ETV Bharat / city

Prophet Remarks Row : পয়গম্বর ইস্যুতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে চায় রাজ্য - Case File Against Bengal Government on Prophet Remarks Row Agitation

বিজেপি থেকে বহিষ্কৃত নেত্রী নূপুর শর্মার একটি মন্তব্য (Nupur Sharma Controversial Comment) নিয়ে গত কয়েকদিন ধরে বিক্ষোভ চলছে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় ৷ এই নিয়ে মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে ৷ এই ইস্যুতে বিক্ষোভ সামলাতে পুলিশি ব্যর্থতার কথা অস্বীকার করেছে রাজ্য ৷ তবে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে বলে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল (State government to compensate people affected by recent violence) ৷

State government to compensate people affected by recent violence
Prophet Remarks Row : পয়গম্বর ইস্যুতে প্রতিবাদ-বিক্ষোভে ক্ষতিগ্রস্তদের ক্ষতিপূরণ দিতে চায় রাজ্য
author img

By

Published : Jun 13, 2022, 2:49 PM IST

কলকাতা, 13 জুন : নূপুর শর্মার মন্তব্যের (Nupur Sharma Controversial Comment) ইস্যুর বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে যে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে, তা নিয়ে এবার মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ৷ এই নিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ঠেকাতে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন ব্যর্থ বলে কলকাতা হাইকোর্টে দাবি করেছেন মামলাকারীরা (Case File Against Bengal Government on Prophet Remarks Row Agitation) ৷ অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা আদালতে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি জানিয়েছেন যে প্রতিবাদ বিক্ষোভের জেরে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে প্রস্তুত রাজ্য (State government to compensate people affected by recent violence) ৷

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, পয়গম্বর মহম্মদকে (Prophet Remarks Row) নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে ৷ তার প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় চলছে বিক্ষোভ ৷ এই নিয়ে মামলাকারী আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত জানিয়েছেন, পার্ক সার্কাস, হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করা হয়েছে । পাঁচলা, উলুবেড়িয়ার পরিস্থিতির ফটোগ্রাফ তিনি জমা দিয়েছেন আদালতে । তাঁর দাবি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে । সাধারণ মানুষের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে । প্রশাসন তেমন কিছুই করতে পারছে না । নদীয়ার বেথুয়াডহরিতে গতকাল ফের রেল অবরোধ করা হয় । রাজ্যের এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ডাকার ব্যাপারে দ্বিধা থাকা উচিত নয় । রাজ্য পুলিশ এদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ।

তাঁর আরও বক্তব্য, বিভিন্ন জায়গায় সাময়িক সময়ের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বটে । কিন্তু তাতে কিছুই হবে না । রাজ্য পুলিশ যদি সমর্থ না হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়া দরকার ৷ উস্কানির নেপথ্যে কারা, তা জানার জন্য এনআইএ-কে তদন্তভার দেওয়া উচিত ৷

অন্যদিকে আরেক মামলাকারী দেবদত্ত মাঝির তরফে আইনজীবী সুরজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘9 জুন যা হয়েছে, রাজ্য প্রসাসনের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না একে । জাতীয় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ করা হয়েছে । এটা সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা । মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল । পুলিশ কিছুই করতে পারেনি । জাতীয় সড়ক 11 ঘণ্টা অবরোধ মানে কী সাংঘাতিক প্রভাব পড়তে পারে, তা অনুমান করা সম্ভব নয় । পুলিশ কোনও এফআইআর করেনি । একজন ব্যাক্তি এই ব্যাপারে একটা এফআইআর করেছেন ।’’

তাঁর অভিযোগ, কলকাতা পুলিশের একটা পোস্টে পথ অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা দায়সারা ভাবে উল্লেখ করা হয় ৷ কিন্তু এই ঘটনাকে তিনি জাতীয় সম্প্রীতির উপর ভয়ানক আশঙ্কার বলে মন্তব্য করেছেন ৷ তিনিও এনআইএ তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন ৷ তাঁর দাবি, পূর্ব পরিকল্পনা না থাকলে হাজার হাজার মানুষ কয়েক মিনিটের মধ্যে জমায়েত হতে পারে না । এর তদন্ত হওয়া দরকার ৷ উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন তসলিমা নাসরিনের লেখা একটি বইয়ের বিরুদ্ধে পার্ক সার্কাসে বিক্ষোভের ঘটনার কথা ৷ সেদিনের সেই বিক্ষোভ থামাতে সেনার সাহায্য নিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার ৷

