কলকাতা, 5 মে: তীব্র গরমে আবারও ছুটি পড়ে গেল সরকারি স্কুলগুলিতে (Bengal schools shut)। গরম থেকে পড়ুয়াদের বাঁচাতে বেসরকারি স্কুলগুলিতে হয় ছুটি দেওয়া হয়েছে, নয়তো অনলাইনে ক্লাস চালু হয়েছে আবার । দু'বছর পর স্কুল খোলায় পুলকার ও স্কুলবাস মালিকরা যাও বা ব্যবসাগতভাবে একটু লক্ষ্মী লাভের আশা করেছিল, তাতে আবার চিড় ধরল (Pool car, school bus business crisis)৷
করোনার দ্বিতীয় ঢেউ সামলে রাজ্যে ফেব্রুয়ারি মাস থেকে আবার স্কুল চালু হয়েছিল । তবে তীব্র দাবদাহ থেকে কচিকাঁচা ও পড়ুয়াদের বাঁচাতে গত 2 মে থেকে গরমের ছুটি চালু হয়েছে । পাশাপাশি বেসরকারি স্কুলে কোথাও চলছে পরীক্ষা আবার কোথাও চলছে অনলাইনে পঠনপাঠন। অন্যদিকে এই মাস থেকেই গরমের ছুটি শুরু হবে বেসরকারি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলোতে । তাই আপাতত স্কুলে যাবে না কেউ (pool car school bus business again reeling under economic crisis)।
দীর্ঘ সময় বন্ধ ছিল স্কুল । তাই পুলকার ও স্কুলবাসের ব্যবসা একেবারেই বন্ধ হয়ে গিয়েছিল । রাজ্যে স্কুলগুলি খুলতে পুনরায় ব্যবসা চাঙ্গা করার যে একটা পথ খুঁজে পেয়েছিল মালিকরা তা আবারও অন্ধকারে । তবে এর আগেও মালিকপক্ষ জানিয়েছিল যে, ফেব্রুয়ারি মাসে স্কুল খুললেও বহু পড়ুয়া নিজেদের গাড়িতে করেই যাতায়াত করেছে । আর গরম পড়ায় অনেকে স্কুলে যায়নি । তাই স্বাভাবিক ভাবেই পড়ুয়াদের সংখ্যা কমেছে স্কুলবাসে ও পুলকারে ।
করোনাকালে ব্যবসা একেবারে বন্ধ হয়ে যাওয়ায় কোনও উপার্জন হয়নি তাঁদের । তাই গাড়িগুলির মেরামত থেকে শুরু করে কর ও বিমার অর্থ বাকি পড়েছে । তাই যেই মালিকদের পাঁচটি বা ছয়টি করে গাড়ি, তাঁরা একটি বা দুটি করে গাড়ি নামাচ্ছেন । পাশাপাশি জ্বালানির অস্বাভাবিক দাম । এই দুয়ে জেরবার অবস্থা গাড়ির মালিকদের । অন্যান্য যানবহন রাস্তায় নামলেও এখনও পর্যন্ত মোটে 10 থেকে 15 শতাংশ পুলকার ও বাস পথে নামতে পেরেছিল ।
আরও পড়ুন: Tolly Stars Reaction on school Opening : সব চললেও বন্ধ স্কুল, এবার মুখ খুলল টলিউড
ওয়েস্ট বেঙ্গল কন্ট্রাক্ট ক্যারেজ ওনার্স অ্যান্ড অপারেটরস অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক হিমাদ্রি গঙ্গোপাধ্যায় বলেন, "যেই গাড়িগুলির আর্থিক কারণে ইন্সুরেন্স, রোড ট্যাক্স বাকি পড়ে গিয়েছিল, সংগঠনের পক্ষ থেকে কিস্তির মাধ্যমে আর্থিক সহায়তা করে তার নবীকরণ করিয়ে আবার ফেব্রুয়ারি মাস থেকে পথে নামানো হয় । কিন্তু গরমের কারণে পুনরায় স্কুল বন্ধ হয়েছে । কোনও কোনও স্কুলে আবার অনলাইনে পঠনপাঠন ফিরেছে । আবার আমাদের ব্যবসা বন্ধ হয়ে গেল । তাই মালিকপক্ষ যে আর্থিক অভাবের মধ্যে ছিল সেটা যদিও বা কাটার একটা উপায় হয়েছিল, কিন্তু তা আবার বন্ধ হয়ে গেল । ঋণের বোঝা আরও বেড়ে গেল আমাদের উপরে ।"
পুলকার ওনার ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক সুদীপ দত্ত বলেন, "অতিমারিতে পুলকার বসেছিল বলে বহু চালক অন্যান্য ব্যবসায় চলে গিয়েছে । এরপরে আবার যখন রাজ্যে স্কুল খুলল, তখন প্রতিদিন টাকার হিসেবে চালকদের নিয়োগ করা হয় । এরপর গত মাস থেকেই আবার স্কুলগুলি স্বাভাবিক ছন্দে ফিরছে দেখে মাসিক বেতন ভিত্তিতে চালক নিয়োগ করা শুরু হয় । তবে আবার ছুটি পড়ে গেল । এ বার আমাদের সামনে সব থেকে বড় চিন্তার বিষয় হল যে, যেই চালকদের নিয়োগ করা হয়েছে তাঁদের বেতন মেটাব কী করে ? সঙ্গে রয়েছে গাড়ির মেইনটেনেন্স ও তেল খরচ । অর্থাৎ এতদিন যে সমস্যায় জর্জরিত ছিলাম, সেই একই সমস্যার মধ্যে পুনরায় পড়ে গেলাম ।"
এমনিতেই স্কুল গাড়িতে পড়ুয়াদের সংখ্যা অপ্রতুল । একটি 13 আসনের গাড়িতে আগে প্রায় 14 জন পড়ুয়া যেত, এখন সেখানে যাচ্ছিল 3 থেকে 4 বা 5 জন পড়ুয়া ।