কলকাতা, 23 ফেব্রুয়ারি : বহুদিন ধরেই চলছে চাকরির দাবিতে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষক নিয়োগের ওয়েটিং লিস্টে থাকা প্রার্থীদের আন্দোলন। আজ সেই আন্দোলনের অংশ হিসেবে নাকতলায় শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে পৌঁছে গেছিলেন শতাধিক চাকরিপ্রার্থী। শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে রাস্তায় বসে-শুয়ে, স্লোগান দিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ করেন তাঁরা। পুলিশ সেই অবস্থান-বিক্ষোভ তুলে দিতে গেলেই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পরিস্থিতি। অভিযোগ, পুলিশ জোর করে চাকরিপ্রার্থীদের অবস্থান থেকে তোলার চেষ্টা করে। প্রথমে চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে পুলিশের বচসা ও তারপরে হাতাহাতি পর্যন্ত হয়।
এদিন এসএসসি যুব ছাত্র অধিকার মঞ্চ ও যৌথমঞ্চের সদস্যরা দুপুর তিনটে নাগাদ শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে যান। সেখানে রাস্তায় বসে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করে দেন তাঁরা। বিক্ষোভ থেকে তাঁরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার দাবি তোলেন। কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রী জানিয়ে দেন তিনি বিক্ষোভরত চাকরিপ্রার্থীদের সঙ্গে দেখা করবেন না। পুলিশের তরফে তাঁদের বারবার উঠে যেতে বলা হয়। কিন্তু, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করে অবস্থান প্রত্যাহারে রাজি ছিলেন না আন্দোলনকারীরা । তাঁরা রাস্তায় বসে পড়ে স্লোগান দিতে থাকেন ৷
বেশ কিছুক্ষণ ধরে শিক্ষামন্ত্রীর বাড়ির সামনে চলতে থাকে এসএসসি প্রার্থীদের বিক্ষোভ। তারপরে বিকেল চারটে নাগাদ পুলিশ তাঁদের প্রিজন ভ্যানে তুলে নিয়ে যায় থানায়। অভিযোগ, পুলিশ এদিন চাকরিপ্রার্থীদের রীতিমতো টেনেহিঁচড়ে সরিয়ে নিয়ে যায়। ঘটনাটি ঘিরে রীতিমতো উত্তপ্ত হয়ে উঠে এলাকা। পুলিশের সঙ্গে বিক্ষোভকারীদের বচসা তো হয়ই, এমনকি হাতাহাতি পর্যন্ত হয়। বিক্ষোভকারীদের অভিযোগ, কাউকে চুলের মুঠি ধরে, কাউকে মারধর করে গাড়িতে তুলেছে পুলিশ। বেশ কয়েকজন মহিলা চাকরিপ্রার্থীর পোশাক ছিঁড়ে গিয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে ৷
আরও পড়ুন : উচ্চ-প্রাথমিকের চাকরি প্রার্থীদের নবান্ন অভিযান ঘিরে রণক্ষেত্র শিয়ালদহ
এক চাকরিপ্রার্থী বলেন, ‘‘আমরা শান্তিপূর্ণ অবস্থান করছিলাম। চেয়েছিলাম, শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে। শিক্ষামন্ত্রী জানান তিনি দেখা করবেন না। পুলিশ আমাদের বলে আপনারা হয় উঠে যান, নাহলে আমরা গ্রেপ্তার করব। আমরা শিক্ষামন্ত্রীর সঙ্গে দেখা না করে উঠব না জানিয়ে দিয়েছিলাম। আমাদের দাবিটা ন্যায্য। আমাদের নবম থেকে দ্বাদশের সব ওয়েটিং প্রার্থীকে চাকরি দিতে হবে। মুখ্যমন্ত্রীও প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তারপরে পুলিশ আমাদের জোর করে তুলে দেয়। আমাদের টেনেহিঁচড়ে, পাঁজাকোলা করে, চুলের মুঠি ধরে নিয়ে যায়। ছেলেদের মারধর করেছে। আমার জামা ছিঁড়ে দিয়েছে।’’