কলকাতা, 14 অগস্ট: সম্প্রতি সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের (St. Xavier's University) এক অধ্যাপিকা নিজের বিকিনি পরা ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় পোস্ট করায় তাঁকে চাকরি থেকে বরখাস্ত হতে হয়েছে ৷ এই ঘটনায় শোরগোল পড়ে গিয়েছে শহরজুড়ে ৷ অনেকেই এই ঘটনার তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সামাজিক মাধ্যমে সরব হয়েছেন ৷ সেই প্রতিবাদে এ বার সামিল হলেন গায়িকা পরমা বন্দ্যোপাধ্যায় (St Xaviers college professor in Bikini)৷ সমাজের রক্ষণশীলতার ট্যাবু ভাঙতে নিজের সাঁতার পোশাক পরা সাহসী ছবি পোস্ট করলেন তিনি ৷
বিকিনি পরে ইনস্টাগ্রামে ছবি পোস্ট করেছিলেন সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপিকা ৷ আর সেটাই হয়েছিল তাঁর 'অপরাধ' ৷ অধ্যাপিকার অভিযোগ, এই কারণেই চাকরি থেকে বরখাস্ত হতে হয়েছে তাঁকে । সেন্ট জেভিয়ার্স বিশ্ববিদ্যালয়ের ওই অধ্যাপিকা অভিযোগ করেছেন, সোশ্যাল মিডিয়াতে তিনি নিজের ব্যক্তিগত জীবনের কিছু মুহূর্ত শেয়ার করেছিলেন । তবে এই সবই তাঁর চাকরি জীবনের আগের । তবে আচমকাই স্কুল কর্তৃপক্ষের তরফ থেকে তাঁকে জানানো হয়, সম্প্রতি এক ছাত্রের বাবা ওই অধ্যাপিকার বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছেন । তিনি ওই শিক্ষিকার বিরুদ্ধে এফআইআর করারও পরিকল্পনা করছেন । আর তাই বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ অধ্যাপিকাকে নিজে থেকেই পদত্যাগ করতে বলেন (St Xaviers University professor alleged she terminated from job due to Bikini picture Controversy) ।
আরও পড়ুন: ইনস্টায় বিকিনি পরা ছবি দেওয়ায় চাকরি গেল অধ্যাপিকার
এই ঘটনারই তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে সরব হয়েছেন নেট নাগরিকরা ৷ সেই তালিকায় নাম লিখিয়ে নিজের স্যুইমস্যুট পরা ছবি পোস্ট করলেন পরমা বন্দ্যোপাধ্যায় (Paroma Banerjee shares picture in swimsuit)৷ তিনি সেই ছবির ক্যাপশনে লিখেছেন, "5 থেকে 16, সাঁতার কেটেছি । সেই সময় সাঁতারের পোশাক ওয়ান পিস এনে দিত পরিবার । এখন বড় হয়েছি । দুই ছেলের মা । এই দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে কিছুটা রক্ষণশীলভাবে নিজেকে ক্যারি করতাম । যাতে কেউ কোনও ভাবে কোনও আপত্তিকর কথা আমাকে বা আমার ছেলেদের না বলতে পারে । এটা আমাদের সমাজের থাকার একটা মেয়ের জন্য একটা রক্ষাকবচ বা ঢাল, যেটা বিশেষভাবে তাকে তার সন্তানদের কথা ভেবে তৈরি করতে হয় । বেশিরভাগ সময়ই আমার স্বামী অন্য শহরে থাকতেন, তাই ছোট ছোট দুই ছেলেকে নিয়ে আমাকে একাই এই শহরে থাকতে হত । সেজন্য একটু বেশি সচেতন হয়ে আমি নিজেকে মেনটেইন করেছি । ইনস্টাগ্রামে একজন শিক্ষিকার বিকিনি পরে ছবি দেওয়াটা ঠিক ,না বেঠিক এই নিয়ে কালকে আমাদের টেবিলে দীর্ঘ আলোচনা হয়েছে সেখানে মহিলা হিসেবে উপস্থিত ছিলাম একমাত্র আমি । আর আমার উল্টোদিকে আমার স্বামী এবং দুই ছেলে ডিবেট করছিল ব্যাপারটা নিয়ে ।"
- " class="align-text-top noRightClick twitterSection" data="">
তাঁর দীর্ঘ লেখার শেষের অংশে পরমা লিখেছেন, "জীবনে এই প্রথমবার এতটা অনাবৃত একটা সাহসী ছবি দেওয়ার দুঃসাহস করছি সোশ্যাল মিডিয়ায় । জানি না কীভাবে তা গৃহীত হবে । তবে এটা অবশ্যই বলব যে আমাদের সমাজে এই কলেজের ঘটনাটা একটা মাইলস্টোন চিন্তাধারার বদল আনতে কিছুটা হলেও সাহায্য করবে ।"
প্রসঙ্গত, এই ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়াতে একটি চিঠি ভাইরাল হয় । চিঠিটি লিখেছেন বিকে মুখোপাধ্যায় নামে এক ব্যক্তি । চিঠির বয়ান বলছে, 'আমার ছেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের এক অধ্যাপিকার বিকিনি পরা ছবি দেখছিল । ছবিগুলি অত্যন্ত কুরুচিকর, অশ্লীল, প্রায় নগ্ন বললেই চলে । ছবিগুলিতে শিক্ষিকা যৌন উত্তেজনামূলক পোশাক পরে রয়েছেন । শিক্ষিকার অন্তর্বাস পরা ছবি ছেলে দেখছে, বাবা হিসাবে আমার কাছে ভীষণ লজ্জার এই দৃশ্য । একজন 18 বছরের ছেলে তাঁর অধ্যাপিকার স্বল্পাবাসের ছবি দেখছে, তাও আবার প্রকাশ্যে পাবলিক প্ল্যাটফর্মে, এটি অত্যন্ত নিকৃষ্টমাণ ও লজ্জাজনক ঘটনা ।"