ETV Bharat / city

অনিশ্চিত হালখাতা, ক্ষতির কথা ভেবেই মন খারাপ সকলের - কোরোনার কোপে পয়লা বৈশাখ

কুমোর পাড়া গণেশের ছাঁচ নিয়ে তৈরি । কিন্তু অর্ডার নেই । অর্ডার পাননি মিষ্টির দোকানদাররাও । ব্য়বসায়ীরা বলছেন, কোনওরকমে পুজোটা দিতে পারলেই নিশ্চিন্ত ।

Corona effect on Poila Baisakh
পয়লা বৈশাখ
author img

By

Published : Apr 3, 2020, 7:38 PM IST

মালদা, 03 এপ্রিল: এগিয়ে আসছে পয়লা বৈশাখ ৷ বাঙালির বর্ষবরণের দিন ৷ বাংলা বছরের প্রথম দিন মানেই দোকানে দোকানে গণেশপুজো, হালখাতা ৷ বিকেল হতে না হতেই রাস্তায় নেমে পড়েন সবাই । চলে খাওয়াদাওয়া। মিষ্টির প্যাকেট আর নতুন ক্যালেন্ডার নিয়ে বাড়ি ফেরা ৷ সময় কিছুটা বদলালেও এই ছবির পরিবর্তন আজও ততটা হয়নি ৷ কিন্তু, কোরোনার প্রভাবে এবার দেখা যাবে সেই ছবি । তাতেই মন খারাপ মালদার বাসিন্দাদের ।

মালদার কুমোর পাড়ায় গণেশের ছাঁচ তৈরির কাজ চলছে অন্যবারের মতোই । তবু, লকডাউনের মধ্যে পয়লা বৈশাখে এবার কতটা ব্যবসা হবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না মৃৎশিল্পীরা ৷ এদিকে অধিকাংশ ব্যবসায়ী, যাঁরা এই শিল্পীদের কাছ থেকে গণেশের মূর্তি কেনেন, তাঁরাও সন্দিহান, কোরোনার বাজারে পয়লা বৈশাখের পুজো, অনুষ্ঠান, খাওয়াদাওয়া কতটুকু হবে এবার । অনেকেরই বক্তব্য, এবার আর হালখাতার অনুষ্ঠান করা যাবে না ৷ কোনওরকমে পুজোটা দিতে পারলেই নিশ্চিন্ত ৷ এই অবস্থা আন্দাজ করেই চিন্তিত প্রতিমা শিল্পীরাও ।

Corona effect on Poila Baisakh
যদিও লকডাউন তবুও চলছে গণেশ মূর্তির কাজ।

মালদা শহরের মৃৎশিল্পী সজল পণ্ডিত, কাঞ্চনটারের মৃৎশিল্পী কৃষ্ণ দাস ৷ দু’জনেই চিন্তায় ৷ সজলবাবু বলেন, “প্রতি বছর পয়লা বৈশাখে প্রায় এক লাখ টাকার ব্যবসা হয় ৷ এবারও প্রায় 800টি গণেশের ছাঁচ বানিয়েছি ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি ছাঁচেরও অর্ডার পাইনি ৷ সরকারি নির্দেশে মিষ্টির দোকান খুলেছে বটে, কিন্তু, পয়লা বৈশাখ পড়ছে 14 এপ্রিল ৷ অর্থাৎ লকডাউনের মধ্যেই ৷ এবার যে ব্যবসা পুরোপুরি মার খাবে, তা বুঝতে বাকি নেই ৷ কতটা বাজার ওঠে দেখা যাক ৷”

প্রায় একইরকম বক্তব্য কাঞ্চনটার গ্রামের মৃৎশিল্পী কৃষ্ণ দাসেরও ৷ তিনি বলেন, “এবার এক হাজার গণেশের ছাঁচ বানিয়েছি ৷ রঙের কাজেও হাত দিয়েছি ৷ কিন্তু লকডাউনের জেরে এখন বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ৷ পয়লা বৈশাখে সব দোকানে পুজো হবে কি না তাও বুঝতে পারছি না ৷ তবে এটা বুঝতে পারছি, এবার ব্যবসা লাটে উঠবে ৷" এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানান মালদার কাঞ্চনটারের মৃৎশিল্পী ।

