কলকাতা,24 ফেব্রুয়ারি : মঙ্গলবার দুপুরে অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্ত্রী রুজিরাকে সিবিআইয়ের জেরা ৷ আর রাতে মাদক কান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগে বিজেপির তরুণ তুর্কি রাকেশ সিংকে গ্রেফতার সিআইডির ৷ আপাতত রাজ্যে প্রধান দুই যুযুধান রাজনৈতিক দলের এই দুই ঘটনা সংবাদ শিরোনামে ৷ তৃণমূলের বর্তমান সেকেন্ড কমান্ডের স্ত্রীকে সিবিআইয়ের জেরার পাল্টা হিসাবে-ই রাকেশের গ্রেপ্তার কি-না এই নিয়ে রাজনৈতিক তরজাও উঠছে ৷ এবার ভোটে " খেলা হবে " বলে স্লোগান আর পাল্টা স্লোগানের আওয়াজ কিছুদিন ধরেই শোনা যাচ্ছে ৷ এই দুই বিপ্রতীপ ঘটনার মধ্যে সেই খেলা আছে কি না তা নিয়েও দ্বিধাবিভক্ত রাজনৈতিক মহল ৷ তবে এটা নিছক ঘটনা না খেলা তা নিয়ে বলার সময় এখনও আসেনি ৷
তবে, পামেলা ধরা পড়ার সময়ই রাকেশের নাম নিয়ে অনেক আগেই অস্বস্তি বাড়িয়েছিল গেরুয়া শিবিরের ৷ অন্যদিকে কয়লা কান্ডে অনুপ মাঝি ওরফে লালার নাম উঠে আসার পর থেকেই বিজেপি নেতারা অভিষেককে আরও বেশি করে টার্গেট করতে শুরু করে ৷ এই অনুপ মাজি বা লালা সামান্য মাছ ব্যবসায়ী থেকে কিভাবে কয়লা চোরা চালানের কিংপিন হয়ে উঠল সে বিষয়ে তদন্ত করছে সিবিআই ৷ পুরুলিয়ার নিতুড়িয়া ভামুরিয়া গ্রামের বাসিন্দা অনুপ মাঝি ওরফে লালা যুব তৃণমূলের নেতা শুধু নন, তাঁর সঙ্গে শাসক দলের শীর্ষ নেতৃত্বের কারও কারও যোগ নিয়েও বিস্তর আলোচনা চলছে রাজ্য রাজনীতিতে ৷ এমনকি কলকাতা হাইকোর্টে লালার জামিন আবেদন শুনানির সময় রাজ্যের তরফে এজি কিশোর দত্ত বলেন, "তদন্ত তখন হয়, যখন কোনও অপরাধ সংঘটিত হয়। কিন্তু এখানে এফআইআর-এ বলা হয়েছে যে, বিশ্বস্ত সূত্র খবর এসিএল এরিয়াতে কয়লা চোরাচালান ও পাচার সংক্রান্ত ব্যাপারে বড়সড় চক্র কাজ করছে। সেই ভিত্তিতে কারও বিরুদ্ধে কোনও তদন্ত করা যায়?" এজি কিশোর দত্ত-র এই কথা শুনে অ্যাডিশনাল সলিসিটর জেনেরাল বলেন," যদি ধরেই নেওয়া হয় দোষ কিছু নেই, তাহলে রাজ্য সরকার কেন এই তদন্ত আটকাতে চাইছে ? কয়লা কান্ডে লালার নাম উঠে আসার পর থেকেই বিজেপি নেতারা লাগাতার নিশানা করতে থাকেন অভিষেককে ৷ সে যাই হোক, মঙ্গলবারের বারবেলায় রুজিরাকে সিবিআই জেরা পরে রাতেই রাকেশের গ্রেপ্তার রাজনীতির পারদ আরও বাড়িয়ে তুলবে নিশ্চিত ৷ বিশেষ করে রাকেশ সিং আবার বিজেপির মুখ্য পর্যবেক্ষক কৈলাস বিজয়বর্গীয় আর বিজেপির সর্বভারতীয় সহ সভাপতি মুকুল রায়ের ঘনিষ্ঠ ৷
আরও পড়ুন :মোদির শিল্প-আশ্বাসের মোকাবিলায় নেত্রীর তুরুপের তাস কি সেই সিঙ্গুরই ?
রাকেশের বিজেপিতেও উত্থানও বেশ চমকপ্রদ ৷ দক্ষিণ কলকাতার কংগ্রেসের দাপুটে নেতা রাকেশ বিজেপি যোগ দেওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই গুরুত্ব পেয়ে যান ৷ 2019-এ শিবির বদলের পরের বছরেই বিজেপির রাজ্য কমিটির সদস্য হন রাকেশ ৷ মূলত দক্ষিণ কলকাতার সংগঠনের ভার রাকেশের উপরেই ন্যস্ত করা ছিল ৷ অন্যদিকে অনেকদিন আগেই কয়লা পাচার কান্ডে জড়িত থাকার অভিযোগ উঠেছে যুব তৃণমূলের সাধারণ সম্পাদক বিনয় মিশ্রর বিরুদ্ধে ৷ তাঁর বাড়িতেও তল্লাশি চালায় সিবিআই ৷ লালা প্রসঙ্গে মুখ খোলেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ ৷ রাজ্য সফরে এসে সাংবাদিক বৈঠকে অমিত শাহ বলেন, "লালার সঙ্গে তৃণমূলের সম্পর্ক কী?" রাজ্যে রাজনীতির উত্তাপ বাড়ছিল-ই ৷ এবার সেই উত্তাপ আরও বাড়বে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞরা ৷