কলকাতা, 10 ডিসেম্বর : রাজ্যের অন্য (কলকাতা বাদে) পৌরসভা এবং পৌরনিগমগুলির নির্বাচনের (Municipal Election Schedule) নির্ঘণ্ট এখনই নির্দিষ্টভাবে জানানো সম্ভব নয় ৷ তবে এই সম্পর্কে তাদের কী কী পরিকল্পনা রয়েছে, এবং কবে নাগাদ নির্বাচন করানো যেতে পারে, তা অবশ্যই আদালতকে (Calcutta High Court) জানানো হবে ৷ শুক্রবার কলকাতা হাইকোর্টে একথা জানিয়েছে রাজ্য সরকার (West Bengal Government on Municipal Election Schedule) ৷ রাজ্যের বকেয়া পৌর নির্বাচনগুলি অবিলম্বে করানোর দাবিতে কলকাতা হাইকোর্টে একটি জনস্বার্থ মামলা রুজু করা হয়েছে ৷ এদিন ছিল সেই মামলার শুনানি ৷ সংশ্লিষ্ট সব পক্ষের বক্তব্য শোনার পর রায়দান স্থগিত রেখেছে প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব ও বিচারপতি রাজর্ষি ভরদ্বাজের ডিভিশন বেঞ্চ ৷
আরও পড়ুন : KMC Election 2021 : পেশীশক্তি নয়, উন্নয়নের তাসেই কলকাতা পৌরনিগম ভোটে জয়ের বার্তা অভিষেকের
এদিনের মামলার শুনানিতে বিজেপি নেতা প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (অন্যতম মামলাকারী) আইনজীবী পিঙ্কি আনন্দ বলেন, ‘‘গত 1 ডিসেম্বর কলকাতা হাইকোর্ট একটি নির্দেশ দেয় ৷ তাতে বলা হয়, কলকাতা পৌরনিগম ছাড়াও রাজ্যের অন্য পৌরসভা ও পৌরনিগমগুলির ভোটের দিনক্ষণ প্রকাশ্যে আনতে হবে ৷ কিন্তু রাজ্য সরকার বা নির্বাচন কমিশন, কেউই সেই কাজ করতে পারেনি ৷ তাছাড়া, মামলাকারীদের আবেদন ছিল, রাজ্যের সবক’টি পৌরসভা ও পৌরনিগমের ভোটগণনা একদিনে করতে হবে ৷ কিন্তু, বর্তমান পরিস্থিতিতে সেটা সম্ভব নয় ৷ এই অবস্থায় কলকাতায় পৌর নির্বাচন স্থগিত রাখা হোক ৷’’
এর পাল্টা রাজ্য নির্বাচন কমিশনের তরফে আইনজীবী জয়ন্ত মিত্র বলেন, ‘‘রাজ্য নির্বাচন কমিশন রাজ্যের দেওয়া প্রস্তাব অনুযায়ী ছয় থেকে আট দফায় ভোট করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে ৷ সামনেই মাধ্যমিক, উচ্চমাধ্যমিক-সহ বিভিন্ন বোর্ডের পরীক্ষা রয়েছে ৷ পরিস্থিতির সাপেক্ষেই ভোটের নির্ঘণ্ট স্থির করতে হবে ৷’’ বিজেপির আইনজীবীর উদ্দেশ্যে তাঁর কটাক্ষ, ‘‘বিজেপি একদিকে সবক’টি বকেয়া পৌরভোট সেরে ফেলার দাবি তুলছে, আবার তারাই কলকাতায় পৌর নির্বাচন স্থগিত রাখতে বলছে ৷ এই ধরনের হাস্যকর বক্তব্য কখনই গ্রহণযোগ্য হতে পারে না ৷’’
আরও পড়ুন : KMC Election 2021 : কলকাতা পৌর নির্বাচনে অন্তত 135টি আসন পাবে তৃণমূল, দাবি মালার
অন্যদিকে, রাজ্যের তরফে অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায়ের বক্তব্য ছিল, ‘‘মামলাকারীর আইনজীবী প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায় ভারতীয় জনতা পার্টির সহকারী সম্পাদক ৷ তিনি একই ইস্যুতে সুপ্রিম কোর্টেও একটি মামলা করেছেন ৷ তাই আদালতের কি এই ধরনের মামলা গ্রহণ করা উচিত ?’’ আর এক মামলাকারী মৌসুমী রায়ের আইনজীবী সব্যসাচী চট্টোপাধ্যায় বলেন, ‘‘2018 সাল থেকে রাজ্যের একাধিক পৌরসভায় নির্বাচন করা হচ্ছে না ৷ সেই সমস্ত পৌরসভায় প্রশাসক হিসেবে যাঁদের বসানো হয়েছে তাঁরা কারা ? তাঁরা প্রত্যেকেই শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের সদস্য ৷ তাঁদের সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য আদালতকে জানানো হোক ৷’’ সবপক্ষের বক্তব্যের শেষে প্রধান বিচারপতির ডিভিশন বেঞ্চ রায়দান স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত নেয় ৷