কলকাতা, 8 সেপ্টেম্বর: রাজ্য়ের বহু ক্লাবেরই দুর্গাপুজোর (Durga Puja) বাজেট কয়েক কোটি টাকা (Big Budget) ! তাহলে তাদের কেন সরকারি অনুদান দেওয়া হবে ? দুর্গাপুজোয় সরকারি অনুদান (Government Grant) সংক্রান্ত মামলায় এই প্রশ্ন তুললেন মামলাকারীরা ৷ বৃহস্পতিবার কলকাতা হাইকোর্টের (Calcutta High Court) প্রধান বিচারপতি প্রকাশ শ্রীবাস্তবের (Justice Prakash Shrivastava) বেঞ্চে মামলাটি শুনানির জন্য ওঠে ৷ সেখানে আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্টাচার্য (Bikash Ranjan Bhattacharya) বলেন, আদতে কোন পুজো কমিটিগুলির টাকার প্রয়োজন আছে, তা খতিয়ে দেখা হোক ৷ এভাবে সবাইকে টাকা দেওয়া বন্ধ করা হোক ৷ শুনানি শেষে রায়দান স্থগিত রেখেছে আদালত ৷
এদিনের মামলার শুনানিতে বিকাশরঞ্জন বলেন, "রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী সরাসরি দুর্গাপুজোয় অনুদানের নামে টাকা দিচ্ছেন ৷ এক্ষেত্রে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়কে অনুদান দেওয়া হচ্ছে ৷ যা দেশের সংহতি এবং সংবিধানের বিরোধী ৷ এতে একটি নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হচ্ছে ৷ রাজ্যের মানুষের করের টাকা এভাবে খরচ করতে পারেন না মুখ্যমন্ত্রী ৷ জনগণের টাকা কোনওভাবেই অন্য কোনও খাতে খরচ করা যায় না ৷ এর জন্য রাজ্যপালের অনুমতি থাকা আবশ্যিক ৷ কিন্তু রাজ্য যে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে, তা একেবারেই বিভাগীয় তথ্য আদানপ্রদানের সমতুল্য ৷ তাছাড়া, ইউনেস্কো কলকাতার দুর্গাপুজোকে হেরিটেজ তকমা দিয়েছে বলেই রাজ্য সরকার কোষাগার থেকে টাকা খরচ করতে পারে না ৷ হাইকোর্ট ইমাম ভাতা বন্ধ করার নির্দেশ দিয়েছিল ৷ কারণ, সেখানেও নির্দিষ্ট সম্প্রদায়ের প্রতি পক্ষপাতমূলক আচরণ করা হচ্ছিল ৷" এই একই যুক্তিতে দুর্গাপুজোয় অনুদান বন্ধের পক্ষে সওয়াল করেন বিকাশরঞ্জন ৷
আরও পড়ুন: কারণ না জেনেই দুর্গাপুজো নিয়ে মিছিল পঞ্চায়েত প্রধানের, তোপ দাগল বিজেপি
আর এক মামলাকারীর তরফে আইনজীবী শমীক বাগচি বলেন, "যদি একান্তই অর্থসাহায্য করতে হয়, তাহলে যাঁদের সত্যিই অনুদানের প্রয়োজন কেবলমাত্র তাঁদেরই তা দেওয়া হোক ৷ বহু ক্লাব রয়েছে যাদের বাজেট কোটি কোটি টাকা ৷ তাদের কেন 60 হাজার টাকা করে রাজ্যের কোষাগার থেকে অনুদান দেওয়া হবে ?"
এরই প্রেক্ষিতে রাজ্যের অ্য়াডভোকেট জেনারেল সৌমেন্দ্রনাথ মুখোপাধ্যায় দাবি করেন, পুলিশ ও প্রশাসনের সঙ্গে সাধারণ মানুষের সংযোগ বৃদ্ধি করাই রাজ্য সরকারের প্রধান লক্ষ্য ৷ যা করা হচ্ছে, পুরোটাই জনস্বার্থে করা হচ্ছে ৷ রাজ্যের ঐতিহ্য সংরক্ষণ ও তার প্রচার করাই হল রাজ্য সরকারের উদ্দেশ্য ৷ রাজ্যের আরও যুক্তি, ইমাম ভাতার সঙ্গে দুর্গাপুজোর অনুদানকে গুলিয়ে ফেললে চলবে না ৷ কারণ, ইমাম ভাতার সঙ্গে নির্দিষ্ট ব্যক্তিরা জড়িত রয়েছেন ৷ যাঁরা মসজিদে কাজ করেন ৷ কিন্তু, দুর্গাপুজো একটি জাতির প্রধান ও সার্বিক উৎসব ৷
এরপর প্রধান বিচারপতি জানতে চান, অনুদানের টাকা যে সঠিক খাতে খরচ করা হচ্ছে, তার প্রমাণ কী ? জবাবে অ্য়াডভোকেট জেনারেল জানান, প্রত্যেক ক্লাবের কাছ থেকে খরচ সংক্রান্ত রিপোর্ট চাওয়া হয়েছে ৷ সেগুলি পুলিশ খতিয়ে দেখবে ৷ সব শেষে প্রধান বিচারপতি মামলাকারীদের আইনজীবী বিকাশরঞ্জন ভট্রাচার্যের কাছ অনুদানের টাকা খরচের রূপরেখা সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব চান ৷ বিকাশ জানান, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন এই ধরনের কাজ করে ৷ প্রয়োজনে তাদের দায়িত্ব দেওয়া যেতে পারে ৷