ETV Bharat / city

প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? - মমতা বন্দ্য়োপাধ্য়ায়

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে প্রশান্ত কিশোর কি আদৌ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসন্ন নির্বাচনি বৈতরণী পার করতে পারবেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সচিবালয়ে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে । অন্য দেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ । বহু ভাষাভাষী মানুষের বাস এ রাজ্যে । এই রাজ্য সম্পর্কে কতটা জানেন প্রশান্ত কিশোর, প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যেও ।

প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের?
author img

By

Published : Sep 23, 2019, 4:22 AM IST

কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর : প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? সাম্প্রতিককালের বেশ কিছু ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রশান্ত কিশোর তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে । তা থেকেই নাকি মতানৈক্য ৷ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্কের তিক্ততার কারণে নাকি 'দিদিকে বলো' কর্মসূচিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে প্রশান্ত কিশোর কি আদৌ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসন্ন নির্বাচনি বৈতরণী পার করতে পারবেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সচিবালয়ে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে । অন্য দেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ । বহু ভাষাভাষী মানুষের বাস এ রাজ্যে । এই রাজ্য সম্পর্কে কতটা জানেন প্রশান্ত কিশোর, প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যেও ।

সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোরের টিম মধ্যরাতে, গভীর রাতে, এমন কী ভোররাতেও বিধায়কদের ফোন করে রীতিমত নির্দেশ দিচ্ছেন । জনসংযোগ বাড়ানো এবং এলাকায় আরও বেশি করে যাওয়ার জন্য বিধায়কদের নির্দেশ দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোরের টিমের ছেলেমেয়েরা । এই ঘটনায় যারপরনাই বেজায় ক্ষুব্ধ জনপ্রতিনিধিরা ।

সূত্রের খবর, নবান্নের 14 তলা থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন । শোনা যায়, 450 কোটি টাকা দিয়ে প্রশান্ত কিশোরকে মুখ্যমন্ত্রী তার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে রেখেছেন । কিন্তু ইদানিংকালে মুখ্যমন্ত্রী প্রশান্ত কিশোরের কথা আর শুনছেন না । প্রশান্ত কিশোর যা যা বুদ্ধি দিচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী সেগুলি গ্রহণ করছেন না । প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধি এ রাজ্যের সবকটি ক্ষেত্রে কৃতকার্য না হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে উপেক্ষা করছেন ।

এরাজ্যের মাটিতে প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধির বাস্তব প্রয়োগ যে হবে না সেটা মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের । মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অনেকেই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে এত কোটি টাকার দুর্নীতি আগে জানলে, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হতেন না প্রশান্ত কিশোর ।

''দিদিকে বলো'' কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক । কোনওভাবেই সরকারি কর্মসূচি নয় । আট জনের টিম এই কর্মসূচিতে প্রশান্ত কিশোরের হয়ে কাজ করছেন । অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে যে কাজ করার কথা বেসরকারি জায়গা থেকে, নবান্নে জন অভিযোগ কেন্দ্র থেকেই তা পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । খাদি ভবন থেকে এখন এই কর্মসূচি চলছে বলে জানা গিয়েছে । সমগ্র বিষয়টিতে দুজন IAS অফিসারকে বাধা দেওয়ায় তাদেরকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । খাদি ভবনের এই জন অভিযোগ কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল থেকে ''দিদিকে বলো''-র টিম বসে থাকে।

সরকারি অফিসে ঢুকে পড়ছে রাজনৈতিক একটি কর্মসূচির দল । অন্যদিকে ''দিদিকে বলো'' কর্মসূচিতে ওয়েবেলকে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে । প্রযুক্তিগত এবং লোক বল সবটাই ওয়েবেলকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী সচিবালয় থেকেই । ওয়েবেল সরকার পোষণ করা একটি সংস্থা । ''দিদিকে বলো'' টিমকে পুরোপুরি সাপোর্ট দিচ্ছে তারা । বিরোধীরা জানাচ্ছেন, এই সরকার যখন ক্ষমতাচ্যুত হবে তখন এই জালিয়াতি নিয়ে CBI তদন্ত হবে । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থা তখন হবে রাজীব কুমারের মতো ।

