কলকাতা, 24 মে : বর্তমানে রীতিমত বক্স অফিস কাঁপাচ্ছে অনীক দত্ত পরিচালিত বাংলা ছবি 'অপরাজিত'। সত্যজিৎ রায়ের 'পথের পাঁচালি' তৈরির নেপথ্য কাহিনি হল এই ছবি ৷ দেখে প্রশংসায় উচ্ছ্বসিত বাঙালি । দেশে বিদেশে খ্যাতির চূড়া ছুঁয়েছে এই ছবি । তবু বিতর্ক যেন পিছু ছাড়ছে না অনীক দত্তকে ঘিরে (Controversy Against Anik Dutta Directional Aparajito )।
উল্লেখ্য, চিত্র এবং বাণিজ্যিক শিল্পের জনক অন্নদা মুন্সী ছিলেন সত্যজিৎ রায়ের মেন্টর । স্বাভাবিকভাবেই এই ছবিতে দেখানো হয়েছে তাঁকেও । এবার বিতর্ক দানা বাঁধল এই চরিত্রটিকে কেন্দ্রে রেখেই । অন্নদা মুন্সীর নাতনি শিবপ্রিয়া বাগচি এদিন ইটিভি ভারতকে বলেন, "অপরাজিত দেখে খুব ভাল লাগল । কিন্তু একটা জায়গায় মারাত্মক আপত্তি আছে । এখানে আমার দাদু অর্থাৎ অন্নদা মুন্সীকে অনীক দত্ত যেভাবে দেখিয়েছেন তিনি আমার দাদু নন । পরিচালক ঠিক কোন সূত্রে জানতে পারলেন অন্নদা মুন্সীর পাঞ্জাবির পকেটে হিপ ফ্লাস্ক থাকত ? অন্নদা মুন্সি সত্যজিৎ রায়কে তুই তোকারি করে সম্বোধন করতেন, উনি কীভাবে জানলেন? ওঁর স্ক্রিপ্ট-এর ভাষায় সন্ধে হলে অফিসে অন্নদা মুন্সি "ঢুকু ঢুকু করতেন"-এই জায়গাগুলিতে আমাদের আপত্তি আছে । আমার দাদুর সন্তানেরা এখনও জীবিত । ছবিটা বানানোর আগে একবার কথা বলে নিতে পারতেন তাঁদের সঙ্গে । অনীক বাবু একজন অত্যন্ত দক্ষ, বিচক্ষণ পরিচালক । ওঁর কাছ থেকে এমনটা আশা করিনি ।"
এরপর শিবপ্রিয়া বাগচি ফোন ঘোরান অনীক দত্তকে । সেই সময় ফোন বেজে যায় পরিচালকের । পরে অনীক দত্ত হোয়াটস অ্যাপে তাঁর সঙ্গে কথা বলেন । শিবপ্রিয়ার কথায়, "অনীক বাবু আমাকে হোয়াটস অ্যাপে কল করেছিলেন । উনি ক্ষমা চেয়েছেন । আমাকে বললেন, একবার যদি আমাকে আগে একটু বলতেন । অনীক বাবুর মতে, নেশা করা তো খারাপ কিছু নয় । তবে, এটাও ঠিক আজ আমার দাদুকে যদি এভাবে দেখানো হত যেটা তিনি নন, তা হলে আমারও খারাপ লাগত । আমি ক্ষমাপ্রার্থী । ছবিটা থেকে ওই জায়গাটুকু তো আর কাটা সম্ভব নয় এখন ।"
শিবপ্রিয়া এ কথা ইটিভি ভারতকে জানিয়ে বলেন, "ছবিটা দেখার পর যে রাগ আমার মনে দানা বেঁধেছিল সেই রাগ এখন আর নেই, ওঁর সঙ্গে কথা বলার পর । উনি একদিন আমাদের সঙ্গে দেখা করে আড্ডাও দেবেন বলে জানিয়েছেন । সবথেকে বড় কথা উনি ক্ষমা চেয়েছেন ।"
আরও পড়ুন : গড়পড়তা প্রেম নয় বরং নানা আবেগে রঙিন, এসে গেল 'প্রাপ্তি'র ট্রেলার
তবে শিবপ্রিয়াদেবী আরও বলেন, "এখন যেহেতু ছবির থেকে ওই অংশগুলি কাটা সম্ভব নয় তাই একটা আফসোস থেকে গেলো যে এই সিনেমাটা দেখে অন্নদা মুন্সীর শিল্পী সত্তার সম্বন্ধে দর্শক ঠিকটা জানলেও তাঁর ব্যক্তিগত জীবন সম্বন্ধে ভুলটাই জেনে বাড়ি ফিরবেন । তাই পরিচালকদের প্রতি অনুরোধ রইলো যে বায়োপিক বা এই ধরনের ছবি বানানোর আগে যদি সেই ব্যক্তির পরিবার এবং বন্ধুবান্ধবের সঙ্গে কথা বলা যায় তাহলে এই এমন ভুলের অবকাশ থাকে না ।" ইটিভি ভারতের তরফে অনীক দত্তকে এই ব্যাপারে ফোন কর হলে তিনি জানান, "এই ব্যাপারে আমার শিবপ্রিয়ার সঙ্গে কথা হয়ে গিয়েছে । এই ব্যাপারে অন্য কাউকে কেন কিছু বলব?"