দাসপুর ও কাঁথি, 26 মার্চ : বহিরাগত গুন্ডা এনে বাংলার ভোট বৈতরণী পেরোতে চাইছে বিজেপি ৷ ছক কষছে ভোট লুটের ৷ ইদানীংকালে এমন অভিযোগ বারবার করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ৷ তাঁর সেই অভিযোগ যে ভিত্তিহীন নয়, তারই প্রমাণ মিলেছে বৃহস্পতিবার রাতে ৷ অন্তত এমনই দাবি মমতার ৷ শুক্রবার পশ্চিম মেদিনীপুরের দাসপুরে নির্বাচনী জনসভা করেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ সেখানেই তিনি দাবি করেন, বৃহস্পতিবার রাতে পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথি বাসস্ট্যান্ড থেকে 30 জন সশস্ত্র গুন্ডা ধরা পড়েছে ৷ এদের সবাইকেই উত্তরপ্রদেশ থেকে আনা হয়েছে বলে দাবি করেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ তাঁর অভিযোগ, ভোট লুট করতেই বিজেপি এইসব কাণ্ড ঘটাচ্ছে ৷
প্রকাশ্য জনসভায় স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী যখন এমন দাবি করছেন, তার ঠিক কয়েক ঘণ্টা আগেই ‘বহিরাগত’ ইস্যুতে চাঞ্চল্য ছড়ায় পূর্ব মেদিনীপুরের কাঁথিতে ৷ বৃহস্পতিবার রাতে কাঁথি বাসস্ট্য়ান্ড লাগোয়া একটি লজ থেকে তিন যুবককে পাকড়াও করেন তৃণমূলের কর্মী ও সমর্থকরা ৷ স্থানীয় সূত্রে খবর, ভোটের মুখে এলাকায় অচেনা মুখ দেখে সন্দেহ হয় আশপাশের বাসিন্দাদের ৷ এরপরই বাসস্ট্যান্ড লাগোয়া লজটিকে ঘিরে ফেলেন তাঁরা ৷ সেখানেই ঘর ভাড়া নিয়েছিল সন্দেহভাজন তিন যুবক ৷ এরা হল দীপক সোনি, গোবিন্দ নাথ এবং সঞ্জয় প্রসাদ ৷ এদের মধ্যে প্রথমজন বিহার এবং বাকি দু’জন দিল্লির বাসিন্দা বলে জানা গিয়েছে ৷
স্থানীয় তৃণমূল নেতৃত্বের অভিযোগ, এই যুবকরা আদতে বহিরাগত গুন্ডা ৷ ভোটে অশান্তি ছড়াতেই কাঁথিতে ঢুকে ঘাঁটি গেড়েছিল ৷ বিষয়টি নিয়ে ঝামেলা শুরু হতেই তিন সন্দেহভাজনের মধ্যে একজন চম্পট দেয় ৷ বাকি দু’জনকে পুলিশের হাতে তুলে দেন এলাকাবাসী ৷
আরও পড়ুন : নির্বাচন কমিশন বিজেপির খুড়তুতো ভাই, অফিসার বদল নিয়ে আক্রমণ মমতার
বৃহস্পতিবার রাতের এই ঘটনার পর মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়ের শুক্রবার সকালের মন্তব্য নিঃসন্দেহে তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের ৷ যদিও বৃহস্পতিবার রাতে যাদের ঘিরে সন্দেহের বাতাবরণ তৈরি হয়েছিল, তাদের সম্পর্কে পুলিশের তরফে সরাসরি কোনও তথ্য মেলেনি ৷ কিন্তু পূর্ব মেদিনীপুর জেলা তৃণমূল কংগ্রেসের সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমানের দাবি, বিজেপির মদতেই এ রাজ্যে বহিরাগত গুন্ডারা ঢুকে পড়ছে ৷ কাঁথির ঘটনাও তার ব্য়তিক্রম নয় বলেই মনে করছেন হাবিবুর ৷ যদিও শাসকদলের এই অভিযোগ মানতে নারাজ গেরুয়াশিবির ৷
দাসপুরে তৃণমূলের হয়ে ভোটে লড়ছেন মমতা ভুঁইঞা ৷ তাঁর প্রচারেই এদিন এখানে সভা করেন মমতা ৷ সভাস্থলে মহিলাদের ভিড় ছিল চোখে পড়ার মতো ৷ তাঁদের উদ্দেশে তৃণমূল নেত্রীর বার্তা, বাংলাকে বাঁচাতে হলে বহিরাগত গুন্ডাদের আটকাতেই হবে ৷ আটকাতে হবে ভোটলুট ৷ তাই আরও একবার ভোটারদের সতর্ক করেন তিনি ৷ মনে করিয়ে দেন নিজের ভোট নিজে না দিয়ে ঘরে ফেরা যাবে না কিছুতেই ৷ তাহলেই এনআরসি-র অজুহাতে বিজেপি তাঁকে দেশছাড়া করবে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেন তৃণমূল নেত্রী ৷ এছাড়়াও, গত 10 বছরে তাঁর সরকার পশ্চিম মেদিনীপুরের জন্য কী কী কাজ করেছে, তারও খতিয়ান দেন তিনি ৷ এদিন দাসপুরের পর চন্দ্রকোণাতেও সভা করেন মমতা ৷