আরেক মামলাকারী আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, "নির্দিষ্ট ধর্মের লোকজনের ঘর বাড়িতে বাঙচুর করা হয়েছে । মহিলাদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে ।’’ অন্য এক মামলাকারী আইনজীবী সুবীর সান্যাল জানান, মুর্শিদাবাদে মিষ্টির দোকানে ভাঙচুর করা হয়েছে । গোটা রাজ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে । পার্টি অফিস ভাঙচুর হয়েছে । রাস্তা অবরোধ, থানা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে । দোকানপাট ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে ।

অন্যদিকে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেন ৷ পরিবর্তে তিনি রাজ্য এই নিয়ে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে ধরেছেন ৷ তিনি জানান, রাজ্যে 10 জুন পর্যন্ত 214 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । 26টি এফআইআর দায়ের হয়েছে । ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে হাওড়া, বেলডাঙা, রেজিনগর, শক্তিপুরে । লালগোলা এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ । শেষ 36 ঘণ্টায় তেমন অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি । তাঁর দাবি, অন্য রাজ্যে এই ইস্যুতে অনেক বেশি বিক্ষোভ হচ্ছে ৷

তিনিও তসলিমা নাসরিনের প্রসঙ্গ টানেন ৷ জানান, তসলিমার নাসরিনের বইয়ের ঘটনায় টানা দু’দিন শহরের কেন্দ্রে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছিল । সেই কারণে সেনা নামানো হয়েছিল ।

তখন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব জানতে চান, ‘‘পাবলিক প্রাইভেট সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে । সেই ভিত্তিতে আপনারা রিকভার করতে পারবেন তো ?’’ উত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে ৷

আরও পড়ুন : Calcutta High Court: গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করেছে প্রশাসন! শুভেন্দু-সুকান্তকে মামলার অনুমতি দিল আদালত

কলকাতা, 13 জুন : নূপুর শর্মার মন্তব্যের (Nupur Sharma Controversial Comment) ইস্যুর বিরুদ্ধে রাজ্যজুড়ে যে বিক্ষোভ আন্দোলন চলছে, তা নিয়ে এবার মামলা হল কলকাতা হাইকোর্টে (Calcutta High Court) ৷ এই নিয়ে প্রতিবাদ-বিক্ষোভ ঠেকাতে রাজ্যের পুলিশ-প্রশাসন ব্যর্থ বলে কলকাতা হাইকোর্টে দাবি করেছেন মামলাকারীরা (Case File Against Bengal Government on Prophet Remarks Row Agitation) ৷ অন্যদিকে রাজ্য সরকারের তরফে কী কী পদক্ষেপ করা হয়েছে, তা আদালতে জানিয়েছেন অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় ৷ তিনি জানিয়েছেন যে প্রতিবাদ বিক্ষোভের জেরে যাঁরা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন, তাঁদের ক্ষতিপূরণ দিতে প্রস্তুত রাজ্য (State government to compensate people affected by recent violence) ৷

এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, পয়গম্বর মহম্মদকে (Prophet Remarks Row) নিয়ে অপমানজনক মন্তব্য করার অভিযোগ ওঠে নূপুর শর্মার বিরুদ্ধে ৷ তার প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে বাংলার বিভিন্ন জায়গায় চলছে বিক্ষোভ ৷ এই নিয়ে মামলাকারী আইনজীবী সুস্মিতা সাহা দত্ত জানিয়েছেন, পার্ক সার্কাস, হাওড়ার বিভিন্ন জায়গায় অবরোধ করা হয়েছে । পাঁচলা, উলুবেড়িয়ার পরিস্থিতির ফটোগ্রাফ তিনি জমা দিয়েছেন আদালতে । তাঁর দাবি, সরকারি সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে । সাধারণ মানুষের বাড়িতে ভাঙচুর চালানো হচ্ছে । প্রশাসন তেমন কিছুই করতে পারছে না । নদীয়ার বেথুয়াডহরিতে গতকাল ফের রেল অবরোধ করা হয় । রাজ্যের এই পরিস্থিতিতে কেন্দ্রীয় বাহিনীকে ডাকার ব্যাপারে দ্বিধা থাকা উচিত নয় । রাজ্য পুলিশ এদের নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না ।

তাঁর আরও বক্তব্য, বিভিন্ন জায়গায় সাময়িক সময়ের জন্য ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে বটে । কিন্তু তাতে কিছুই হবে না । রাজ্য পুলিশ যদি সমর্থ না হয় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে, তাহলে কেন্দ্রীয় বাহিনীর সাহায্য নেওয়া দরকার ৷ উস্কানির নেপথ্যে কারা, তা জানার জন্য এনআইএ-কে তদন্তভার দেওয়া উচিত ৷

