শিলিগুড়ি, 28 মে : গ্রাহক সেজে বন্যপ্রাণী পাচারের ছক ভেস্তে দিলেন বনকর্মীরা ৷ প্যাঙ্গোলিনের আঁশ ছাড়াও উদ্ধার হল একটি জীবিত প্যাঙ্গোলিন ৷ পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার অভিযোগে গ্রেফতার করা হল তিনজনকে ৷ শিলিগুড়ি শহর লাগোয়া বৈকুণ্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশনের সারুগাড়া রেঞ্জের অভিযানে মিলল সাফল্য ৷
বরাবরই বন্যপ্রাণ পাচারের স্বর্গরাজ্য শিলিগুড়ি ৷ উত্তর-পূর্ব ভারতের গেটওয়ে হওয়ার কারণে শিলিগুড়িকে করিডোর করে পাচারের পরিকল্পনা করে পাচারকারীরা ৷ এর আগে চিতাবাঘের চামড়া, হাতির দাঁত, গন্ডারের খড়্গ-সহ একাধিক জিনিস পাচারের ঘটনা ঘটেছে এই শহরে ৷ বৃহস্পতিবার এমনই একটি পাচারের পরিকল্পনা অভিযান চালিয়ে ভেস্তে দিল বন দফতর ৷ এবার প্যাঙ্গোলিনের আঁশ পাচারের পরিকল্পনা ছিল পাচারকারীদের ৷ তার আগেই অভিযান চালিয়ে তিন পাচারকারীকে গ্রেফতার করেন বন দফতরের কর্মীরা ৷
প্যাঙ্গোলিনের আঁশের ব্য়াপক চাহিদা রয়েছে চিনে ৷ এই আঁশ দিয়ে ত্বকের ওষুধ তৈরি করা হয় সেখানে ৷ চিনের কালোবাজারে প্যাঙ্গোলিনের আঁশের চাহিদা থাকায় এর আগেও এই প্রাণীটিকে নিশানা করেছে পাচারকারীরা ৷
বন বিভাগ সূত্রে জানা গিয়েছে, শিলিগুড়ি সংলগ্ন গজলডোবায় প্যাঙ্গোলিনের আঁশ পাচারের খবর পেয়ে সেখানে ফাঁদ পাতেন বৈকুণ্ঠপুর ফরেস্ট ডিভিশনের সারুগাড়া রেঞ্জের বনকর্মীরা ৷ পাচারকারীদের ধরতে গ্রাহক সেজে তাদের সঙ্গে দেখা করতে যান রেঞ্জ অফিসার সঞ্জয় দত্ত ৷ এরপর পাচারকারীদের থেকে প্যাঙ্গোলিনের আঁশ-সহ একটি জীবিত প্যাঙ্গোলিন কেনার টোপ দেন তিনি ৷ সেই মতো গজলডোবার কাছে ‘কনসাইনমেন্ট’ হাতবদলের সময় হাতেনাতে ধরে ফেলা হয় পাচারকারীদের ৷
আরও পড়ুন : লোকালয়ে দুটি চিতাবাঘ, উদ্ধার করল বন দফতর
একটি স্কুল ব্যাগে করে নিয়ে আসা হয়েছিল ওই প্যাঙ্গোলিন এবং আঁশ ৷ ঘটনায় তিনজন পাচারকারীকে গ্রেফতার করেছেন বনকর্মীরা ৷ ধৃতরা হল, মালবাজারের গুরুংঝোরার বাসিন্দা সুনীল ওরাওঁ, চক মৌলানির আদাবাড়ির মিজানুর রহমান এবং লাটাগুড়ির মাঝাবাড়ির বাসিন্দা আমজাদ হোসেন ৷
ঘটনায় পাচারে ব্যবহৃত একটি চারচাকা গাড়ি বাজেয়াপ্ত করেছে বন দফতর ৷ উদ্ধার হয়েছে দেড় কেজি প্যাঙ্গোলিনের আঁশ ও একটি জীবিত প্যাঙ্গোলিন ৷ ধৃতদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদ করে বনকর্মীরা জানতে পেরেছেন, ওই আঁশ নেপাল হয়ে চিনে পাচারের পরিকল্পনা ছিল ৷