মালদা, 2 জুলাই : কোরোনা আবহেই জমে উঠেছে তৃণমূলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব ৷ইংরেজবাজার পৌরসভার বর্তমান প্রশাসক নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অভিযোগ এনেআজ দুপুর থেকে পৌরসভা চত্বরে অবস্থান বিক্ষোভ শুরু করেছেন শাসক দলেরই 15 জন বিদায়ি কাউন্সিলর ৷ গোটা বিষয়টিকেদলবিরোধী বলে মন্তব্য করেছেন প্রশাসক ৷ এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছে জেলা তৃণমূলনেতৃত্ব ৷
পৌরসভার প্রশাসক নীহাররঞ্জন ঘোষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ এনে আজজেলাশাসকের কাছে নালিশ জানান 15জন বিদায়ি কাউন্সিলর ৷ তাঁদের নেতৃত্বে ছিলেন প্রাক্তন চেয়ারম্যানও 22 নম্বর ওয়ার্ডের বিদায়ি কাউন্সিলর নরেন্দ্রনাথ তিওয়ারি ৷ এরপর তাঁরাসবাই পৌরসভা চত্বরে গিয়ে অবস্থান বিক্ষোভে বসেন ৷
নরেন্দ্রনাথবাবু বলেন, "আজ আমরা পৌরসভার 15 জন তৃণমূল কাউন্সিলর প্রশাসকেরবিরুদ্ধে ধরনায় বসেছি ৷ কারণ,পৌরসভার প্রশাসক অপদার্থ ৷ তিনি নিজের কাজ চালাতে ব্যর্থ হয়েছেন ৷এখন চারদিকে কোরোনা আতঙ্ক মানুষকে তাড়া করে বেড়াচ্ছে ৷ অথচ এই পরিস্থিতিতেওনাগরিকরা পৌর পরিষেবা পাচ্ছেন না ৷ রাস্তাঘাট বেহাল । পানীয় জলের পরিষেবাও ঠিকমতোদেওয়া হচ্ছে না ৷ প্রশাসক এসবের ব্যবস্থা না করে পৌরসভায় এসে চেয়ারে বসে থাকছেন ৷আমরা আজ এনিয়ে জেলাশাসকের কাছে অভিযোগ জানিয়েছি ৷ পৌরসভায় অভিযোগ জানাতে এসে কাউকেপাইনি ৷ এই প্রশাসক শুধু নিজের পেট ভরাতে চেয়ার আঁকড়ে বসে রয়েছেন ৷ মানুষের জন্যতাঁর কোনও চিন্তাভাবনা নেই ৷ প্রশাসক আমাদের হাতে চিঠি ধরিয়ে জানিয়ে দিয়েছেন, আমাদের আর কোনও ক্ষমতা নেই ৷ আমরা এইপ্রশাসকের অপসারণ দাবি করছি ৷ এই অপদার্থ প্রশাসকের কোনও প্রয়োজন নেই ৷ আমরা গোটাবিষয়টি দলের উপরতলাতেও জানিয়েছি ৷"
বিক্ষোভে অংশ নেওয়া বিদায়ী কাউন্সিলর কাকলি চৌধুরি বলেন, "আমরা নিজেদের জন্যআজ এখানে আসিনি ৷ কোরোনা আবহে মানুষ এখন ব্যতিব্যস্ত হয়ে রয়েছে ৷ যুব সমাজের কোনওকাজ নেই ৷ মানুষ নিজের খাবার জোগাড় করতে পারছে না ৷ এই পরিস্থিতিতে পৌরসভারপ্রশাসক মানুষকে ন্যূনতম পরিষেবা দিতে ব্যর্থ হয়েছেন ৷ এখন নির্বাচন বন্ধ রয়েছে ৷আমরা এখন কাউন্সিলর নই ৷ কিন্তু মানুষ নিজেদের সমস্যায় আমাদের কাছেই আসছে ৷ আমরাপ্রশাসককে বারবার সমস্যা সমাধানের ব্যবস্থা করতে বললেও তিনি কোনও ব্যবস্থা নিচ্ছেননা ৷ আমাদের সঙ্গে বিমাতৃসুলভ আচরণ করা হচ্ছে ৷ তাই আমরা প্রশাসকের অপসারণ দাবিকরছি ৷
এদিকে এই ঘটনা নিয়ে নীহারবাবুকে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, "আজ কারা এসব করছেনআমার জানা নেই ৷ এখনও পর্যন্ত কেউ আমার কাছে কোনও দাবিদাওয়া নিয়ে আসেননি ৷ তাঁরাপৌরসভার গেটে চিৎকার করছেন । স্লোগান দিচ্ছেন ৷ যদি আমাদের দলের কাউন্সিলররা এসবকরে থাকেন, তবে আমি বলব,তাঁরা দলবিরোধী কাজ করছেন ৷ প্রশাসক হিসাবে আমার বয়স 25 দিন হল ৷ হঠাৎ এমন কী হল যে তাঁদেরএখন মনে হল, শহরের নোংরা সাফাই হচ্ছে না ৷ এসব ঠিক নয় ৷ দল ও পৌরসভাকে কলঙ্কিতকরার জন্যই তাঁরা এসব করছেন ৷ আমি তাঁদের ধিক্কার জানাচ্ছি ৷ আমি দলকে গোটা বিষয়টিজানাব ৷”