কলকাতা, 9 ফেব্রুয়ারি : 2019 সালে চিনের ডালিয়ান শহর থেকে অনেক কাঠখড় পুড়িয়ে একটি রেকটি এসেছিল ৷ তা আদৌ যাত্রী পরিষেবায় ব্যবহার করা যাবে কি না, তা নিয়ে উঠছে প্রশ্ন ৷ রেকটির ট্রায়াল রানে বেশ কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি ধরা পড়েছে (Technical Problems With CRRC Dalian Rake of Kolkata Metro) ৷ পরবর্তী সময়ে আরও 13টি রেক আসার কথা ছিল ৷ কিন্তু, সেই পরিকল্পনায় আপাতত ফুল স্টপ লেগে গিয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে ৷
গতবছর কলকাতা মেট্রো রেলের নন এসি রেকগুলি পুরোপুরি বাতিল করা হয়েছে ৷ তার পরিবর্তে ঝাঁ চকচকে অত্যাধুনিক ডালিয়ান রেকের অর্ডার দেওয়া হয় ৷ ট্রায়াল রানের জন্য তার একটি রেক চিন থেকে নিয়েও আসা হয় ৷ বর্তমানে কলকাতা মেট্রোয় সেই ডালিয়ান রেকটির ট্রায়াল রান চলছে ৷ কিন্তু, তাতে দেখা দিয়েছে বেশ কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি ৷ একাধিকবার সেই রেকটির ট্রায়াল রান করিয়েও, সেটিকে যাত্রী পরিষেবার উপযোগী করে তোলা যায়নি ৷
2015 সালে নন এসি রেকগুলিকে বাতিল করে, ঝাঁ চকচকে অত্যাধুনিক রেক চালানোর পরিকল্পনা নেয় কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষ ৷ সেই মতো 2015 সালে চিনের সিআরআরসি সংস্থাকে 14টি রেকের অর্ডার দেয় ৷ এই রেকগুলি সবকটাই আট বগির ৷ এর মধ্যে 2019 সালে একটি রেক ভারতে এসে পৌঁছয় ৷
আরও পড়ুন : Metro Service Increase: বাড়ানো হল দিনের শেষ মেট্রোর সময়, বাড়ছে ট্রেনের সংখ্যাও
2020 সালে লকডাউনের সময় থেকে ওই রেকের ট্রায়াল রান শুরু হয় ৷ তবে, প্রত্যেক ট্রায়াল রানে নানান যান্ত্রিক ত্রুটি দেখা দেয় ৷ ফলে যাত্রী পরিষেবায় ব্যবহার করা সম্ভব হচ্ছে না রেকটিকে ৷ দিনে দিনে যাত্রী সংখ্যা বাড়লেও, চেন্নাইয়ে তৈরি ইন্টেগ্রাল কোচ ফ্যাক্টরির (Integral Coach Factory) তৈরি মেধা রেকই আপাতত কলকাতা মেট্রোর ভরসা ৷
আরও পড়ুন : Kolkata Metro: কলকাতা মেট্রোর নন এসি রেককে আলবিদা
বেশ কয়েকটি ত্রুটি ধরা পড়লেও সেগুলির মধ্যে অন্যতম হলো ট্রেনটি ঝাঁকুনি ৷ একটি ট্রেন যখন লাইনের ওপর দিয়ে ছুটে যায়, তাতে ঝাঁকুনি হওয়াটা স্বাভাবিক ৷ মেট্রো ইঞ্জিনিয়ারদের মতে এই ঝাঁকুনিকে হরাইজন্টাল লার্চিং বলা হয় ৷ তবে, এই রেকের ক্ষেত্রে তা স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি ৷ জানা গেছে, একমাত্র লাইন পরিবর্তন করলেই এই সমস্যা দূর হবে ৷ তবে, একটি রেককে চালাতে গোটা লাইন বদলে ফেলা সম্ভব নয় ৷
এই বিষয়টি কলকাতা মেট্রো রেল কর্তৃপক্ষও মেনে নিয়েছে ৷ কলকাতা মেট্রো রেলের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, ‘‘ডালিয়ন থেকে কলকাতা মেট্রোয় 14টি রেক আসার কথা ছিল ৷ তার মধ্যে একটি প্রোটোটাইপ রেক আসে ৷ এর পর বিভিন্ন সময়ে এই রেক পরীক্ষা করা হয় ৷ তবে এতে বেশ কিছু ত্রুটি ধরা পড়েছে ৷ তাই আরডিএসও-র তরফে এই রেকটিকে বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহার করার জন্য ছাড়পত্র মেলেনি ৷ আমাদের কাছে যাত্রী সুরক্ষাই হল সর্ব প্রথম ৷ তাই আমরা সেখানে কোনও রকম আপোষ করব না ৷’’