মালদা, 2 সেপ্টেম্বর: মামা অসুস্থ ৷ ক’দিন ধরে শ্বাসকষ্টের সমস্যা অনেকটা বেড়েছে ৷ ঠিকমতো নিঃশ্বাস নিতেও পারছেন না ৷ তাই আর বাড়িতে রাখা নয় ৷ মামাকে হাসপাতালে নিয়ে যাচ্ছিলেন ভাগ্নে মোজাম্মেল হক ৷ পরিবারের আরেক সদস্যকে সঙ্গে নিয়ে ডুলিতে চাপিয়ে চলছিল তাঁর মামার হাসপাতাল যাত্রা ৷ কোনও পাহাড়ি এলাকায় নয়, এই ছবি চাঁচল 2 নম্বর ব্লকের চিলাপাড়া গ্রামের (Chanchal Road Problem) ৷ অভিযোগ বর্ষাকালে গ্রামের রাস্তায় অ্যাম্বুল্যান্স ঢোকে না ৷ তাই এভাবেই তাঁরা রোগীদের হাসপাতালে নিয়ে যান ৷ যা নিয়ে এবার ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা (Threaten to Boycott Panchayat Polls) ৷
মোজাম্মেল বলছেন, “শুধু মামাই নয়, বর্ষার সময় চিলাপাতা আর সংলগ্ন লালগঞ্জ গ্রামের কোনও রোগী কিংবা গর্ভবতীকে এভাবেই হাসপাতালে নিয়ে যেতে হয় ৷ এই রাস্তায় কোনও গাড়ি ঢুকতে পারে না ৷ অ্যাম্বুল্যান্সও না ৷ আমার বাবা-ঠাকুরদারাও এই রাস্তা এভাবেই দেখেছেন ৷ এখন আমরা দেখছি ৷ পাকা রাস্তার দাবিতে আমরা আন্দোলনও করেছি ৷ কোনও কাজ হয়নি ৷ নিজেদের প্রয়োজনে আমরা ডুলি তৈরি করেই রাখি ৷”
পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই রাস্তা পাকা না হলে ভোট বয়কটের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন গ্রামবাসীরা ৷ রাস্তার এই দশা নিয়ে তাঁরা বিক্ষোভও দেখান ৷ এ নিয়ে গ্রামের বাসিন্দা জাহাঙ্গির আলি বলেন, “ছয় মৌজার চাষি চাষের মরশুমে এই রাস্তা দিয়েই নিজেদের প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র নিয়ে যান ৷ কোনও রোগী কিংবা গর্ভবতীদের ডুলিতে চাপিয়ে দেড় কিলোমিটার নিয়ে যেতে হয় ৷ গত দু’বছর ধরে আমরা পাকা রাস্তার দাবি জানালেন, কাজ হয়নি ৷ আমরাও সরকারকে কর দিই ৷ তাই আসন্ন পঞ্চায়েত নির্বাচনের আগে এই রাস্তা পাকা না করা হলে, আমরা বাধ্য হয়ে ভোট বয়কট করব ৷’’
অথচ এমনটা হওয়ার কথা ছিল না ৷ জেলা তৃণমূল সভাপতি আব্দুর রহিম বক্সি এই এলাকার বিধায়ক ৷ তাঁর বিধানসভা এলাকার রাস্তার হাল এমন কেন ? যে প্রশ্নের জবাবে, বিধায়ক সমস্ত দোষ চাপিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রের উপর ৷ তিনি বলেন, ‘‘100 দিনের কাজের প্রকল্পে ওই রাস্তা-সহ আরও কিছু রাস্তার কাজ ধরা ছিল ৷ কিন্তু কেন্দ্র ওই প্রকল্পের টাকা দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছে ৷ ওই প্রকল্পে টাকা না-মিললে অন্য তহবিল থেকে রাস্তার কাজ করা যায় কি না, তা নিয়ে বিডিওর সঙ্গে কথা বলব ৷’’
আরও পড়ুন: 10 বছর ধরে বেহাল রাস্তা, চারা গাছ পুঁতে বিক্ষোভ গ্রামবাসীদের
বিডিও দিব্যজ্যোতি দাসও এ নিয়ে পরোক্ষে কেন্দ্রের কাঁধে দোষ চাপিয়েছেন ৷ তিনি বলেন, “ওই রাস্তাটির বিষয়ে সব জানি ৷ বেশ কিছু রাস্তা 100 দিনের কাজের প্রকল্পে করার সিদ্ধান্ত হয়েছিল ৷ ওই প্রকল্পে অর্থের জোগান বন্ধ হয়ে যাওয়ায়, সেই কাজ করা যায়নি ৷ অন্য প্রকল্পে ওই কাজ করার জন্য আমরা উপরমহলে প্রস্তাব পাঠিয়েছি ৷ এর মধ্যে গ্রামবাসীদের সুরাহায় রাস্তাটির অল্পবিস্তর সংস্কার করা যায় কি না, তা খতিয়ে দেখছি ৷’’