ETV Bharat / crime

Drug Trafficking : রাজ্যের মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে মার্কিন-কানাডা যোগ, চিন্তা বাড়ছে পুলিশের

কেন ভারত মাদক পাচারকারীদের কাছে সেফ করিডর হয়ে দাঁড়াচ্ছে ? এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের নারকোটিক সেলের এক আধিকারিক জানান যে প্রথমত, ভৌগলিক অবস্থান । এ রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটানের সীমান্ত রয়েছে । নেপালের ঠিক পাশেই চিন । ভারতীয় উপমহাদেশে ড্রাগ ঢোকানোর সবচেয়ে সহজ রুট তাই এ রাজ্যই ।

রাজ্যের নিষিদ্ধ মাদক ব্যবসায়ীদের মার্কিনি এবং কানাডা যোগ চিন্তা বাড়াচ্ছে পুলিশের
রাজ্যের নিষিদ্ধ মাদক ব্যবসায়ীদের মার্কিনি এবং কানাডা যোগ চিন্তা বাড়াচ্ছে পুলিশের
author img

By

Published : Aug 17, 2021, 7:35 PM IST

Updated : Aug 17, 2021, 8:03 PM IST

কলকাতা, 17 অগস্ট : এতদিন শুধুমাত্র উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক জায়গা এবং থাইল্যান্ড, সৌদি আরব বা মালয়েশিয়ার মতো এশীয় দেশগুলির থেকেই মাদক পাচার হত পশ্চিমবঙ্গে । এবার এই রাজ্যের মাদক চক্রের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার যোগ খুঁজে পেলেন রাজ্য পুলিশের নারকোটিক সেলের গোয়েন্দারা।

সাম্প্রতিককালে ছয়জনকে মাদক সমেত গ্রেফতার করেন নারকোটিক সেলের গোয়েন্দারা । জানা যাচ্ছে, তাদের কাছে মাদকের এই কনসাইনমেন্ট এসেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে ।


ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, উদ্ধার হওয়া প্রায় প্রতিটি মাদকই সবচেয়ে দামি এবং উন্নত মানের । ধৃত ব্যক্তিদের জেরা করে জানা যায়, এই উন্নত মানের মাদক তাদের কাছে এসেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে ।

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, উদ্ধার হওয়া এই মাদকগুলির মধ্যে উচ্চমাত্রায় টিএইচসি (টেট্রা হাইড্রো ক্যানাবিনল) আছে। ডার্ক নেটওয়েব প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করেই মাদকের বরাত নেওয়া হচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের অনুমান । তার পর সেই মাদক ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে দেশ জুড়ে ।


ড্রাগ ল এনফোর্সমেন্টের আধিকারিকদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যই এ ভাবে মাদক পাচার চলছে বলে অনুমান গোয়েন্দাদের । তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন যে, সিমরন সিংহ নামে ভুয়ো পরিচয়ে এই মাদক পাচারের কাজ সামলাত ধৃত শ্রদ্ধা সুরানা । ধৃতের সঙ্গে কানাডা গ্যাংয়ের যোগাযোগ প্রবল ভাবে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে । এখন তাকে জেরা করছেন এনসিবি-র গোয়েন্দারা । তাঁর কাছ থেকে ভুয়ো আধার কার্ডও উদ্ধার হয়েছে । টেলি-ভেন্ডারের মাধ্যমে মাদকের বরাত দিয়েছিল তারিন ভাটনগর নামে এক ব্যক্তি।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া এবং কানাডা থেকে উন্নত মানের মাদক ভুয়ো ক্যুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যম দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে বলে খবর পায় নারকোটিক কন্ট্রোল বিউরো । সেই তথ্য ধরেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্যুরিয়ার সংস্থাগুলির উপর নজরদারি চালাচ্ছিল নারকোটিক আধিকারিকরা ৷

