াং ছেলেমেয়েরা হাতে মোবাইল নিয়ে খুব উন্নত মানের সিনেমা করছে। এক কথায় সিনেমা নিয়ে পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে। তবে আমার মনে হয় নতুন ধরনের একটা আন্দোলন তৈরি হবে। ইয়াং ছেলে মেয়েদের কাছে সিনেমা এখন একা নয়। তবে আসল কথা এত কিছুর ভিড়ে প্রকৃত সিনেমাকে খুঁজে নিতে হবে।"

ইটিভি ভারত: ওয়েব সিরিজ নির্মাণের দাপটে সিনেমা দেখা বা সিনেমা তৈরির প্রবণতা কমছে?

গৌতম ঘোষ: "কুঁড়েমি। কাজকর্ম করে এসে মানুষ ওয়েবসিরিজ দেখে নেয় ৷ তাও হলে যাচ্ছে মানুষ ৷ তবে ভারত ও বাংলাদেশে সিনেমা হলের সংখ্যা কমে গিয়েছে। হল ভেঙে মাল্টি স্টোরেজ বিল্ডিং হচ্ছে, দোকান হচ্ছে । কেরলে দেখলাম, একটি ছোট্ট জায়গার মধ্যে 400 সিনেমা হল। প্রচুর মানুষ সিনেমা দেখছেন ৷ সেখানে বড় পর্দায় ছবি করে অনেক বেশি লগ্নি ফিরিয়ে আনছে, যেটা আমাদের পশ্চিমবঙ্গে কম। বড় পর্দা থেকে টাকা প্রায় আসেই না।"

ইটিভি ভারত: আপনি কখনও ওয়েব সিরিজের পথে যাবেন?

গৌতম ঘোষ: আমি এখনও ঠিক করিনি। তবে আমার মাথায় একটা আছে। সেটা দেখি ৷ সদ্য নতুন ছবি শেষ করেছি । সেটার ইন্টারন্যাশনাল প্রচার নিয়ে ব্যস্ত। এছাড়া, আরও দু'টো ছবি আমার সই করা আছে। তবে পরবর্তীকালে ওয়েব সিরিজ করলেও করতে পারি ৷ আমার কেরিয়ারের প্রথম থেকেই প্রামাণ্য তথ্যচিত্র ও কাহিনী চিত্র পাশাপাশি করে গিয়েছি। আমার ভালো লাগে, আমি শিক্ষিত হই। ইন্দো-ইতালিয়ান একটা ছবি করছি, ছবিটার নেরেটিভটাই 3টে ভাষায়। তবে গল্পটা এখন বলব না। কলকাতায় 'মুজিব' তথ্যচিত্রটা করেও আমি খুব আনন্দ পেয়েছি।"

ইটিভি ভারত: রাজ্যে ও দেশে বর্তমান যা রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট, তাতে সিনেমা বা তথ্যচিত্র করতে গিয়ে বাকস্বাধীনতা খর্ব হয়?

গৌতম ঘোষ: "বাকস্বাধীনতা খর্ব তো হচ্ছেই ৷ অনেক জায়গায় অনেক ঘটনা ঘটেছে গত কয়েক বছরে। তবে আমার মনে হয় নির্ভীকভাবে কাহিনী চিত্র ও তথ্যচিত্র করা উচিত। কারন এটা গণতান্ত্রিক দেশ ৷ যদি সমস্যা হয়, সমস্যার বিরুদ্ধে রাস্তা আছে লড়াই করার। তর্ক-বিতর্ক তো হবেই ৷ গণতন্ত্রে তর্ক-বিতর্কটাই তো বড় কথা ৷ পরিচালকরা নিজেদের মধ্যে সেন্সার না করে, দেখা যাবে, যা হবে ভাবা উচিত ৷ চিত্ত যেথা ভয় শূন্য উচ্চ যেথা শির।"

আরও পড়ুন: মহালয়ায় মা দুর্গার তিন রূপ নিয়ে পর্দায় আসছেন কোয়েল, পুজো ঘিরে ভাসলেন নস্ট্যালজিয়ায়

Last Updated : Oct 16, 2023, 2:08 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.