ETV Bharat / city

Rhino Conservation Act 1932: গন্ডার সংরক্ষণে 1932 সালের আইন বাতিল করল রাজ্য বিধানসভা - বেঙ্গল রাইনো কনজারভেশন অ্যাক্ট

গন্ডার সংরক্ষণে 1932 সালের আইন বাতিল করল রাজ্য বিধানসভা (West Bengal assembly)৷ ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে বাতিল হয়ে গেল 1932 সালের বেঙ্গল রাইনো কনজারভেশন অ্যাক্ট (Rhino Conservation Act 1932)।

state-legislature-repealed-the-1932-rhino-conservation-act
গন্ডার সংরক্ষণে 1932 সালের আইন বাতিল করল রাজ্য বিধানসভা
author img

By

Published : Sep 15, 2022, 7:35 PM IST

Updated : Sep 15, 2022, 8:00 PM IST

কলকাতা, 15 সেপ্টেম্বর: বাতিল হয়ে গেল 1932 সালের বেঙ্গল রাইনো কনজারভেশন অ্যাক্ট (Rhino Conservation Act 1932)। বৃহস্পতিবার ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে রাজ্য বিধানসভায় (West Bengal assembly) বাতিল হয়ে গেল এই ব্রিটিশ আমলের আইন । তার বদলে এখন থেকে গন্ডার সংরক্ষণে ব্যবহৃত হবে ইন্দিরা গান্ধির আমলে তৈরি বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন, 1972 (Bengal Rhino Conservation Act 1932 repealed)।

1932 সালের আইনে গন্ডার মারলে শাস্তির বিধান থাকলেও হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে সেই শাস্তি এড়িয়ে যেতে পারত সাধারণ মানুষ । 1972 সালের আইন অনুযায়ী যে কোনও বন্যপ্রাণের হত্যা জামিন অযোগ্য অপরাধ । যাতে গন্ডার শিকারের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীরা কঠোর শাস্তি পান । নতুন আইনে কোনও ভাবেই অপরাধীদের জামিন পাওয়ার সংস্থান থাকবে না । বাঘ শিকার আটকাতেও একটি কঠোর আইন গ্রহণের ভাবনা-চিন্তা করা হয়েছে বলে বনমন্ত্রী জানিয়েছেন ।

এ দিন এই আইন বাতিলের আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বিজেপি বিধায়ক মনোজ, যেভাবে উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে তার বিরোধিতা করেন । তিনি বলেন, বন্যপ্রাণ রক্ষায় সরকারি নীতির ক্ষেত্রে গলতি রয়েছে । তিনি এও বলেন, চোরা শিকারিদের রুখতে সরকারের তরফ থেকে যে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন তা নেওয়া হচ্ছে না ।

আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, কোচবিহারের রাজার আবেদনের ভিত্তিতে 1932 সালে গন্ডার সংরক্ষণ আইন চালু হয় । কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গন্ডার সংরক্ষণের জন্য কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে ? কেন এতদিন পরে এই বিল অপ্রয়জনীয় মনে হচ্ছে ? তিনি
উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে কাঠ চুরি ও চোরাচালান বৃদ্ধি নিয়ে সরব হন । উলটোদিকে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নাম ধরে ধরে বিধায়কের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ।

বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা এই বিলের সমালোচনা করে বলেন, আজ পশুদের জন্য ওয়েটল্যান্ড ও জলস্তরের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে । নইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর এর প্রভাব পড়বে । তিনি আরও বলেন, গন্ডার রক্ষায় এই সরকার কাজ করছে না । রাজ্যে গন্ডারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ আপাতত আমাদের রাজ্যে 347টি গন্ডার রয়েছে । কিন্তু চোরা শিকারীদের হাত থেকে গন্ডারকে রক্ষা করতে এই সরকার ব্যর্থ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি । জবাবে মন্ত্রী বলেন, "চোরাশিকারীদের হাত থেকে গন্ডারের খড়্গ উদ্ধার করে মণিপুর থেকে দোষীকে ধরে নিয়ে এসেছি আমরা । তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও ব্যবস্থা হচ্ছে ।"