এই সংক্রান্ত খবর : ডায়মন্ড হারবারে বেআইনি মাদক ও অস্ত্র সহ ধৃত 2


কিন্তু কেন ভারত মাদক পাচারকারীদের কাছে সেফ করিডর হয়ে দাঁড়াচ্ছে ? এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের নারকোটিক সেলের এক আধিকারিক জানান যে প্রথমত, ভৌগলিক অবস্থান । এ রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটানের সীমান্ত রয়েছে । নেপালের ঠিক পাশেই চিন । ভারতীয় উপমহাদেশে ড্রাগ ঢোকানোর সবচেয়ে সহজ রুট তাই এ রাজ্যই । ফলে এই রাস্তা ধরে মাদক ঢুকছে ।


পাশাপাশি , কেমিক্যাল ড্রাগ তৈরির খরচ অনেক । এর জন্য দরকার উন্নত পরিকাঠামো ব্যবস্থা । তাই, এদেশে এ ধরনের ড্রাগ তৈরি হয় না । কেমিক্যাল ড্রাগ মূলত তৈরি হয় মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও চিনে । তবে জানা যাচ্ছে, এখন আমেরিকাতেও তৈরি হচ্ছে । সেই সব ড্রাগই বিভিন্ন সীমান্ত পার করে ঢুকছে এ রাজ্যে ।


জানা যাচ্ছে, মায়ানমার থেকে ড্রাগ বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে । থাইল্যান্ড থেকে আসা ড্রাগের জন্যও একই রুট ব্যবহার করছে মাদক পাচারকারীরা । পাশাপাশি চিন থেকে নেপাল সীমান্ত পার করে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে ড্রাগ ।


একবার রাজ্যে ঢোকার পর এইসব ড্রাগ ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় । অত্যন্ত দামি হওয়ায় এলিট সোসাইটির লোকজনের মধ্যে এর ব্যবহার বেশি । তাই মূলত পার্টি সার্কিটেই বেশি ব্যবহার হয় ।


মাদক পাচারের জন্য সমুদ্রপথ ব্যবহার করছে পাচারকারীরা । বঙ্গোপসাগর-আরব সাগর হয়ে মাদক ছড়িয়ে পড়ছে উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে । এখন সেই রুটের বদলে অবস্থানগত সুবিধার জন্য, এ রাজ্যকে ব্যবহার করছে মাদক পাচারকারীরা । আর কলকাতা হয়ে উঠছে ট্রানজিট পয়েন্ট ৷

কলকাতা, 17 অগস্ট : এতদিন শুধুমাত্র উত্তর-পূর্ব ভারতের একাধিক জায়গা এবং থাইল্যান্ড, সৌদি আরব বা মালয়েশিয়ার মতো এশীয় দেশগুলির থেকেই মাদক পাচার হত পশ্চিমবঙ্গে । এবার এই রাজ্যের মাদক চক্রের সঙ্গে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডার যোগ খুঁজে পেলেন রাজ্য পুলিশের নারকোটিক সেলের গোয়েন্দারা।

সাম্প্রতিককালে ছয়জনকে মাদক সমেত গ্রেফতার করেন নারকোটিক সেলের গোয়েন্দারা । জানা যাচ্ছে, তাদের কাছে মাদকের এই কনসাইনমেন্ট এসেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে ।


ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষার পর গোয়েন্দারা জানতে পেরেছেন, উদ্ধার হওয়া প্রায় প্রতিটি মাদকই সবচেয়ে দামি এবং উন্নত মানের । ধৃত ব্যক্তিদের জেরা করে জানা যায়, এই উন্নত মানের মাদক তাদের কাছে এসেছিল মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং কানাডা থেকে ।

গোয়েন্দারা জানাচ্ছেন, উদ্ধার হওয়া এই মাদকগুলির মধ্যে উচ্চমাত্রায় টিএইচসি (টেট্রা হাইড্রো ক্যানাবিনল) আছে। ডার্ক নেটওয়েব প্ল্যাটফর্মকে ব্যবহার করেই মাদকের বরাত নেওয়া হচ্ছে বলে গোয়েন্দাদের অনুমান । তার পর সেই মাদক ক্যুরিয়ারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হচ্ছে দেশ জুড়ে ।