ইতিমধ্যেই প্রশান্ত কিশোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইদানীংকালের কিছু ঘটনায় ক্ষুব্ধ। যেমন, সাম্প্রতিককালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঁথি থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত হেঁটেছিলেন নাগরিকপঞ্জি বিরুদ্ধে । রাস্তায় হাঁটার জন্য পথের দু'পাশে ব্যারিকেড করার জন্য কলকাতা কর্পোরেশন একদিনে 15 লক্ষ টাকা খরচ করেছিল । এই খবর প্রশান্ত কিশোরের কানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি । শোনা যাচ্ছে, সেখানে থেকেই মমতার সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে তাঁর ।

রাজ্যের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গুলিতে 34 হাজার আসন রয়েছে । চলতি বছরে ভর্তির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে, দেখা যাচ্ছে, মাত্র 9 হাজার পড়ুয়া সেখানে ভর্তি হয়েছে । কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসছেন না । ওয়ার্ড মাস্টারের চাকরির জন্য ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আবেদন করছেন । কেন এই অবস্থা? এই প্রশ্ন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নাকি করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর । বিষয়টি নাকি ভালোভাবে নেননি তৃণমূল সুপ্রিমো । সূত্র বলছে, প্রশান্ত কিশোর অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের উপরেও সন্তুষ্ট নন । অমিত মিত্রের তথ্যের বিভ্রান্তি নিয়ে চটেছেন তিনি ।

গত সাড়ে আট বছরে সাড়ে ছ'লক্ষ সরকারি চাকরি হয়েছে এরাজ্যের মানুষের । অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের এই বক্তব্যের বাস্তবতা জানতে চেয়েছেন প্রশান্ত কিশোর । গোল বেঁধেছে তাতেই ।

কলকাতা, 23 সেপ্টেম্বর : প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে সম্পর্কে ফাটল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের? সাম্প্রতিককালের বেশ কিছু ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রশান্ত কিশোর তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে । তা থেকেই নাকি মতানৈক্য ৷ তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে প্রধান রাজনৈতিক উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরের সম্পর্কের তিক্ততার কারণে নাকি 'দিদিকে বলো' কর্মসূচিতে সমস্যা তৈরি হচ্ছে ৷

রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে প্রশান্ত কিশোর কি আদৌ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসন্ন নির্বাচনি বৈতরণী পার করতে পারবেন? মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সচিবালয়ে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে । অন্য দেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ । বহু ভাষাভাষী মানুষের বাস এ রাজ্যে । এই রাজ্য সম্পর্কে কতটা জানেন প্রশান্ত কিশোর, প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যেও ।

সূত্রের খবর, প্রশান্ত কিশোরের টিম মধ্যরাতে, গভীর রাতে, এমন কী ভোররাতেও বিধায়কদের ফোন করে রীতিমত নির্দেশ দিচ্ছেন । জনসংযোগ বাড়ানো এবং এলাকায় আরও বেশি করে যাওয়ার জন্য বিধায়কদের নির্দেশ দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোরের টিমের ছেলেমেয়েরা । এই ঘটনায় যারপরনাই বেজায় ক্ষুব্ধ জনপ্রতিনিধিরা ।

সূত্রের খবর, নবান্নের 14 তলা থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত তার রাজনৈতিক উপদেষ্টা, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন । শোনা যায়, 450 কোটি টাকা দিয়ে প্রশান্ত কিশোরকে মুখ্যমন্ত্রী তার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে রেখেছেন । কিন্তু ইদানিংকালে মুখ্যমন্ত্রী প্রশান্ত কিশোরের কথা আর শুনছেন না । প্রশান্ত কিশোর যা যা বুদ্ধি দিচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী সেগুলি গ্রহণ করছেন না । প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধি এ রাজ্যের সবকটি ক্ষেত্রে কৃতকার্য না হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁকে উপেক্ষা করছেন ।

