মালদা, 5 সেপ্টেম্বর : দলের সব কাউন্সিলরকে কলকাতায় ডেকে পাঠিয়ে ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহার করার নির্দেশ দিয়েছেন তৃণমূল নেতা এবং পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম । একই সঙ্গে নীহাররঞ্জন ঘোষকে আগের মতো পৌরবোর্ড পরিচালনার নির্দেশও দিয়েছেন পুর ও নগরোন্নয়ন মন্ত্রী । পুরমন্ত্রী দেওয়া তদন্তের নির্দেশকে স্বাগত জানিয়েছেন নীহাররঞ্জন । গতকাল কলকাতা থেকে মালদায় ফিরে কয়েকটি সংবাদমাধ্যমে প্রকাশিত খবরের ভিত্তি নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন ইংরেজবাজার পৌরসভার চেয়ারম্যান । অন্যদিকে, অনাস্থা প্রত্যাহার নিয়ে ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার জানিয়ে দিয়েছেন, অনাস্থা প্রস্তাব পেশের 21 দিনের মধ্যে তদন্ত কমিটি মালদায় না এলে তাঁরা কিছুতেই অনাস্থা প্রত্যাহার করবেন না ।
নীহারবাবুর বিরুদ্ধে আর্থিক দুর্নীতি সহ একাধিক অভিযোগ এনে 28 অগাস্ট মহকুমাশাসকের কাছে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করেন ইংরেজবাজার পৌরসভার 15 জন তৃণমূলের কাউন্সিলর । দলের কাউকে কিছু আগাম না জানিয়েই এই অনাস্থা প্রস্তাব নিয়ে আসেন তাঁরা । আকস্মিক এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়ে শাসকদল । পরিস্থিতি মোকাবিলায় তড়িঘড়ি মালদায় পাঠানো হয় এই জেলার দলীয় পর্যবেক্ষক গোলাম রব্বানিকে । তিনি এবং জেলা তৃণমূল সভানেত্রী মৌসম নুর বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের সঙ্গে কথা বলেও সমস্যার সমাধান করতে পারেননি । শেষ পর্যন্ত সোমবার (2 সেপ্টেম্বর) কলকাতায় দলীয় কাউন্সিলরদের সঙ্গে আলোচনায় বসেন ফিরহাদ হাকিম । বিশ্বস্ত সূত্রে জানা গেছে, তিনি নীহারবাবুর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব প্রত্যাহারের জন্য বিক্ষুব্ধ কাউন্সিলরদের নির্দেশ দেন । একই সঙ্গে নীহারবাবুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্তের জন্য একটি তদন্ত কমিটি মালদায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেন ।
গতকাল মালদা ফিরে নীহারবাবু বলেন, "সোমবার বৈঠকে সব কাউন্সিলররাই নিজেদের কথা বলেছেন । দল প্রথমেই যে নির্দেশ দিয়েছে, তা হল, দলকে না জানিয়ে যাঁরা অনাস্থা নিয়ে এসেছেন, তাঁদের অনাস্থা প্রত্যাহার করে নিতে হবে এবং তা নির্দিষ্ট সময়ের আগেই । দুই পৌরসভার (ইংরেজবাজারের পাশাপাশি পুরাতন মালদার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনা হয়েছে) কাউন্সিলরদেরই সেই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে । একই সঙ্গে দুই পৌরসভার চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে আনা অভিযোগের তদন্ত করতে পৌর নগর উন্নয়ন দপ্তর থেকে একটি তদন্ত কমিটিও জেলায় পাঠানো হবে । সেই কমিটি নিজেদের রিপোর্ট দপ্তরে জমা দেবে । তবে কবে সেই কমিটি মালদায় আসবে তা আমার জানা নেই । দলের সম্মান যাতে কিছুতেই ক্ষুন্ন না হয় তার জন্যই পুরমন্ত্রী এই নির্দেশ দিয়েছেন । আপাতত আমি আগের মতোই পৌরসভায় কাজ করে যাব । "
এদিকে জেলার বাইরে থাকা ভাইস চেয়ারম্যান দুলাল সরকার জানিয়ে দিয়েছেন, "পৌরদপ্তর তদন্তকারী দল জেলায় না পাঠানো পর্যন্ত চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রত্যাহারের কোনও প্রশ্নই ওঠে না । আমরা এব্যাপারে এখনও একজোট আছি । আমরা কেউ দলের বিরুদ্ধে নই । তবে চেয়ারম্যানের কাজকর্মে আমাদের প্রশ্ন রয়েছে ।"