মিষ্টি ব্যবসায়ীরাও লকডাউনের বাজারে বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ৷ এক মিষ্টি বিক্রেতা গণেশ কুণ্ডু বলেন, “অন্য বছর এই সময় বিভিন্ন দোকান থেকে অর্ডার চলে আসে ৷ এবার একজন ব্যবসায়ীও অর্ডার দেয়নি ৷ এদিকে হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন ৷ আদৌ অর্ডার পাব কি না জানি না ৷ আসলে এই মুহূর্তে সব রকম কারবার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একদিকে যেমন ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন, তেমনই সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষও ৷ বেঁচে থাকার তাগিদটাই বেশি ৷ তাই এবার আর পয়লা বৈশাখ নিয়ে কারও কোনও উৎসাহ নেই ৷”

Corona effect on Poila Baisakh
লকডাউনে বন্ধ মালদা শহরের সোনার দোকানগুলি।

শহরের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বীরেন কর্মকার বলেন, “10 দিনের বেশি সময় ধরে ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ ৷ মানুষ এখন আতঙ্কে রয়েছে ৷ কবে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কেউ জানে না ৷ এবার পয়লা বৈশাখেও লকডাউন ৷ প্রশাসন দোকানে পুজো করার অনুমতি দেবে কি না তাও জানা নেই ৷ ফলে পুজো করার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি ৷”

মন খারাপ হলেও বাস্তব বুঝছেন সবাই । ঢোক গিলে বীরেনবাবুও বলেন, ”এবার যে হালখাতার অনুষ্ঠান কোনওভাবেই করা যাবে না, তা এখনই বলে দেওয়া যায় ৷”

মালদা, 03 এপ্রিল: এগিয়ে আসছে পয়লা বৈশাখ ৷ বাঙালির বর্ষবরণের দিন ৷ বাংলা বছরের প্রথম দিন মানেই দোকানে দোকানে গণেশপুজো, হালখাতা ৷ বিকেল হতে না হতেই রাস্তায় নেমে পড়েন সবাই । চলে খাওয়াদাওয়া। মিষ্টির প্যাকেট আর নতুন ক্যালেন্ডার নিয়ে বাড়ি ফেরা ৷ সময় কিছুটা বদলালেও এই ছবির পরিবর্তন আজও ততটা হয়নি ৷ কিন্তু, কোরোনার প্রভাবে এবার দেখা যাবে সেই ছবি । তাতেই মন খারাপ মালদার বাসিন্দাদের ।

মালদার কুমোর পাড়ায় গণেশের ছাঁচ তৈরির কাজ চলছে অন্যবারের মতোই । তবু, লকডাউনের মধ্যে পয়লা বৈশাখে এবার কতটা ব্যবসা হবে তা বুঝে উঠতে পারছেন না মৃৎশিল্পীরা ৷ এদিকে অধিকাংশ ব্যবসায়ী, যাঁরা এই শিল্পীদের কাছ থেকে গণেশের মূর্তি কেনেন, তাঁরাও সন্দিহান, কোরোনার বাজারে পয়লা বৈশাখের পুজো, অনুষ্ঠান, খাওয়াদাওয়া কতটুকু হবে এবার । অনেকেরই বক্তব্য, এবার আর হালখাতার অনুষ্ঠান করা যাবে না ৷ কোনওরকমে পুজোটা দিতে পারলেই নিশ্চিন্ত ৷ এই অবস্থা আন্দাজ করেই চিন্তিত প্রতিমা শিল্পীরাও ।

