ETV Bharat / city

State Reforms Law: খোলা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়াতে বিধানসভায় আইন সংস্কার করল রাজ্য - খোলা বাজার থেকে ঋণ

খোলা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়াতে রাজ্য বিধানসভায় আইন সংস্কার করল সরকার (State Reforms Law)৷ পাশ হল আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ (এফআরবিএম) আইনের সংশোধনী (FRBM Act)।

State reforms law in assembly to increase the amount of borrowing from open market
খোলা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়াতে বিধানসভায় আইন সংস্কার করল রাজ্য
author img

By

Published : Sep 20, 2022, 6:07 PM IST

কলকাতা, 20 সেপ্টেম্বর: খোলা বাজার থেকে ঋণ নিতে আইনি সংশোধন করল রাজ্য সরকার (State Reforms Law)। রাজ্য বিধানসভায় মঙ্গলবার ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ (এফআরবিএম) আইনের সংশোধনী (FRBM Act)।

রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই ঋণ গ্রহণের একটা ইতিহাস রয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবারই বলতে শোনা গিয়েছে বামফ্রন্ট সরকার রাজ্য থেকে যাওয়ার সময় রাজ্যের ঘাড়ে মোটা টাকার বোঝা চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছে । আর এই টাকা শোধ করতে আয়ের বেশিরভাগটাই নাকি খরচ হয়ে যাচ্ছে । তবে এরপরেও একাধিকবার ঋণ নিয়েছে রাজ্য সরকার । বর্তমানে রাজ্যের ঘাড়ে মোট ঋণের বোঝা পাঁচ লক্ষ আঠাশ হাজার পাঁচ কোটি টাকার । এই অবস্থাতে খোলা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়াতে আইন সংশোধন করল রাজ্য । বিরোধীদের বক্তব্য, মূলত এই সংশোধনীর মাধ্যমে খোলা বাজার থেকে আরও বেশি পরিমাণে অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাইছে রাজ্য সরকার ।

প্রসঙ্গত এ দিন এই বিল নিয়ে আলোচনায় একাধিক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে (West Bengal assembly)। বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী এই বিল নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, এই আইন পাশ করতে গিয়ে শাসক দলের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রের নির্দেশমতো এই বিল আনা হচ্ছে । বাস্তব কিন্তু আদতে তা নয় । রাজ্য সরকার চাইলেই খেয়াল খুশিমতো ঋণ নিতে পারে না । এই ঋণের জন্য প্রয়োজন কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি, এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র অনুমতি দিয়েছে । আর রাজ্য সেই অনুমতিকে কাজে লাগিয়ে এই বিল নিয়ে আসছে ।

তিনি বলেন, এতদিন পর্যন্ত রাজ্য 3 শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারত । কিন্তু বাস্তবে এই ঋণের পরিমাণ ছিল তার চেয়ে বেশি । 2010 সালে এফআরবিএম আইন এনেছিল রাজ্য । কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সেই আইনের একটিও লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি রাজ্য সরকার । তিনি আরও বলেছেন, টাকা দিতে গিয়ে রাজকোষে টাকা নেই । আর সে কারণেই খোলা বাজার থেকে বারবার ঋণ নিতে হচ্ছে রাজ্যকে । অশোক লাহিড়ীর অভিযোগ, এমনটা চলতে থাকলে আগামী দিনে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন ও বেতন দিতেও টাকা থাকবে না রাজ্য সরকারের ।

