কলকাতা, 11 জুলাই: নামকেওয়াস্তে আমন্ত্রণ ! শিয়ালদা মেট্রোর আমন্ত্রণ পত্রে (Sealdah Metro Inauguration) নাম নেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও মেয়র ফিরহাদ হাকিমের । আর সে কারণে কার্যত এই অনুষ্ঠান বয়কটই করছে তৃণমূল (TMC leaders to skip Sealdah Metro inauguration)।
এ দিন মেট্রো রেলের তরফ থেকে যে আমন্ত্রণপত্র প্রকাশ্যে এসেছে তাতে নাম নেই মুখ্যমন্ত্রী ও রাজ্যপালের (Mamata Banerjee not among invitees)। এমনকী নাম নেই কলকাতার মেয়রেরও । এই আমন্ত্রণ পত্র নজরে আসতেই তা নিয়েও শুরু হয়েছে রাজনৈতিক তরজা । এই ঘটনায় রাজ্যের শাসক দল মনে করছে পরিকল্পিত ভাবে অবমাননা করা হয়েছে মুখ্যমন্ত্রীকে । এই অবস্থান থেকে তৃণমূলের তরফে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, দলনেত্রীর অপমানের কারণে সেই অনুষ্ঠানে কার্যত থাকবেনই না দলীয় কোনও প্রতিনিধি । মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উত্তরবঙ্গ সফরে রওনা হয়েছেন আজ । তাঁর উপস্থিত থাকার কোনও সম্ভাবনাই নেই । থাকছেন না মেয়র ফিরহাদ হাকিম । থাকবেন না উত্তর কলকাতার সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও ।
এ প্রসঙ্গে কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম বলেন, শিয়ালদা মেট্রো স্টেশনের উদ্বোধন নিয়ে যা হচ্ছে তাকে নোংরামি ছাড়া আর কিছু বলা যায় না । তিনি আরও বলেন, মেট্রো রেল যা করেছে তা একটা অসভ্যতা । রাতের অন্ধকারে মুখ্যমন্ত্রীর বাড়িতে একটা কার্ড ছুড়ে দিয়ে আসা যায় না । ভুলে গেলে চলবে না যে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী শিয়ালদা স্টেশনের উদ্বোধন করছেন, তাঁর থেকে মুখ্যমন্ত্রীর পদের মূল্য অনেক উপরে । প্রোটোকল অনুযায়ী এ ভাবে আমন্ত্রণ তাঁকে করা যায় না । এ ক্ষেত্রে রেল থেকে অথবা দফতরের মন্ত্রীর একটা ফোন করে সময় চেয়ে নেওয়া উচিত । এমনটা না করে মুখ্যমন্ত্রী এবং মেয়রকে একটা কার্ড ফেলে এলাম আর তাঁরা চলে গেলেন এমনটা হয় না ।
আরও পড়ুন: শিয়ালদা মেট্রোর উদ্বোধনের দিনও কাটছে না বিতর্ক, তরজা তুঙ্গে তৃণমূল-বিজেপির
এ দিন মুখ্যমন্ত্রীর প্রতি অবমাননা হয়েছে বলে অনুষ্ঠান বয়কট করছেন স্থানীয় সাংসদ সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ও । স্পষ্ট ভাষায় তিনি জানিয়ে দিয়েছেন, মুখ্যমন্ত্রীকে অবহেলা করে তাঁর পক্ষে ওই অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকা সম্ভব নয় । তিনি বলেন, "মুখ্যমন্ত্রীকে যে পদ্ধতিতে আমন্ত্রণ জানিয়েছে তা প্রত্যাশা করা যায় না । মুখ্যমন্ত্রীর আগামী এক মাসের কর্মসূচি আগে থেকে ঠিক করা থাকে । সবচেয়ে ভালো হতো মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে আলোচনা সাপেক্ষে একটা দিন ঠিক করা । কারণ রেল বা এই মেট্রো সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীর আলাদা একটা অনুভূতি বোধ আছে । তিনি যতদিন রেলমন্ত্রী থেকেছেন এক পয়সা রেলের ভাড়া বৃদ্ধি করতে দেননি । তাঁর জীবন ছিল ভারতীয় রেল । বাংলার মানুষের এ সব অজানা নয় । কাজেই তাঁকে অপমান করে আমাদের আমন্ত্রণ জানালে আমাদের পক্ষে উপস্থিত থাকা সম্ভব নয় ।"
এ দিকে, আমন্ত্রণ পত্রে মুখ্যমন্ত্রী বা মেয়রের নাম না থাকা নিয়ে মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তারা জানিয়েছে যে, আমন্ত্রণপত্রে যেমন মুখ্যমন্ত্রীর নাম নেই, তেমন ভাবেই রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়েরও নাম নেই । কিন্তু তাঁকে তো আমন্ত্রণ করা হয়েছে । কিন্তু প্রোটোকল অনুসারে যে অঞ্চলে অনুষ্ঠানটি হচ্ছে প্রধান অতিথির সঙ্গে সেই অঞ্চলের সাংসদ এবং বিধায়কের নাম থাকে ।