আরও পড়ুন: গরুমারা জাতীয় উদ্যান ও চাপড়ামারি অভয়ারণ্যে গন্ডার গণনা

বিরোধীদের হাতি নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, "যতই সতর্কতা নেওয়া হোক না কেন, নেপাল থেকে হাতি চলে আসে । আমরা চেষ্টা করছি এদের চলাচলের পথকে সনাক্ত করে একটি গ্রিন জোন তৈরি করতে । হাতিদের জন্য একটা বিশেষ অ্যাপ তৈরি করছে বনদফতর । এটা তৈরি হয়ে গেলে ট্রেনে হাতি কাটা পড়ার সংখ্যাও কমবে ।"

তিনি আরও বলেন, "রাজ্যের বিভিন্ন জঙ্গলে বন্যপ্রাণির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে । তবে এদের দেখাশোনা করার জন্য যে সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন তা এখন আমাদের হাতে নেই ।" তবে তিনি জানিয়েছেন "খুব শীঘ্রই বনদফতরের বিভিন্ন পদে নিয়োগ হবে । আশা করছি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে ।" এ দিন হাতির তাণ্ডবে মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা । তাঁর জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণীদের আক্রমণে মৃত্যু হলে রাজ্যের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় । আগের তুলনায় এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে ।

এ দিন জঙ্গল পরিদর্শনে যাওয়া পর্যটকদের জন্য বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী । বলেছেন, যাঁরা জঙ্গল ভ্রমণের জন্য যান তাঁদের মনে রাখতে হবে বন্য জীবনকে কোনওভাবেই যেন ডিস্টার্ব করা না হয় । বনের নিয়ম মেনে চলুন পর্যটকেরা । জঙ্গলের ভিতর কোনওভাবেই আগুন জালানো চলবে না । এ দিন জঙ্গল কাটা নিয়েও কড়া বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী । একইসঙ্গে তিনি জানান, পাথর বালি তুলে বা জঙ্গল কেটে জঙ্গলের জীবন বিঘ্নিত করা চলবে না আর এমনটি হলে করা ব্যবস্থা নেবে সরকার ।

কলকাতা, 15 সেপ্টেম্বর: বাতিল হয়ে গেল 1932 সালের বেঙ্গল রাইনো কনজারভেশন অ্যাক্ট (Rhino Conservation Act 1932)। বৃহস্পতিবার ধ্বনি ভোটের মাধ্যমে রাজ্য বিধানসভায় (West Bengal assembly) বাতিল হয়ে গেল এই ব্রিটিশ আমলের আইন । তার বদলে এখন থেকে গন্ডার সংরক্ষণে ব্যবহৃত হবে ইন্দিরা গান্ধির আমলে তৈরি বন্যপ্রাণ সংরক্ষণ আইন, 1972 (Bengal Rhino Conservation Act 1932 repealed)।

1932 সালের আইনে গন্ডার মারলে শাস্তির বিধান থাকলেও হাজার টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়ে সেই শাস্তি এড়িয়ে যেতে পারত সাধারণ মানুষ । 1972 সালের আইন অনুযায়ী যে কোনও বন্যপ্রাণের হত্যা জামিন অযোগ্য অপরাধ । যাতে গন্ডার শিকারের সঙ্গে যুক্ত অপরাধীরা কঠোর শাস্তি পান । নতুন আইনে কোনও ভাবেই অপরাধীদের জামিন পাওয়ার সংস্থান থাকবে না । বাঘ শিকার আটকাতেও একটি কঠোর আইন গ্রহণের ভাবনা-চিন্তা করা হয়েছে বলে বনমন্ত্রী জানিয়েছেন ।

এ দিন এই আইন বাতিলের আলোচনায় অংশগ্রহণ করে বিজেপি বিধায়ক মনোজ, যেভাবে উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে নির্বিচারে গাছ কাটা হচ্ছে তার বিরোধিতা করেন । তিনি বলেন, বন্যপ্রাণ রক্ষায় সরকারি নীতির ক্ষেত্রে গলতি রয়েছে । তিনি এও বলেন, চোরা শিকারিদের রুখতে সরকারের তরফ থেকে যে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রয়োজন তা নেওয়া হচ্ছে না ।

