মালদা, 13 মার্চ : আমবাগান থেকে এক মহিলার ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার ইসলামপুর গ্রামে । হরিশচন্দ্রপুর ব্লকের মহেন্দ্রপুর গ্রাম পঞ্চায়েতে এই ঘটনায় মৃত মহিলার শওহরকে আটক করেছে পুলিশ৷ মৃতার বাবার বাড়ির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে, খুন করার পর ওই মহিলার মৃতদেহ আমগাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ যদিও সেই অভিযোগ অস্বীকার করেছে শ্বশুরবাড়ির লোকজন৷ পুলিশ মৃতদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেল কলেজ ও হাসপাতালে পাঠিয়েছে৷
মৃত মহিলার নাম রেশমা খাতুন (29) ৷ তাঁর বাবার বাড়ি হরিশচন্দ্রপুরের ভবানীপুর গ্রামে৷ তিনি বিশেষ চাহিদা সম্পন্ন৷ তাঁর ডান পায়ে সমস্যা ছিল ৷ বছর দেড়েক আগে তাঁর নিকাহ হয় ইসলামপুর গ্রামের ওসমান আলির সঙ্গে ৷ ওসমান পেশায় শ্রমিক ৷ তাঁরও একটি চোখ ক্ষতিগ্রস্ত ৷ আজ সকালে এলাকার লোকজন বাড়ি থেকে কিছুটা দূরে একটি আমবাগানে রেশমার ঝুলন্ত দেহ দেখতে পায়৷ খবর পেয়ে ঘটনাস্থানে গিয়ে দেহটি উদ্ধার করে পুলিশ ৷ রেশমার আম্মা নুরগেশ বেওয়া অভিযোগ, “আমার মেয়েকে জামাই আর তার বাড়ির লোকজন মেরে ফেলেছে ৷ গত শনিবার মেয়ে আমার সঙ্গে আমাদের বাড়ি যেতে চেয়েছিল৷ ওরা মেয়েকে যেতে দেয়নি ৷ জামাইকে 10 কাঠা জমি দেওয়ার কথা ছিল আমাদের৷ আমরা বলেছিলাম, ওই জমি পরে ওর নামে লিখে দেব৷ কিন্তু জামাই তাতে রাজি হয়নি৷ সে সাফ জানিয়ে দেয়, তার নামে এখনই ওই 10 কাঠা জমি লিখে দিতে হবে৷ সে লোকজন নিয়ে আমাদের বাড়ি আসবে বলে হুমকিও দেয়৷ তার মধ্যেই এই ঘটনা ঘটে গেল৷”
একই বক্তব্য রেশমার ভাই রাশেদ শেখেরও ৷ তিনি বলেন, “গতকাল রাত পৌনে তিনটে নাগাদ জামাইবাবু আমাকে ফোন করে৷ সঙ্গে সঙ্গে আম্মাকে সাইকেলে বসিয়ে আমি ভবানীপুর গ্রাম থেকে এখানে ছুটে আসি৷ আমিও দিদিকে খুঁজতে শুরু করি৷ আজ সকালে গোলা মোড় থেকে ফেরার সময় হঠাৎ দেখি, একটি ছেলে ও একটি মেয়ে মাঠ দিয়ে পালিয়ে গেল৷ সেখানে আমি দাঁড়িয়ে যাই ৷ এক মহিলাকে এই নিয়ে প্রশ্ন করি ৷ তিনি বলেন, এখানে আমগাছে একটি দেহ ঝুলছে ৷ গিয়ে দেখি, আমার বোনের দেহ গাছ থেকে ঝুলছে ৷ আমাদের ধারণা, বোনকে খুন করে গাছে ঝুলিয়ে দেওয়া হয়েছে৷”
যদিও রেশমার বাবার বাড়ির অভিযোগ অস্বীকার করেছে শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা ৷ তাঁদের একজন রুস্তম আলি বলেন, “ওসমান ও রেশমার সম্পর্কে আমার কাকা-কাকিমা৷ তাঁদের দু’জনের মধ্যে কেউ কোনওদিন ঝামেলার খবর শোনেনি৷ কিন্তু কেন এমন ঘটনা ঘটল, তা কেউ বুঝতে পারছি না৷ কাকিমার মৃত্যু নিয়ে যা রটছে তা সঠিক নয়৷”হরিশচন্দ্রপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, গোটা ঘটনা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে ৷ আপাতত মৃতার শওহর ওসমান আলিকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আটক করা হয়েছে ৷ তবে এখনও পর্যন্ত এই ঘটনায় কোনও লিখিত অভিযোগ দায়ের হয়নি বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ অভিযোগ দায়ের হলে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে ৷ মৃতদেহ ময়নাতদন্তের জন্য মালদা মেডিকেলে পাঠানো হয়েছে ৷ তার রিপোর্ট পাওয়া গেলেই মৃত্যুর প্রকৃত কারণ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া যাবে ৷