কাটোয়া, 17 এপ্রিল : স্বয়ং প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেই তদন্তের হুঁশিয়ারি দিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায় ! শীতলকুচিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলিতে চার ভোটারের মৃত্য়ুর পর স্থানীয় তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে তাঁর ফোনালাপ প্রকাশ্যে আসা প্রসঙ্গে এই হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো ৷ নির্বাচনী কর্মসূচির মঞ্চ থেকেই সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, কে বা কারা তাঁর ফোন ট্য়াপ করেছে, তার হদিশ পেতে প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তদন্ত করাতে পিছপা হবেন না তিনি !
গত শনিবার (10 এপ্রিল) ছিল চতুর্থ দফার ভোট ৷ ভোটের দিন সকাল থেকেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে কোচবিহারের শীতলকুচি ৷ প্রথমে তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষের মাঝে পড়ে প্রাণ যায় 18 বছরের আনন্দ বর্মনের ৷ এরপর কেন্দ্রীয় বাহিনীর গুলি কেড়ে নেয় আরও চার ভোটারের জীবন ৷ গোটা ঘটনায় নিন্দার ঝড় ওঠে সব মহলে ৷ কেউ সিআইডি, তো কেউ সিবিআইকে দিয়ে তদন্তের দাবিতে সরব হন ৷ শুরু হয় ভোটের রাজনীতি ৷
ইতিমধ্যেই শুক্রবার (16 এপ্রিল) একটি ফোনালাপের রেকর্ডিং প্রকাশ্যে আসে ৷ শীতলকুচি কাণ্ডের পর স্থানীয় তৃণমূল প্রার্থী পার্থপ্রতিম রায়ের সঙ্গে দলনেত্রী মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়কে কথা বলতে শোনা যায় তাতে ৷ বিজেপির অভিযোগ, মুখ্যমন্ত্রী যে লাশের রাজনীতি করেন, এই অডিও টেপই তার প্রমাণ ৷
আরও পড়ুন : প্রচারের সময়সীমা কমানো নিয়ে নির্বাচন কমিশনকে তোপ মমতার
শনিবার (আজ) পূর্ব বর্ধমানে একের পর এক সভা করেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ কাটোয়ার সভা থেকে তাঁর প্রশ্ন, এই কথপোকথনের রেকর্ডিং সামনে এল কীভাবে ? তবে কি তাঁর ফোন গোপনে ট্য়াপ করা হচ্ছে ? এমনকী, এ নিয়ে সরাসরি প্রধানমন্ত্রীকেই আক্রমণ করেন মমতা ৷ তাঁর মতে, ওই অডিও টেপে যা প্রকাশ্যে এসেছে, তাতে অন্যায় কিছু নেই ৷ তিনি নিহতদের পরিবারের সদস্যদের পাশে থাকতে চেয়েছিলেন ৷ তাঁদের সঙ্গে দেখা করতে চেয়েছিলেন ৷ কিন্তু সেদিন ভোট থাকায় তাঁর পক্ষে তখনই শীতলকুচিতে যাওয়া সম্ভব ছিল না ৷ সেই কারণেই মৃতদের দেহ রেখে দিতে বলেছিলেন তিনি ৷
মুখ্যমন্ত্রীর সাফ কথা, তিনি তাঁর দলের প্রার্থী তথা কর্মীর সঙ্গে এমন কথা বলতেই পারেন ৷ কিন্তু তাঁর অনুমতি ছাড়া কীভাবে তাঁর ফোন ট্য়াপ করা হয় ৷ মমতার অভিযোগ, এর জন্য প্রধানমন্ত্রীই দায়ী ৷ তিনিই তাঁর ফোন ট্য়াপ করাচ্ছেন ৷ ঘটনার জন্য সরাসরি প্রধানমন্ত্রীর পদত্য়াগ দাবি করেন তিনি ৷ এমনকী, কারা এই কাণ্ড ঘটিয়েছে, তা জানতে আগামী দিনে এর পূর্ণাঙ্গ তদন্ত করা হবে বলেও জানান মমতা ৷ সবথেকে বড় কথা, প্রয়োজনে তিনি যে প্রধানমন্ত্রীর বিরুদ্ধেও তদন্ত করাতে পিছপা হবেন না, দ্বর্থ্যহীন ভাষায় সে কথাও বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী ৷ যা বেনজির বলেই মনে করছে রাজনৈতিক মহল ৷