এরাজ্যের মাটিতে প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধির বাস্তব প্রয়োগ যে হবে না সেটা মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের । মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অনেকেই বলছেন, পশ্চিমবঙ্গে এত কোটি টাকার দুর্নীতি আগে জানলে, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হতেন না প্রশান্ত কিশোর ।

''দিদিকে বলো'' কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক । কোনওভাবেই সরকারি কর্মসূচি নয় । আট জনের টিম এই কর্মসূচিতে প্রশান্ত কিশোরের হয়ে কাজ করছেন । অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে যে কাজ করার কথা বেসরকারি জায়গা থেকে, নবান্নে জন অভিযোগ কেন্দ্র থেকেই তা পালন করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী । খাদি ভবন থেকে এখন এই কর্মসূচি চলছে বলে জানা গিয়েছে । সমগ্র বিষয়টিতে দুজন IAS অফিসারকে বাধা দেওয়ায় তাদেরকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ । খাদি ভবনের এই জন অভিযোগ কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল থেকে ''দিদিকে বলো''-র টিম বসে থাকে।

সরকারি অফিসে ঢুকে পড়ছে রাজনৈতিক একটি কর্মসূচির দল । অন্যদিকে ''দিদিকে বলো'' কর্মসূচিতে ওয়েবেলকে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে । প্রযুক্তিগত এবং লোক বল সবটাই ওয়েবেলকে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী সচিবালয় থেকেই । ওয়েবেল সরকার পোষণ করা একটি সংস্থা । ''দিদিকে বলো'' টিমকে পুরোপুরি সাপোর্ট দিচ্ছে তারা । বিরোধীরা জানাচ্ছেন, এই সরকার যখন ক্ষমতাচ্যুত হবে তখন এই জালিয়াতি নিয়ে CBI তদন্ত হবে । রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থা তখন হবে রাজীব কুমারের মতো ।

ইতিমধ্যেই প্রশান্ত কিশোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইদানীংকালের কিছু ঘটনায় ক্ষুব্ধ। যেমন, সাম্প্রতিককালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঁথি থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত হেঁটেছিলেন নাগরিকপঞ্জি বিরুদ্ধে । রাস্তায় হাঁটার জন্য পথের দু'পাশে ব্যারিকেড করার জন্য কলকাতা কর্পোরেশন একদিনে 15 লক্ষ টাকা খরচ করেছিল । এই খবর প্রশান্ত কিশোরের কানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি । শোনা যাচ্ছে, সেখানে থেকেই মমতার সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে তাঁর ।

রাজ্যের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গুলিতে 34 হাজার আসন রয়েছে । চলতি বছরে ভর্তির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে, দেখা যাচ্ছে, মাত্র 9 হাজার পড়ুয়া সেখানে ভর্তি হয়েছে । কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসছেন না । ওয়ার্ড মাস্টারের চাকরির জন্য ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আবেদন করছেন । কেন এই অবস্থা? এই প্রশ্ন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নাকি করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর । বিষয়টি নাকি ভালোভাবে নেননি তৃণমূল সুপ্রিমো । সূত্র বলছে, প্রশান্ত কিশোর অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের উপরেও সন্তুষ্ট নন । অমিত মিত্রের তথ্যের বিভ্রান্তি নিয়ে চটেছেন তিনি ।

গত সাড়ে আট বছরে সাড়ে ছ'লক্ষ সরকারি চাকরি হয়েছে এরাজ্যের মানুষের । অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের এই বক্তব্যের বাস্তবতা জানতে চেয়েছেন প্রশান্ত কিশোর । গোল বেঁধেছে তাতেই ।