আরও পড়ুন: 'দাদা পায়ে পড়ি রে...!', মমতাকে তীব্র কটাক্ষ সেলিমের

এই অর্থনীতিবিদের কটাক্ষ, এখনও পশ্চিমবঙ্গকে দেনাগ্রস্ত রাজ্য বলা না গেলেও ফিসক্যালি স্ট্রেসড রাজ্য হিসাবে দেখছে রিজার্ভ ব্যাংক ।
যদিও বক্তব্য রাখতে উঠে এই অর্থনীতিবিদ-বিধায়কের সমস্ত যুক্তি খণ্ডন করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । এ দিন তিনি বলেন, রাজ্যকে দেনার চাপে থাকা রাজ্য হিসেবে বলছেন অশোক লাহিড়ী । কিন্তু রাজ্যের স্বার্থে রাজ্যবাসীর ন্যায্য পাওনা নিয়ে সামান্য মাথাব্যথা নেই বিজেপি নেতাদের । এই মুহূর্তে গরিব মানুষের মাথার উপরে ছাদ তৈরি করার জন্য টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র । অথচ সে বিষয়ে নীরব বিরোধীদল । 100 দিনের কাজের ক্ষেত্রে বড় অংশের মহিলা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ বন্ধ করে রাখার জন্য টাকা পাচ্ছেন না কেন, এই নিয়েও কিছু বলছেন না বিজেপি নেতারা । বরং তাঁরা চাইছেন, রাজ্যের মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হন । আর তাই এখানে সরকারকে ঋণ নেওয়ার জন্য সমালোচনা করলেও, রাজ্যের হিতে দিল্লি দরবার করতে পারছে না ।

এ দিন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এটা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সুপারিশ মেনে এই আইন সংশোধন করা হলেও রাজ্য সরকার এখন যে আবার ঋণ নিতে চলেছে এমনটি নয় । পঞ্চদশ বিত্ত কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী এতদিন পর্যন্ত ঋণ গ্রহণের সীমা ছিল মোট উৎপাদনের 3%, তা বেড়ে এখন হয়েছে 4 শতাংশ । এতদিন পর্যন্ত রাজ্যের ঋণ গ্রহণের সীমা ছিল 69 হাজার কোটি টাকা । কিন্তু চলতি অর্থবর্ষে দশ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য ঋণ নিয়েছে মাত্র 16 হাজার 500 কোটি টাকা । অতএব এমনটা ভাবার কারণ নেই, বাড়তি ঋণ নেওয়ার জন্যই এই আইনের সংস্কার করা হল । তিনি এও বলেন, বর্তমান হারে ঋণ নিলে এই অর্থ বর্ষ শেষে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ হতে পারে 5 লক্ষ 86 হাজার 438 কোটি টাকা ।

কলকাতা, 20 সেপ্টেম্বর: খোলা বাজার থেকে ঋণ নিতে আইনি সংশোধন করল রাজ্য সরকার (State Reforms Law)। রাজ্য বিধানসভায় মঙ্গলবার ধ্বনি ভোটে পাশ হয়ে গেল আর্থিক শৃঙ্খলা ও বাজেট ঘাটতি নিয়ন্ত্রণ (এফআরবিএম) আইনের সংশোধনী (FRBM Act)।

রাজ্যে পালাবদলের পর থেকেই ঋণ গ্রহণের একটা ইতিহাস রয়েছে । মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে বারবারই বলতে শোনা গিয়েছে বামফ্রন্ট সরকার রাজ্য থেকে যাওয়ার সময় রাজ্যের ঘাড়ে মোটা টাকার বোঝা চাপিয়ে দিয়ে গিয়েছে । আর এই টাকা শোধ করতে আয়ের বেশিরভাগটাই নাকি খরচ হয়ে যাচ্ছে । তবে এরপরেও একাধিকবার ঋণ নিয়েছে রাজ্য সরকার । বর্তমানে রাজ্যের ঘাড়ে মোট ঋণের বোঝা পাঁচ লক্ষ আঠাশ হাজার পাঁচ কোটি টাকার । এই অবস্থাতে খোলা বাজার থেকে ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়াতে আইন সংশোধন করল রাজ্য । বিরোধীদের বক্তব্য, মূলত এই সংশোধনীর মাধ্যমে খোলা বাজার থেকে আরও বেশি পরিমাণে অর্থসংস্থানের ব্যবস্থা করতে চাইছে রাজ্য সরকার ।

প্রসঙ্গত এ দিন এই বিল নিয়ে আলোচনায় একাধিক কড়া প্রশ্নের মুখে পড়তে হল রাজ্য সরকারকে (West Bengal assembly)। বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ী এই বিল নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, এই আইন পাশ করতে গিয়ে শাসক দলের তরফ থেকে বলা হচ্ছে, কেন্দ্রের নির্দেশমতো এই বিল আনা হচ্ছে । বাস্তব কিন্তু আদতে তা নয় । রাজ্য সরকার চাইলেই খেয়াল খুশিমতো ঋণ নিতে পারে না । এই ঋণের জন্য প্রয়োজন কেন্দ্রীয় সরকারের অনুমতি, এ ক্ষেত্রে কেন্দ্র অনুমতি দিয়েছে । আর রাজ্য সেই অনুমতিকে কাজে লাগিয়ে এই বিল নিয়ে আসছে ।

