কলকাতা 8 নভেম্বর: পরিকল্পনা ছাড়াই রাজ্যে নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুল চালুর অভিযোগে কলকাতা হাইকোর্টে দায়ের হল জনস্বার্থ মামলা।
মামলাকারী সুদীপ ঘোষচৌধুরীর বক্তব্য, রাজ্যে এই মুহূর্তে করোনা পরিস্থিতির অবনতি হচ্ছে। ঠিক সে সময়েই নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত স্কুল চালুর পরিকল্পনা করেছে রাজ্য। রাজ্যের বিজ্ঞপ্তি অনুযায়ী প্রতিদিন সকাল 9টা 30 থেকে বিকেল 3টে 30 পর্যন্ত নবম ও একাদশ শ্রেণি এবং 10টা থেকে বিকেল 4টে 30 পর্যন্ত দশম ও দ্বাদশ শ্রেণীর ক্লাস নেওয়া হবে। করোনা-বিধি মেনেই চলবে স্কুল।
কিন্তু মামলাকারীর দাবি, এই সকল ছাত্র-ছাত্রীদের এখনও ভ্যাকসিন হয়নি। ফলত এদের অসুস্থ হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই পরিস্থিতিতে রাজ্যের উচিৎ বিশেষজ্ঞদের নিয়ে একটি কমিটি গঠন করা এবং সেই কমিটি সময় কমিয়ে কিভাবে স্কুল চালু রাখা যায় তার সুপারিশ করুক। নইলে এই পরিস্থিতি পড়ুয়াদের জন্য প্রাণঘাতী হতে পারে বলে আশঙ্কা প্রকাশ করেছেন মামলাকারী।
উল্লেখ্য, গত 29 অক্টোবর রাজ্যের মধ্যশিক্ষা পর্ষদ প্রত্যেকটি স্কুলের প্রধান শিক্ষককে একটি চিঠিতে জানিয়েছিলেন, আগামী 16 নভেম্বর থেকে নবম-দ্বাদশ শ্রেণী পর্যন্ত স্বাভাবিক পঠন-পাঠনের পরিকল্পনা করেছে রাজ্য। কোভিড-19 প্রোটোকল মেনে ছাত্র-ছাত্রীদের ক্লাসের ব্যবস্থা করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বিজ্ঞপ্তিতে। তার আগে সমস্ত স্কুল-বাড়ি স্য়ানিটাইজ করার কথা বলা হয়েছে ৷ সমস্ত ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষক ও শিক্ষক কর্মচারীদের দূরত্ববিধি মানা এবং মাস্ক ব্যবহার করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে ৷ পাশাপাশি ছাত্র-ছাত্রীদের সচেতন করতে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে স্কুলগুলোকে।
আরও পড়ুন : তদন্ত শেষ না হলে ক্ষতিপূরণ নয়, ভোট পরবর্তী হিংসা মামলার শুনানিতে হাইকোর্ট
কিন্তু মামলাকারীর বক্তব্য, প্রতিটি স্কুলে যে পরিমাণ ছাত্র-ছাত্রী রয়েছে তাতে দূরত্ব বিধি মেনে আদৌ স্কুলে আসা কতটা সম্ভব, সে ব্যাপারে রাজ্য সরকার ভাল করে খতিয়ে না দেখেই স্কুল খোলার পদক্ষেপ করেছে। ছাত্র-ছাত্রীদের স্বার্থে আদালতের উচিত পুরো বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় নির্দেশিকা প্রদান করা
প্রসঙ্গত, করোনা পরিস্থিতির কারণে বিগত প্রায় দু'বছর ধরে রাজ্যের সরকারি ও সরকার-পোষিত স্কুলের পঠন-পাঠন কার্যত বন্ধ রয়েছে। কিছু কিছু স্কুলে অনলাইনে ক্লাসের ব্যবস্থা থাকলেও ছাত্র-ছাত্রীদের অংশগ্রহণ প্রায় নেই বললেই চলে। শিক্ষকরা ছাত্র-ছাত্রীদের মিড-ডে মিল ও বিভিন্ন ধরনের প্রশাসনিক কাজের জন্য প্রত্যেক মাসের নির্দিষ্ট কয়েকটা দিন স্কুলে আসেন। এই পরিস্থিতিতে ফের স্কুলে স্বাভাবিক পঠন-পাঠন শুরু হবে এই ভেবে খুশি হয়েছিলেন অভিভাবকরা। কিন্তু এই মামলার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত কী নির্দেশ প্রদান করে সেটাই দেখার।