Intro:প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে মতানৈক্য মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের। সাম্প্রতিককালের বেশ কিছু ঘটনা নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করেছেন প্রশান্ত কিশোর তাঁর ঘনিষ্ঠ মহলে। তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক প্রধান উপদেষ্টা প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে এবার সম্পর্কের তিক্ততা তৈরি হচ্ছে বলে জানা গিয়েছে। সেই কারণেই 'দিদিকে বলো' কর্মসূচিতে ইদানিং কিছুটা ভাটা লক্ষ্য করা যাচ্ছে।


Body:রাজনৈতিক মহলে গুঞ্জন শুরু হয়েছে প্রশান্ত কিশোর কি আদৌ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে আসন্ন নির্বাচনি বৈতরণী পার করতে পারবেন? প্রশান্ত কিশোরের অতীত অভিজ্ঞতা থেকে রাজনৈতিক মহলের ধারণা, সর্বত্র সফল হননি প্রশান্ত কিশোর।
মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সচিবালয়ে প্রশান্ত কিশোরকে নিয়ে চাপা উত্তেজনা রয়েছে। অন্যান্য রাজ্যের সঙ্গে এ রাজ্যের সামগ্রিক পার্থক্য রয়েছে। অন্য দেশের সীমান্তবর্তী একটি রাজ্য পশ্চিমবঙ্গ। বহু ভাষাভাষী মানুষের বাস এ রাজ্যে। এই রাজ্য সম্পর্কে কতটা জানেন প্রশান্ত কিশোর, প্রশ্ন উঠেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের মন্ত্রিসভার সদস্যদের মধ্যেও।
প্রশান্ত কিশোরীর টিম মধ্যরাতে, গভীর রাতে, এমনকি ভোররাতেও বিধায়কদের ফোন করে রীতিমত নির্দেশ দিচ্ছেন। জনসংযোগ বাড়ানো এবং এলাকায় আরও বেশি করে যাওয়ার জন্য বিধায়কদের নির্দেশ দিচ্ছেন প্রশান্ত কিশোরের টিমের ছেলেমেয়েরা। এই ঘটনায় যারপরনাই বেজায় ক্ষুব্ধ হচ্ছেন জনপ্রতিনিধিরা। তারা রীতিমতো বিরক্ত প্রশান্ত কিশোর এই টিমের উপর।
সূত্রের খবর, নবান্নের চৌদ্দ তলা থেকে মুখ্যমন্ত্রী নিয়মিত তার রাজনৈতিক ওঝা, প্রশান্ত কিশোরের সঙ্গে যোগাযোগ রাখেন। শোনা যায় ৪৫০ কোটি টাকা দিয়ে প্রশান্ত কিশোরকে মুখ্যমন্ত্রী তার রাজনৈতিক পরামর্শদাতা হিসেবে রেখেছেন। কিন্তু ইদানীংকালে মুখ্যমন্ত্রী প্রশান্ত কিশোরের কথা আর শুনছেন না। প্রশান্ত কিশোর যা যা বুদ্ধি দিচ্ছেন, মুখ্যমন্ত্রী সেগুলি গ্রহণ করছেন না। অথবা প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধি এ রাজ্যের সবকটি ক্ষেত্রে কৃতকার্য না হওয়ায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাকে উপেক্ষা করছেন।
অর্থাৎ এরাজ্যের মাটিতে প্রশান্ত কিশোরের বুদ্ধির বাস্তব প্রয়োগ যে হবে না সেটা মুখ্যমন্ত্রী বুঝতে পেরেছেন বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের। মুখ্যমন্ত্রীর সচিবালয়ের অনেকেই কানাঘুষো করছেন, পশ্চিমবঙ্গে এত কোটি টাকার দুর্নীতি আগে প্রশান্ত কিশোর জানলে, তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের রাজনৈতিক উপদেষ্টা হতেন না।