আলিপুরদুয়ারের বিজেপি বিধায়ক সুমন কাঞ্জিলাল বলেন, কোচবিহারের রাজার আবেদনের ভিত্তিতে 1932 সালে গন্ডার সংরক্ষণ আইন চালু হয় । কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গন্ডার সংরক্ষণের জন্য কী কী ব্যবস্থা নিয়েছে ? কেন এতদিন পরে এই বিল অপ্রয়জনীয় মনে হচ্ছে ? তিনি
উত্তরবঙ্গের বনাঞ্চলে কাঠ চুরি ও চোরাচালান বৃদ্ধি নিয়ে সরব হন । উলটোদিকে বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক নাম ধরে ধরে বিধায়কের প্রশ্নের জবাব দিয়েছেন ।

বিজেপি বিধায়ক বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা এই বিলের সমালোচনা করে বলেন, আজ পশুদের জন্য ওয়েটল্যান্ড ও জলস্তরের বিষয়টি খেয়াল রাখতে হবে । নইলে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উপর এর প্রভাব পড়বে । তিনি আরও বলেন, গন্ডার রক্ষায় এই সরকার কাজ করছে না । রাজ্যে গন্ডারের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে ৷ আপাতত আমাদের রাজ্যে 347টি গন্ডার রয়েছে । কিন্তু চোরা শিকারীদের হাত থেকে গন্ডারকে রক্ষা করতে এই সরকার ব্যর্থ বলে কটাক্ষ করেছেন তিনি । জবাবে মন্ত্রী বলেন, "চোরাশিকারীদের হাত থেকে গন্ডারের খড়্গ উদ্ধার করে মণিপুর থেকে দোষীকে ধরে নিয়ে এসেছি আমরা । তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিরও ব্যবস্থা হচ্ছে ।"

আরও পড়ুন: গরুমারা জাতীয় উদ্যান ও চাপড়ামারি অভয়ারণ্যে গন্ডার গণনা

বিরোধীদের হাতি নিয়ে করা প্রশ্নের জবাবে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, "যতই সতর্কতা নেওয়া হোক না কেন, নেপাল থেকে হাতি চলে আসে । আমরা চেষ্টা করছি এদের চলাচলের পথকে সনাক্ত করে একটি গ্রিন জোন তৈরি করতে । হাতিদের জন্য একটা বিশেষ অ্যাপ তৈরি করছে বনদফতর । এটা তৈরি হয়ে গেলে ট্রেনে হাতি কাটা পড়ার সংখ্যাও কমবে ।"

তিনি আরও বলেন, "রাজ্যের বিভিন্ন জঙ্গলে বন্যপ্রাণির সংখ্যা ক্রমেই বাড়ছে । তবে এদের দেখাশোনা করার জন্য যে সংখ্যক কর্মীর প্রয়োজন তা এখন আমাদের হাতে নেই ।" তবে তিনি জানিয়েছেন "খুব শীঘ্রই বনদফতরের বিভিন্ন পদে নিয়োগ হবে । আশা করছি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে ।" এ দিন হাতির তাণ্ডবে মৃত্যুতে ক্ষতিপূরণ নিয়ে অভিযোগ জানিয়েছিলেন বিজেপি বিধায়ক মনোজ টিগ্গা । তাঁর জবাব দিতে গিয়ে মন্ত্রী বলেন, বন্যপ্রাণীদের আক্রমণে মৃত্যু হলে রাজ্যের তরফ থেকে ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয় । আগের তুলনায় এই ক্ষতিপূরণের পরিমাণও বাড়ানো হয়েছে ।

এ দিন জঙ্গল পরিদর্শনে যাওয়া পর্যটকদের জন্য বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী । বলেছেন, যাঁরা জঙ্গল ভ্রমণের জন্য যান তাঁদের মনে রাখতে হবে বন্য জীবনকে কোনওভাবেই যেন ডিস্টার্ব করা না হয় । বনের নিয়ম মেনে চলুন পর্যটকেরা । জঙ্গলের ভিতর কোনওভাবেই আগুন জালানো চলবে না । এ দিন জঙ্গল কাটা নিয়েও কড়া বার্তা দিয়েছেন মন্ত্রী । একইসঙ্গে তিনি জানান, পাথর বালি তুলে বা জঙ্গল কেটে জঙ্গলের জীবন বিঘ্নিত করা চলবে না আর এমনটি হলে করা ব্যবস্থা নেবে সরকার ।

Last Updated : Sep 15, 2022, 8:00 PM IST
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.