অন্যদিকে আরেক মামলাকারী দেবদত্ত মাঝির তরফে আইনজীবী সুরজিৎ মিত্র বলেন, ‘‘9 জুন যা হয়েছে, রাজ্য প্রসাসনের ব্যর্থতা ছাড়া আর কিছু বলা যায় না একে । জাতীয় সড়ক অবরোধ করে প্রতিবাদ করা হয়েছে । এটা সম্পূর্ণ পূর্ব পরিকল্পিত ঘটনা । মানুষ ঘণ্টার পর ঘণ্টা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে রেখেছিল । পুলিশ কিছুই করতে পারেনি । জাতীয় সড়ক 11 ঘণ্টা অবরোধ মানে কী সাংঘাতিক প্রভাব পড়তে পারে, তা অনুমান করা সম্ভব নয় । পুলিশ কোনও এফআইআর করেনি । একজন ব্যাক্তি এই ব্যাপারে একটা এফআইআর করেছেন ।’’

তাঁর অভিযোগ, কলকাতা পুলিশের একটা পোস্টে পথ অবরোধ তুলে নেওয়ার কথা দায়সারা ভাবে উল্লেখ করা হয় ৷ কিন্তু এই ঘটনাকে তিনি জাতীয় সম্প্রীতির উপর ভয়ানক আশঙ্কার বলে মন্তব্য করেছেন ৷ তিনিও এনআইএ তদন্তের দাবিতে সরব হয়েছেন ৷ তাঁর দাবি, পূর্ব পরিকল্পনা না থাকলে হাজার হাজার মানুষ কয়েক মিনিটের মধ্যে জমায়েত হতে পারে না । এর তদন্ত হওয়া দরকার ৷ উদাহরণ হিসেবে তুলে ধরেছেন তসলিমা নাসরিনের লেখা একটি বইয়ের বিরুদ্ধে পার্ক সার্কাসে বিক্ষোভের ঘটনার কথা ৷ সেদিনের সেই বিক্ষোভ থামাতে সেনার সাহায্য নিয়েছিল তৎকালীন বাম সরকার ৷

আরেক মামলাকারী আইনজীবী প্রিয়াঙ্কা টিবরেওয়াল বলেন, "নির্দিষ্ট ধর্মের লোকজনের ঘর বাড়িতে বাঙচুর করা হয়েছে । মহিলাদের শ্লীলতাহানি করা হয়েছে ।’’ অন্য এক মামলাকারী আইনজীবী সুবীর সান্যাল জানান, মুর্শিদাবাদে মিষ্টির দোকানে ভাঙচুর করা হয়েছে । গোটা রাজ্যে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি করা হয়েছে । পার্টি অফিস ভাঙচুর হয়েছে । রাস্তা অবরোধ, থানা জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে । দোকানপাট ভাঙচুর, আগুন লাগিয়ে দেওয়া হয়েছে ।

অন্যদিকে রাজ্যের অ্যাডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় আদালতে পুলিশি নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগ অস্বীকার করেন ৷ পরিবর্তে তিনি রাজ্য এই নিয়ে কী কী ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে, তার খতিয়ান তুলে ধরেছেন ৷ তিনি জানান, রাজ্যে 10 জুন পর্যন্ত 214 জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে । 26টি এফআইআর দায়ের হয়েছে । ইন্টারনেট পরিষেবা বন্ধ করা হয়েছে হাওড়া, বেলডাঙা, রেজিনগর, শক্তিপুরে । লালগোলা এক্সপ্রেসে পাথর ছোড়া হয়েছে বলে অভিযোগ । শেষ 36 ঘণ্টায় তেমন অপ্রীতিকর কিছু ঘটেনি । তাঁর দাবি, অন্য রাজ্যে এই ইস্যুতে অনেক বেশি বিক্ষোভ হচ্ছে ৷

তিনিও তসলিমা নাসরিনের প্রসঙ্গ টানেন ৷ জানান, তসলিমার নাসরিনের বইয়ের ঘটনায় টানা দু’দিন শহরের কেন্দ্রে প্রতিবাদ আন্দোলন চলছিল । সেই কারণে সেনা নামানো হয়েছিল ।

তখন কলকাতা হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তব জানতে চান, ‘‘পাবলিক প্রাইভেট সম্পত্তি নষ্ট করা হয়েছে । সেই ভিত্তিতে আপনারা রিকভার করতে পারবেন তো ?’’ উত্তরে অ্যাডভোকেট জেনারেল জানান, ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হবে ৷

আরও পড়ুন : Calcutta High Court: গণতান্ত্রিক অধিকার খর্ব করেছে প্রশাসন! শুভেন্দু-সুকান্তকে মামলার অনুমতি দিল আদালত

ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.