কলকাতা, 16 জানুয়ারি : শনিবারের বারবেলায় স্বস্তি ফিরল তৃণমূল কংগ্রেস৷ রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তেমন কিছু বিস্ফোরক মন্তব্য করেননি ৷ আর বাকি যাঁদের কথা ‘বেসুরো’ ঠেকছিল, তাঁদেরও ‘মানভঞ্জন’ সম্ভব হয়েছে ৷ ফলে আবার তৃণমূল ভাঙবে বলে যে গেল গেল রব উঠেছিল, তা অনেকটাই ঠেকাতে পেরেছে তৃণমূল কংগ্রেস ৷
যদিও এই নিয়ে তৃণমূল কংগ্রেসের তরফে মুখে কুলুপ আঁটা হয়েছে ৷ দলের মুখপাত্র কুণাল ঘোষও এই নিয়ে কোনও মন্তব্য করতে রাজি হলেন না ৷ শুধু বললেন, ‘‘খেলা এখনও বাকি আছে ৷’’
তবে তিনি এদিন সংবাদমাধ্যমের কাছে স্বীকার করে নেন যে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের ফেসবুক লাইভ তিনি আগাগোড়া দেখেছেন ৷ এর থেকেই স্পষ্ট যে ডোমজুড়ের বিধায়ক তথা রাজ্যের বনমন্ত্রী ফেসবুক লাইভে এসে ঠিক কী বলেন, সেই দিকে তাকিয়ে ছিল তৃণমূলের সর্বস্তর ৷ কারণ, শনিবার দুপুরে রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় তৃণমূল ছাড়ার ঘোষণা করতে পারেন কিংবা তৃণমূলের বিরুদ্ধে বিষোদগার করতে পারেন বলে কয়েকটি মহল থেকে দাবি করা হচ্ছিল ৷
কিন্তু আদতে রাজীব তৃণমূলের বিরুদ্ধে কিছুই বলেননি ৷ বরং দলনেত্রীর আদর্শের কথা বলেছেন ৷ মানুষের জন্য কাজ করার কথা বলেছেন ৷ তিনি মানুষের জন্য কাজ করতে গিয়ে বাধা পাওয়ার কথা বলেছেন ৷ তাঁকে দলের অন্দরেই কটাক্ষের মুখে পড়তে হচ্ছে বলে জানিয়ে দল কোনও ব্যবস্থা নেয়নি বলে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ৷ আর বাংলার বেকার সমস্যা দূরীকরণে তিনি কিছু করতে চান বলে জানিয়ে এদিনের মতো ফেসবুক লাইভ শেষ করেছেন তৃণমূলের এই ‘বেসুরো’ নেতা ৷
স্বাভাবিক ভাবেই তাই স্বস্তি পেয়েছে তৃণমূল ৷ তার উপর বৃহস্পতিবার থেকে ‘বেসুরো’ শোনাচ্ছিল বীরভূমের সাংসদ শতাব্দী রায় ও রাজ্যের মন্ত্রী গৌতম দেবকে ৷ এই দুজনের ক্ষোভও মিটিয়ে দিতে পেরেছে তৃণমূল ৷ শুক্রবার সন্ধ্যায় অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায় নিজেই কথা বলেছেন শতাব্দীর সঙ্গে ৷ দৌত্যের কাজ করেছেন কুণাল ঘোষ ৷ আর গৌতম দেবকে সকালে ফোন করেন সুব্রত বক্সি ও পরে গৌতম দেবের সঙ্গে কথা বলেন স্বয়ং দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ এর পর দুজনেই রাগ পড়ে যাওয়ার কথা প্রকাশ্যে জানিয়েও দিয়েছেন৷
অন্যদিকে হাওড়ার সাংসদ প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপিতে আসবেন বলে দাবি করেছিলেন সৌমিত্র খাঁ৷ সেই দাবি উড়িয়ে দিয়েছেন অর্জুন পুরস্কার প্রাপক এই প্রাক্তন ফুটবলার ৷ বরং তিনি জানিয়েছেন, কেউ না থাকলেও তিনি শেষপর্যন্ত মমতার পাশেই থাকবেন ৷
আরও পড়ুন : তৃণমূল ছাড়লেই রাজীবের জন্য বিজেপির দরজা খোলা, বার্তা দিলীপের
যদিও বিরোধীদের কটাক্ষ এই স্বস্তি বেশিদিন টিকবে না ৷ আবার কিছু ক্ষোভ মাথাচাড়া দেবে ৷ এখন দেখার বিরোধীদের দাবি মেলে, নাকি বিক্ষুব্ধদের আটকে শেষ হাসি হাসে তৃণমূল কংগ্রেস ৷