তিনি বলেন, এতদিন পর্যন্ত রাজ্য 3 শতাংশ পর্যন্ত ঋণ নিতে পারত । কিন্তু বাস্তবে এই ঋণের পরিমাণ ছিল তার চেয়ে বেশি । 2010 সালে এফআরবিএম আইন এনেছিল রাজ্য । কিন্তু কার্যক্ষেত্রে দেখা যাচ্ছে সেই আইনের একটিও লক্ষ্য পূরণ করতে পারেনি রাজ্য সরকার । তিনি আরও বলেছেন, টাকা দিতে গিয়ে রাজকোষে টাকা নেই । আর সে কারণেই খোলা বাজার থেকে বারবার ঋণ নিতে হচ্ছে রাজ্যকে । অশোক লাহিড়ীর অভিযোগ, এমনটা চলতে থাকলে আগামী দিনে সরকারি কর্মচারীদের পেনশন ও বেতন দিতেও টাকা থাকবে না রাজ্য সরকারের ।

আরও পড়ুন: 'দাদা পায়ে পড়ি রে...!', মমতাকে তীব্র কটাক্ষ সেলিমের

এই অর্থনীতিবিদের কটাক্ষ, এখনও পশ্চিমবঙ্গকে দেনাগ্রস্ত রাজ্য বলা না গেলেও ফিসক্যালি স্ট্রেসড রাজ্য হিসাবে দেখছে রিজার্ভ ব্যাংক ।
যদিও বক্তব্য রাখতে উঠে এই অর্থনীতিবিদ-বিধায়কের সমস্ত যুক্তি খণ্ডন করেছেন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য । এ দিন তিনি বলেন, রাজ্যকে দেনার চাপে থাকা রাজ্য হিসেবে বলছেন অশোক লাহিড়ী । কিন্তু রাজ্যের স্বার্থে রাজ্যবাসীর ন্যায্য পাওনা নিয়ে সামান্য মাথাব্যথা নেই বিজেপি নেতাদের । এই মুহূর্তে গরিব মানুষের মাথার উপরে ছাদ তৈরি করার জন্য টাকা দিচ্ছে না কেন্দ্র । অথচ সে বিষয়ে নীরব বিরোধীদল । 100 দিনের কাজের ক্ষেত্রে বড় অংশের মহিলা শ্রমিকরা দীর্ঘদিন কেন্দ্রীয় সরকারের বরাদ্দ বন্ধ করে রাখার জন্য টাকা পাচ্ছেন না কেন, এই নিয়েও কিছু বলছেন না বিজেপি নেতারা । বরং তাঁরা চাইছেন, রাজ্যের মানুষ যাতে ক্ষতিগ্রস্ত হন । আর তাই এখানে সরকারকে ঋণ নেওয়ার জন্য সমালোচনা করলেও, রাজ্যের হিতে দিল্লি দরবার করতে পারছে না ।

এ দিন রাজ্যের অর্থমন্ত্রী চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য এটা নির্দিষ্ট করে দিয়েছেন, কেন্দ্রীয় সুপারিশ মেনে এই আইন সংশোধন করা হলেও রাজ্য সরকার এখন যে আবার ঋণ নিতে চলেছে এমনটি নয় । পঞ্চদশ বিত্ত কমিশনের পরামর্শ অনুযায়ী এতদিন পর্যন্ত ঋণ গ্রহণের সীমা ছিল মোট উৎপাদনের 3%, তা বেড়ে এখন হয়েছে 4 শতাংশ । এতদিন পর্যন্ত রাজ্যের ঋণ গ্রহণের সীমা ছিল 69 হাজার কোটি টাকা । কিন্তু চলতি অর্থবর্ষে দশ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত রাজ্য ঋণ নিয়েছে মাত্র 16 হাজার 500 কোটি টাকা । অতএব এমনটা ভাবার কারণ নেই, বাড়তি ঋণ নেওয়ার জন্যই এই আইনের সংস্কার করা হল । তিনি এও বলেন, বর্তমান হারে ঋণ নিলে এই অর্থ বর্ষ শেষে রাজ্যের ঋণের পরিমাণ হতে পারে 5 লক্ষ 86 হাজার 438 কোটি টাকা ।

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.