কলকাতা, 26 অক্টোবর : 2019 সালের লোকসভা নির্বাচনে পশ্চিমবঙ্গে আশাতীত ফল করেছিল বিজেপি ৷ সেই সাফল্যের বুনিয়াদের উপর দাঁড়িয়ে 2021 সালের বিধানসভা নির্বাচনে এই রাজ্যে সরকার গড়ার স্বপ্ন দেখেছিল গেরুয়া শিবির ৷ সেই সাফল্য আসেনি ৷ তার পর বঙ্গে বিজেপির সংগঠনের হাল তলানিতে ৷ সম্প্রতি রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সঙ্ঘের তৈরি করা একটি রিপোর্টে এমনই তথ্য উঠে এসেছে ৷
যদিও এই নিয়ে আরএসএস বা বিজেপি নেতৃত্বের কেউই প্রকাশ্যে মুখ খুলতে নারাজ ৷ তবে গেরুয়া শিবিরের একটি সূত্রের বক্তব্য অনুযায়ী, ভোটের পর রাজ্যজুড়ে ক্রমশ বন্ধ হয়েছে জেলার প্রধান কার্যালয় ৷ মূলত শাসকদল তৃণমূল কংগ্রেসের চাপেই একের পর এক কার্যালয় বন্ধ হয়ে যাচ্ছে বলে ওই রিপোর্টে জানানো হয়েছে ৷ এমনকী, দলীয় কার্যালয়ে বিজেপির কর্মীদের আনাগোনাও ভোটের পর ক্রমশ কমেছে ৷
আরও পড়ুন : Alapan Bandyopadhyay : অবসরকালীন সুযোগ সুবিধার মামলা কলকাতায় রাখতে হাইকোর্টে আলাপন
ওই সূত্রের দাবি, সম্প্রতি আরএসএসের বঙ্গ শাখার প্রধান রমাপদ পালের সঙ্গে সরসঙ্ঘচালক মোহন ভাগবতের কথা হয় ৷ তার পরই এই সমীক্ষা রিপোর্ট তৈরি করার কাজে হাত দেওয়া হয় ৷ যে রিপোর্ট জমাও দেওয়া হয়ে গিয়েছে নাগপুরে ৷ কিন্তু রিপোর্টে যা আছে, তা বিজেপির জন্য যথেষ্ট চিন্তার ৷
জানা গিয়েছে যে ওই রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়েছে, একমাত্র উত্তরবঙ্গের কয়েকটি বিধানসভায় বিজেপির কার্যালয় খোলা আছে । বিধানসভা নির্বাচনে আশানুরূপ ফল না হওয়ায় বুথ, মণ্ডল ও জেলাস্তরে বিজেপির 60 শতাংশ কর্মী নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন । দক্ষিণবঙ্গে অবস্থা আরও খারাপ ৷ সেখানে বুথস্তরে সংগঠনের কাজ পুরোপুরি বন্ধ ।
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh : মুরলিধর সুকান্ত-শুভেন্দুময়, পদ খোয়াতেই পার্টি অফিস থেকে উধাও দিলীপের ছবি
গেরুয়া শিবিরের ওই সূত্রের দাবি, বঙ্গ বিজেপির 40টি সাংগঠনিক জেলার মধ্যে একমাত্র উত্তরবঙ্গে সামান্য কিছু জায়গায় বুথস্তরে সংগঠনের কাজ হচ্ছে । কলকাতার দু’টি সাংগঠনিক জেলায় দলের কোনও বড় কর্মসূচি হয়নি ভোটের পর । বর্তমানে অধিকাংশ জেলা সভাপতিও নিস্ক্রিয় হয়ে গিয়েছেন ৷
রিপোর্টে আশার খবর উল্লেখ করা হয়েছে, গেরুয়া শিবিরের অরাজনৈতিক সংগঠনগুলিকে নিয়ে ৷ বিশ্ব হিন্দু পরিষদ ও হিন্দু সংহতির মতো সংগঠনই এখন গোপনে সংগঠনের কাজ করছে । বিজেপির কর্মীরা বেশিরভাগ জায়গায় অরাজনৈতিক ব্যানারে সংগঠনের কাজ চালিয়ে যাচ্ছেন ।
আরও পড়ুন : Dilip Ghosh: 'গোয়া টালিগঞ্জ হবে না তো?' বাবুলকে তীব্র কটাক্ষ দিলীপের
কিন্তু তিন বছর পরই লোকসভা নির্বাচন ৷ 2024 সালের সেই লড়াইয়ে কি 2019-এর সাফল্য ধরে রাখা যাবে ? আরএসএসের মতে, সংগঠন আগের থেকে অনেকটাই শক্তিশালী হয়ে যাবে ততদিনে ৷ তাদের যুক্তি, বিধানসভা ভোটের আগে তৃণমূলের অনেকে বিজেপিতে এসেছিল ৷ এই কারণে দলের অনেক কর্মী ক্ষোভে নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছিলেন ৷ তাঁরা আবার দলের কাজে ফিরে আসবেন ৷
তাছাড়া তারা মনে করছে, তৃণমূল সরকারের বিরুদ্ধে ক্ষোভ তিন বছরে আরও বাড়বে । এছাড়া লক্ষ্মীর ভাণ্ডার, স্বাস্থ্যসাথী, দুয়ারে রেশনের মতো জনমুখী প্রকল্পগুলি বন্ধ হলে বা এই প্রকল্পগুলির সুবিধা থেকে সাধারণ মানুষ বঞ্চিত হলে ক্ষোভ বাড়বে । সেই ক্ষোভ 2024 সালের লোকসভা ভোটে তার প্রভাব দেখা যাবে বলে আশা গেরুয়া শিবিরের ।
আরও পড়ুন : BJP : ধর্ষণ মামলায় কৈলাসদের রক্ষাকবচের মেয়াদ বাড়াল হাইকোর্ট
বাংলায় আরএসএস-এর প্রধান রমাপদ পাল ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, সঙ্ঘ বাংলায় সংগঠনের কাজ শুরু করেছে । আগামিদিনে জেলায় জেলায় আরএএস-কে শক্তিশালী করতে একাধিক কর্মসূচি নেওয়া হচ্ছে ।