দিদিকে বলো কর্মসূচি সম্পূর্ণভাবে রাজনৈতিক। কোনোভাবেই সরকারি কর্মসূচি নয়। আট জনের টিম দিদিকে বলো কর্মসূচিতে প্রশান্ত কিশোরের হয়ে কাজ করছেন। অভিযোগ, রাজনৈতিক দলের কর্মসূচিতে যে কাজ করার কথা বেসরকারি জায়গা থেকে, তা করার জন্য নবান্নে জন অভিযোগ কেন্দ্র থেকেই তা করার নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী। খাদি ভবন থেকে এখন এই কর্মসূচি চলছে বলে জানা গিয়েছে। সমগ্র বিষয়টিতে দুজন আই এ এস অফিসারকে বাধা দেওয়ায় তাদেরকে বদলি করে দেওয়া হয়েছে বলে অভিযোগ। খাদি ভবনের এই জন অভিযোগ কেন্দ্রে প্রতিদিন সকাল থেকে দিদিকে বলোর টিম বসে থাকে। অর্থাৎ সরকারি অফিসে ঢুকে পড়ছে রাজনৈতিক একটি কর্মসূচির দল। অন্যদিকে দিদিকে বলো কর্মসূচিতে ওয়েবেল কে যুক্ত করা হয়েছে বলে জানা যাচ্ছে। প্রযুক্তিগত এবং লোক বল সবটাই ওয়েবেলকে করে দেওয়ার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে মুখ্যমন্ত্রী সচিবালয় থেকেই। ওয়েবেল সরকার পোষিত একটি সংস্থা। দিদিকে বলো টিমকে পুরোপুরি সাপোর্ট দিচ্ছে তারা। সরকারি অলিখিত নির্দেশে। অর্থাৎ সরকার এক্ষেত্রে একটি রাজনৈতিক সংস্থার আর্থিক দায়ভার অলিখিত ভাবে ভোট গ্রহণ করল। বিরোধীরা জানাচ্ছেন, এই সরকার যখন ক্ষমতাচ্যুত হবে তখন এই জালিয়াতি নিয়ে সিবিআই তদন্ত হবে। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবস্থা তখন হবে রাজীব কুমারের মতো।
ইতিমধ্যেই প্রশান্ত কিশোর মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ইদানীংকালের কিছু ঘটনায় ক্ষুব্ধ। যেমন, সাম্প্রতিককালে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সিঁথি থেকে শ্যামবাজার পর্যন্ত হেঁটেছিলেন নাগরিকপঞ্জি বিরুদ্ধে। রাস্তায় হাঁটার জন্য পথের দু'পাশে ব্যারিকেড করার জন্য কলকাতা কর্পোরেশন একদিনে ১৫ লক্ষ টাকা খরচ করেছিল। এই খবর প্রশান্ত কিশোরের কানে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে বেজায় ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন তিনি। শোনা যাচ্ছে, সেখানে থেকেই মমতার সঙ্গে সম্পর্কে চিড় ধরে তাঁর।
রাজ্যের বেসরকারি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজ গুলিতে ৩৪ হাজার আসন রয়েছে। চলতি বছরে ভর্তির মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে, দেখা যাচ্ছে, মাত্র ৯ হাজার পড়ুয়া সেখানে ভর্তি হয়েছে। কেউ ইঞ্জিনিয়ারিং পড়তে আসছে না। ওয়ার্ড মাস্টারের চাকরির জন্য ইলেকট্রিক্যাল এবং মেকানিক্যাল ইঞ্জিনিয়ার আবেদন করছেন। কেন এই অবস্থা? এই প্রশ্ন সরাসরি মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেই নাকি করেছিলেন প্রশান্ত কিশোর। বিষয়টিকে ভালোভাবে নেয়নি তৃণমূল সুপ্রিমো। প্রশান্ত কিশোর অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের ওপরেও সন্তুষ্ট নন। অমিত মিত্রের তথ্যের জাগলারির ওপর চটেছেন তিনি।
গত সাড়ে আট বছরে সাড়ে ছ'লক্ষ সরকারি চাকরি হয়েছে এরাজ্যের মানুষের। অর্থমন্ত্রী অমিত মিত্রের এই বক্তব্যের বাস্তবতা জানতে চেয়েছেন প্রশান্ত কিশোর। আর গোল বেধেছে তাতেই।


Conclusion:
ETV Bharat Logo

Copyright © 2025 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.