কলকাতা, 14 অক্টোবর : বউবাজার অঞ্চলে 45 বছরের সোনার দোকান দত্ত পরিবারের । তাঁদের চোখের সামনেই একের পর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বাড়িগুলি । তাঁদের ভয় ছিল যে এই ক্ষতির কবলে না তাঁদের একদিন পড়তে হয় । কারণ, তাঁদের এই বহু বছরের তিলে তিলে তৈরি করা দোকান খালি করে অন্যত্র যেতে হলে ব্যবসায় তো লালবাতি জ্বলবে । আজ সেই আশঙ্কাই সত্যি হল তাঁদের (Bowbazar Metro Work Crisis) ।
ইস্ট ওয়েস্ট মেট্রোর (East West Metro) কাজের জন্য শুক্রবার আবার একাধিক বাড়ি ও দোকানে ফাটল দেখা দেয় বউবাজার অঞ্চলে । একবার নয় দু’বার নয় চার চারবার ধসে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে এখানেই বাসিন্দারা । রাতারাতি মাথার উপর থেকে ছাদ ছিনিয়ে গিয়েছে তাঁদের । কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন (KMRCL) যে ঠিকাদারি সংস্থা এখানে কাজটি করছে, তাদের দিকে অভিযোগের আঙুল তুলছে দোকানের মালিক এবং স্থানীয় বাসিন্দারা ।
দোকানের মালিক দেবাশিস দত্ত বলেন, "এক বার নয় বহুবার আমরা মেট্রো কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েছি যে আগে বিকল্প ব্যবস্থা করে তারপরেও আবার কাজ শুরু করুন । কিন্তু আমাদের কথায় কেউ কোনও কর্ণপাত করেনি । আজ আমাদের দোকানের ছাদে বিরাট ফাটল দেখা দিয়েছে, যেখান থেকে অঝোরে বৃষ্ঠির জল ঢুকে দোকানের জিনিসপত্র নষ্ট হয়ে গিয়েছে । এমনকি দোকানের সিন্দুকটি পর্যন্ত ভেঙে গিয়েছে । দোকানের জিনিসপত্র কোনোমতে অন্যত্র সরিয়েছি ।"
তিনি আরও বলেন, "মেট্রোর পক্ষ থেকে আজ আমাদের দোকান দেখে গিয়েছে এবং আমাদের জিনিসপত্র নিয়ে দোকান খালি করতে বলা হয়েছে । এই দোকানই আমাদের রুজি রুটি । আর এটাই ব্যবসার মরশুম । এই সময় দোকান বন্ধ রাখলে আমাদের ব্যাপক আর্থিক ক্ষতি হয়ে যাবে ।"
স্থানীয় বাসিন্দারা জানাচ্ছেন, শেষবার যখন বাড়িতে চিড় এবং ফাটল দেখা দিয়েছিল, তখন মেট্রো কর্তৃপক্ষের তরফে এলাকাবাসীদের আশ্বস্ত করা হয়েছিল যে মাটির ভেতরে গ্রুটিং করা হচ্ছে, যাতে আর ফাটল দেখা না দেয় । কিন্তু তার পরেও এবার এই বিপত্তি ঘটে গেল । এলাকাবাসীরা জানিয়েছেন, এই এলাকার প্রায় সমস্ত বাড়িই ছোট বড় চিড় ও ফাটল রয়েছে যেগুলি কাজের অগ্রগতি সঙ্গে সঙ্গে আরও বড় হচ্ছে ।
আরও পড়ুন : ফের বউবাজারে ফাটল-আতঙ্ক! মদন দত্ত লেন ছাড়ছেন স্থানীয়রা