কলকাতা, 13 জুলাই : লোকসভা ভোটে দলের শোচনীয় ফলের দায় স্বীকার করে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন সোমেন মিত্র । তবে, সেই পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি AICC । তিনি এখনও দিল্লিতে। সূত্রের খবর, চিকিৎসার কারণে রাজধানীতে তিনি। এরই মাঝে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হিসেবে নাম উঠে আসছে অনেকেরই । এগিয়ে রয়েছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য । এছাড়াও আবদুল মান্নান, অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ের নামও উঠে আসছে ।
গত বছর সেপ্টেম্বরে অধীররঞ্জন চৌধুরিকে সরিয়ে আচমকাই বাংলায় কংগ্রেসের মুখ করা হয়েছিল সোমেনকে । প্রদীপ ভট্টাচার্য, দীপা দাশমুন্সিদের মতো হেভিওয়েটরা থাকলেও সে সময় রাহুল ব্রিগেড ভরসা রেখেছিল সোমেনের উপরই । লোকসভা ভোটে দেশজুড়ে কংগ্রেসের ভরাডুবির পর সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন রাহুল গান্ধি (যদিও সেই ইস্তফাপত্র গ্রহণ নিয়ে এখনও টালবাহানা চলছে) । রাহুলের পথে হেঁটে জ্যোতিরাদিত্য সিন্ধিয়া, মিলিন্দ দেওরার মতো অনেকেই পদ ছেড়েছেন ।
সূত্রের খবর, দিল্লি থেকেই প্রত্যেকটি রাজ্যের সভাপতিকে পদত্যাগ করার জন্য ইঙ্গিত দেওয়া হয়েছিল । সরাসরি হুইপ জারি করা হয়নি। AICC-র সভাপতি বদল হচ্ছে। সেই কারণে প্রোটোকল মেনে নতুন রাজ্য সভাপতির নাম ঘোষণা করবে AICC। যদিও সোমেন মিত্র জানিয়েছেন, নির্বাচনে ভরাডুবির দায় তাঁদের। সেই দায় নিয়েই তিনি পদত্যাগ করতে চান।
প্রদেশ কংগ্রেস সূত্রের খবর, সভাপতি হওয়ার দৌড়ে এগিয়ে রয়েছেন প্রদীপ ভট্টাচার্য, আবদুল মান্নান এবং অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়। তবে অনগ্রসর সম্প্রদায়ের নেপাল মাহাতকেও করা হতে পারে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি।
যদিও কংগ্রেসের অন্য একটি সূত্র বলছে, পরবর্তী বিধানসভা নির্বাচন পর্যন্ত সোমেন মিত্রই থাকবেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি। সোমেন মিত্র ইচ্ছার বিরুদ্ধে পদত্যাগ করেছেন বলে জানিয়েছে সেই সূত্র। যেহেতু নতুন AICC সভাপতি নির্বাচিত হওয়ার পর প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতিদের নাম ঘোষণা করা হয় নতুন ভাবে, তাই প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি হতে অনেকেই চাইছেন।
প্রদীপ ভট্টাচার্য ইতিমধ্যে AICC-র শীর্ষ নেতৃত্বের সঙ্গে বৈঠক করেছেন বলে সূত্রের খবর। অভিজিৎ মুখোপাধ্যায়ও সোনিয়া গান্ধির সঙ্গে বৈঠক করেছেন। বিধানসভার বিরোধী দলনেতা আবদুল মান্নানও কথা বলেছেন AICC-র দিল্লির নেতৃত্বের সঙ্গে।
প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্রকে আপাতত এ রাজ্যের দায়িত্ব সামলাতে বলা হয়েছে। যদিও পশ্চিমবঙ্গের কংগ্রেস সংগঠন যথেষ্ট দুর্বল। সেই বিষয়টিও নজরে রয়েছে AICC-র। সোমেন মিত্র শারীরিকভাবে অসুস্থ। একটানা দীর্ঘক্ষণ বক্তব্য রাখতে পারেন না, কারণ হৃদযন্ত্রের সমস্যা রয়েছে। রয়েছে স্নায়ুর সমস্যাও। এই অবস্থায় তিনি প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতির পদে কতটা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে পারবেন তাও খতিয়ে দেখছে AICC।
অন্যদিকে কংগ্রেসের গোষ্ঠীদ্বন্দ্বের বিষয়টি নজরে রেখেছে শীর্ষ নেতৃত্ব। সব মিলিয়ে টালমাটাল কংগ্রেস সভাপতির আসনটিও। আর কয়েক দিনের মধ্যেই চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে চলেছে AICC ।