ড্রাগ ল এনফোর্সমেন্টের আধিকারিকদের চোখে ধুলো দেওয়ার জন্যই এ ভাবে মাদক পাচার চলছে বলে অনুমান গোয়েন্দাদের । তদন্তকারী আধিকারিকরা জানতে পেরেছেন যে, সিমরন সিংহ নামে ভুয়ো পরিচয়ে এই মাদক পাচারের কাজ সামলাত ধৃত শ্রদ্ধা সুরানা । ধৃতের সঙ্গে কানাডা গ্যাংয়ের যোগাযোগ প্রবল ভাবে রয়েছে বলে জানা গিয়েছে । এখন তাকে জেরা করছেন এনসিবি-র গোয়েন্দারা । তাঁর কাছ থেকে ভুয়ো আধার কার্ডও উদ্ধার হয়েছে । টেলি-ভেন্ডারের মাধ্যমে মাদকের বরাত দিয়েছিল তারিন ভাটনগর নামে এক ব্যক্তি।


মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়া এবং কানাডা থেকে উন্নত মানের মাদক ভুয়ো ক্যুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যম দিয়ে দেশে প্রবেশ করছে বলে খবর পায় নারকোটিক কন্ট্রোল বিউরো । সেই তথ্য ধরেই বিভিন্ন আন্তর্জাতিক ক্যুরিয়ার সংস্থাগুলির উপর নজরদারি চালাচ্ছিল নারকোটিক আধিকারিকরা ৷

এই সংক্রান্ত খবর : ডায়মন্ড হারবারে বেআইনি মাদক ও অস্ত্র সহ ধৃত 2


কিন্তু কেন ভারত মাদক পাচারকারীদের কাছে সেফ করিডর হয়ে দাঁড়াচ্ছে ? এই বিষয়ে কলকাতা পুলিশের নারকোটিক সেলের এক আধিকারিক জানান যে প্রথমত, ভৌগলিক অবস্থান । এ রাজ্যের সঙ্গে বাংলাদেশ-নেপাল-ভুটানের সীমান্ত রয়েছে । নেপালের ঠিক পাশেই চিন । ভারতীয় উপমহাদেশে ড্রাগ ঢোকানোর সবচেয়ে সহজ রুট তাই এ রাজ্যই । ফলে এই রাস্তা ধরে মাদক ঢুকছে ।


পাশাপাশি , কেমিক্যাল ড্রাগ তৈরির খরচ অনেক । এর জন্য দরকার উন্নত পরিকাঠামো ব্যবস্থা । তাই, এদেশে এ ধরনের ড্রাগ তৈরি হয় না । কেমিক্যাল ড্রাগ মূলত তৈরি হয় মায়ানমার, থাইল্যান্ড ও চিনে । তবে জানা যাচ্ছে, এখন আমেরিকাতেও তৈরি হচ্ছে । সেই সব ড্রাগই বিভিন্ন সীমান্ত পার করে ঢুকছে এ রাজ্যে ।


জানা যাচ্ছে, মায়ানমার থেকে ড্রাগ বাংলাদেশ সীমান্ত দিয়ে ঢুকছে । থাইল্যান্ড থেকে আসা ড্রাগের জন্যও একই রুট ব্যবহার করছে মাদক পাচারকারীরা । পাশাপাশি চিন থেকে নেপাল সীমান্ত পার করে পশ্চিমবঙ্গে ঢুকছে ড্রাগ ।


একবার রাজ্যে ঢোকার পর এইসব ড্রাগ ছড়িয়ে পড়ছে দেশের বিভিন্ন জায়গায় । অত্যন্ত দামি হওয়ায় এলিট সোসাইটির লোকজনের মধ্যে এর ব্যবহার বেশি । তাই মূলত পার্টি সার্কিটেই বেশি ব্যবহার হয় ।


মাদক পাচারের জন্য সমুদ্রপথ ব্যবহার করছে পাচারকারীরা । বঙ্গোপসাগর-আরব সাগর হয়ে মাদক ছড়িয়ে পড়ছে উপমহাদেশের বিভিন্ন দেশে । এখন সেই রুটের বদলে অবস্থানগত সুবিধার জন্য, এ রাজ্যকে ব্যবহার করছে মাদক পাচারকারীরা । আর কলকাতা হয়ে উঠছে ট্রানজিট পয়েন্ট ৷

Last Updated : Aug 17, 2021, 8:03 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.