শিলিগুড়ি, 16 ফেব্রুয়ারি : ‘‘বাড়িতে ভাই আসলেই উৎসব লেগে যেত । গান-বাজনা, খাওয়াদাওয়া আর ঘুরে বেড়াতেই সময় কেটে যেত । পাহাড় আর জঙ্গলের প্রতি আজব টান ছিল ভাইয়ের ।’’ বলতে বলতেই ডুকরে কেঁদে উঠছেন বাপ্পি লাহিড়ীর ভাই ভবতোষ চৌধুরী । বুধবার মুম্বইয়ের একটি বেসরকারি হাসপাতালে প্রয়াত হয়েছেন ডিস্কো কিং (Veteran Singer Composer Bappi Lahiri Passes Away) । তারপরেই শোকের ছায়া নেমে আসে চৌধুরী পরিবারে ।
শিলিগুড়িতে দু'বছর বয়স থেকে আসা-যাওয়া ছিল বাপ্পি লাহিড়ীর । কলেজ পাড়ার কোর্ট মোড়ে থাকতেন মেসো আশুতোষ চৌধুরী ও মাসি শঙ্করী চৌধুরী । গোটা বাড়ি জুড়েই রয়েছে কিংবদন্তীর স্মৃতি । এদিন তাঁর মারা যাওয়ার খবর মিলতেই আকাশ ভেঙে পরে গোটা বাড়িতে । দাদা ভবতোষ চৌধুরী, বাপ্পি লাহিড়ী একসঙ্গেই ওই বাড়িতে বেড়ে উঠেছেন । পরে সেখান থেকে কলকাতা মায়ানগরীতে পাড়ি দেন বাপ্পি লাহিড়ী । কিন্তু শেষদিন পর্যন্ত ছোটবেলার শহরের সঙ্গে তাঁর টান অটুট ছিল ৷ ব্যস্ততার মধ্যেও বছরে অন্তত চার-পাঁচবার আসতেন মাসির বাড়ি । শেষবার গিয়েছিলেন 2017 সালে । শুধু তাই নয়, 2016 সালে শেষ লাইভ শো করেছিলেন শিলিগুড়ির উত্তরবঙ্গ উৎসবের মঞ্চেই গেয়েছিলেন তিনি ।
ফলে সকাল থেকেই চৌধুরী বাড়িকে গ্রাস করেছে নিস্তব্ধতা । বাপ্পি লাহিড়ী যে আর নেই সেটা কেউ বিশ্বাসই করে উঠতে পারছেন না । গত বছরই শরীর খারাপের সময়ই তাঁর দেখা করতে যাওয়ার ইচ্ছে ছিল দাদা ভবতোষের । কিন্তু তা আর হয়ে ওঠেনি । বাড়ির দোতলায় তাঁর জন্য একটা আলাদা ঘর রাখা ছিল । শিলিগুড়িতে আসলে ওই ঘরেই থাকতেন তিনি । বাড়ির একতলার ড্রয়িং রুমটাই ছিল আড্ডাখানা । মাছ খেতে প্রচণ্ড ভালোবাসতেন কিংবদন্তী । ফলে তিনি গেলেই হরেকরকম মাছের রান্নার হিড়িক পরে যেতো বাড়িতে ৷ নিকটাত্মীয়কে হারিয়ে স্মৃতিচারণায় মগ্ন পরিবারের সদস্যরা ৷
আরও পড়ুন : বাংলার আদরের বাপ্পিদার প্রয়াণে শোকবার্তা মমতার
ভবতোষ চৌধুরী বলেন, ‘‘এই বাড়িতে দু'জনে একসঙ্গে বড় হয়েছি । দেখা করতে যেতে চেয়েছিলাম । আমারও শরীর খারাপ থাকায় যেতে পারিনি । আর দেখা হল না ।’’ বিষাদের সুর পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের গলাতেও ৷