কলকাতা, 25 জুন : কসবায় টিকা কেলেঙ্কারির ঘটনায় সরাসরি তৃণমূল নেতৃত্ব ও রাজ্য সরকারকেই কাঠগড়ায় তুললেন বিজেপির অন্যতম রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসু (Sayantan Basu) ৷ তাঁর সাফ কথা, যে লোক নিজেকে রাজ্য সরকারের যুগ্মসচিব বলে দাবি করেন, তিনি যে ভুয়ো আইএএস, সেটা জানেই না রাজ্য সরকার ! এমনটা কি আদৌ হওয়া সম্ভব ? বরং পুরো ঘটনার নেপথ্যে শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের নেতা-নেত্রীরা জড়িয়ে থাকতে পারেন বলেও আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন সায়ন্তন ৷ তাঁর দাবি, কলকাতা পুলিশ বা সিআইডি-কে দিয়ে তদন্ত করিয়ে কোনও লাভ নেই ৷ প্রকৃত ঘটনা সামনে আনতে হলে কসবা টিকা কেলেঙ্কারির সিবিআই তদন্ত হওয়া দরকার ৷
আরও পড়ুন : এবার রবীন্দ্র মূর্তির ফলকে ফিরহাদ-সুদীপের সঙ্গে ভুয়ো আইএএসের নাম, তুঙ্গে বিতর্ক
আজ দেশের জরুরি অবস্থা ঘোষণার 46তম বর্ষপূর্তি ৷ সেই উপলক্ষে কলকাতায় প্রতিবাদ কর্মসূচির আয়োজন করেছিল বিজেপি ৷ তাতে জুড়ে যায় কসবার সাম্প্রতিক টিকা কেলেঙ্কারির ঘটনা ৷ প্রতিবাদে রাস্তায় নামতে চেয়ে কলকাতা পুলিশর কাছে আবেদন করে বিজেপি নেতৃত্ব ৷ দাবি ছিল, মুরলীধর সেন লেনে দলের সদর দফতর থেকে একটি মিছিল করা হবে ৷ এবং তারপর বিজেপির 50 জন সদস্যকে নিয়ে ইন্ডিয়ান এয়ার লায়েন্সের দফতরের সামনে একটি অবস্থান করবেন দলের নেতারা ৷ কিন্তু কলকাতা পুলিশ সেই অনুমতি দেয়নি ৷
পুলিশের এই পদক্ষেপে বেজায় চটেছেন বিজেপি নেতা সায়ন্তন বসু ৷ এদিন সংবাদমাধ্যমের সামনে মুখ খুলেই কসবা টিকা কেলেঙ্কারিতে সিবিআই তদন্তের দাবি করেন তিনি ৷ তাঁর যুক্তি, শাসকদলের মদত না থাকলে কারও পক্ষে এভাবে নিজের ভুয়ো পরিচয় তৈরি করা সম্ভব নয় ৷ সায়ন্তনের প্রশ্ন, নকল টিকা নিয়ে যদি কেউ মারা যেতেন তখন কী হত ?
আরও পড়ুন : কলকাতা পুলিশের পাশাপাশি সিআইডিও জিজ্ঞাসাবাদ করতে পারে দেবাঞ্জনকে
এই প্রসঙ্গে কার্যত চক্রান্তের অভিযোগ তুলেছেন সায়ন্তন বসু ৷ তিনি বলেন, ‘‘ওই টিকা নিয়ে কেউ যদি মারা যেতেন, তাহলে তার সব দায় কেন্দ্রের ঘাড়েই ফেলত রাজ্য ৷ বলা হত, কেন্দ্র খারাপ টিকা পাঠিয়েছে বলেই মৃত্য়ু হয়েছে ৷’’ তবে কি কেন্দ্রকে বেকায়দায় ফেলতেই রাজ্য তথা শাসকদলের মদতে কসবায় ভুয়ো টিকাকরণের শিবির চালাচ্ছিলেন দেবাঞ্জন দেব (Debanjan Deb) ? সায়ন্তন সরাসরি তেমন কিছু না বললেও রাজ্য় সরকারের আওতাধীন তদন্ত প্রক্রিয়ায় তাঁর যে কোনও আস্থা নেই, তা স্পষ্ট করে দিয়েছেন তিনি ৷
আরও পড়ুন : ভুয়ো আইএএস অফিসার দেবাঞ্জনকে সঙ্গে নিয়ে ঘটনার পুননির্মাণ করল কলকাতা পুলিশ
সায়ন্তনের অভিযোগ, পুলিশ বা সিআইডি যদি এই ঘটনার তদন্ত করে, তাহলে তারা তৃণমূল নেতৃত্ব তথা রাজ্য সরকারকে আড়াল করতে চাইবে ৷ তাই গোটা ঘটনায় সিবিআই তদন্তের দাবিতে সরব হন তিনি ৷ একইসঙ্গে বিজেপির এই নেতা জানান, এদিন মাত্র 50 জন দলীয় সদস্যকে নিয়ে প্রতিবাদ কর্মসূচি পালন করতে চেয়েছিলেন তাঁরা ৷ কিন্তু পুলিশ তাঁদের মুরলীধর সেন লেনেই আটকে দেয় ৷ এর প্রতিবাদে আগামী দিনে 1 লাখ যুবককে নিয়ে লালবাজার ঘেরাও করা হবে ৷ সায়ন্তনের হুঁশিয়ারি, কলকাতা পুলিশের ক্ষমতা থাকলে সেদিনের সেই জমায়েত আটকে দেখাবে ৷