Corona effect on Poila Baisakh
যদিও লকডাউন তবুও চলছে গণেশ মূর্তির কাজ।

মালদা শহরের মৃৎশিল্পী সজল পণ্ডিত, কাঞ্চনটারের মৃৎশিল্পী কৃষ্ণ দাস ৷ দু’জনেই চিন্তায় ৷ সজলবাবু বলেন, “প্রতি বছর পয়লা বৈশাখে প্রায় এক লাখ টাকার ব্যবসা হয় ৷ এবারও প্রায় 800টি গণেশের ছাঁচ বানিয়েছি ৷ কিন্তু এখনও পর্যন্ত একটি ছাঁচেরও অর্ডার পাইনি ৷ সরকারি নির্দেশে মিষ্টির দোকান খুলেছে বটে, কিন্তু, পয়লা বৈশাখ পড়ছে 14 এপ্রিল ৷ অর্থাৎ লকডাউনের মধ্যেই ৷ এবার যে ব্যবসা পুরোপুরি মার খাবে, তা বুঝতে বাকি নেই ৷ কতটা বাজার ওঠে দেখা যাক ৷”

প্রায় একইরকম বক্তব্য কাঞ্চনটার গ্রামের মৃৎশিল্পী কৃষ্ণ দাসেরও ৷ তিনি বলেন, “এবার এক হাজার গণেশের ছাঁচ বানিয়েছি ৷ রঙের কাজেও হাত দিয়েছি ৷ কিন্তু লকডাউনের জেরে এখন বেশিরভাগ দোকান বন্ধ ৷ পয়লা বৈশাখে সব দোকানে পুজো হবে কি না তাও বুঝতে পারছি না ৷ তবে এটা বুঝতে পারছি, এবার ব্যবসা লাটে উঠবে ৷" এই পরিস্থিতিতে সরকারের কাছে আর্থিক সাহায্যের দাবি জানান মালদার কাঞ্চনটারের মৃৎশিল্পী ।

মিষ্টি ব্যবসায়ীরাও লকডাউনের বাজারে বিরাট ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ৷ এক মিষ্টি বিক্রেতা গণেশ কুণ্ডু বলেন, “অন্য বছর এই সময় বিভিন্ন দোকান থেকে অর্ডার চলে আসে ৷ এবার একজন ব্যবসায়ীও অর্ডার দেয়নি ৷ এদিকে হাতে আর মাত্র কয়েকটা দিন ৷ আদৌ অর্ডার পাব কি না জানি না ৷ আসলে এই মুহূর্তে সব রকম কারবার বন্ধ হয়ে যাওয়ায় একদিকে যেমন ব্যবসায়ীরা সমস্যায় পড়েছেন, তেমনই সমস্যায় পড়েছেন সাধারণ মানুষও ৷ বেঁচে থাকার তাগিদটাই বেশি ৷ তাই এবার আর পয়লা বৈশাখ নিয়ে কারও কোনও উৎসাহ নেই ৷”

Corona effect on Poila Baisakh
লকডাউনে বন্ধ মালদা শহরের সোনার দোকানগুলি।

শহরের এক স্বর্ণ ব্যবসায়ী বীরেন কর্মকার বলেন, “10 দিনের বেশি সময় ধরে ব্যবসা পুরোপুরি বন্ধ ৷ মানুষ এখন আতঙ্কে রয়েছে ৷ কবে এই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে কেউ জানে না ৷ এবার পয়লা বৈশাখেও লকডাউন ৷ প্রশাসন দোকানে পুজো করার অনুমতি দেবে কি না তাও জানা নেই ৷ ফলে পুজো করার বিষয়ে এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নিতে পারিনি ৷”

মন খারাপ হলেও বাস্তব বুঝছেন সবাই । ঢোক গিলে বীরেনবাবুও বলেন, ”এবার যে হালখাতার অনুষ্ঠান কোনওভাবেই করা যাবে না, তা এখনই বলে দেওয়া যায় ৷”

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.