কলকাতা, 2 অগস্ট : হেভিওয়েট পার্থ চট্টোপাধ্যায় (Partha Chatterjee) ৷ রাজনৈতিক দিক থেকে বটেই ! চেহারার দিক থেকে তাঁর নামের আগে এই বিশেষণ বসালে অত্যুক্তি করা হবে না ৷ এহেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় যে খাদ্যরসিক হবেন, সেটাই তো স্বাভাবিক ৷ কিন্তু তা বলে মাসে আড়াই লক্ষ টাকার ফল কিনবেন তিনি ? ফল খেতে কি তাঁর এতোই ভালো লাগে ? আপাতত এই প্রশ্নগুলির উত্তর খুঁজছেন এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেটের (Enforcement Directorate) গোয়েন্দারা ৷ এই নিয়ে তাঁরা কথা বলতে চাইছেন ভুবনেশ্বর এইমসের (Bhubaneswar AIIMS) চিকিৎসকদের সঙ্গে ৷
ইডি হেফাজতে থাকাকালীন পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের শারীরিক পরীক্ষা করানো হয় ওই হাসপাতালে ৷ চিকিৎসকরা জানিয়েছিলেন যে তৃণমূলের এই হেভিওয়েট নেতা দীর্ঘদিন ধরে টাইপ টু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত ৷ এই তথ্যই সন্দেহ তৈরি করেছে ইডির গোয়েন্দাদের মনে ৷ তাঁদের প্রশ্ন, এই ধরনের ডায়াবিটিসে আক্রান্ত কোনও ব্যক্তি কি পারেন মাসে আড়াই লক্ষ টাকার ফল খেতে ? এই প্রশ্নের উত্তরই ভুবনেশ্বর এইমসের চিকিৎসকদের কাছ থেকে জানতে চাইবেন ইডির গোয়েন্দারা ৷
এখানে উল্লেখ করা প্রয়োজন, গ্রেফতারির সময় প্রায় 24 ঘণ্টা পার্থ চট্টোপাধ্যায়ের বাড়িতে ছিলেন ইডির আধিকারিকরা ৷ সেই সময় তাঁর বাড়ি থেকে একাধিক নথি উদ্ধার হয় ৷ এছাড়া তাঁকে হেফাজতে নিয়ে টানা জেরা করা হয় ৷ সেখান থেকে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে বিভিন্ন জায়গায় তল্লাশিও করে ইডি ৷ সেই সব জায়গা থেকেও অনেক নথি পেয়েছেন তদন্তকারীরা ৷
ইডি সূত্রে খবর, ওই সমস্ত নথি খতিয়ে দেখতে গিয়েই ফলের বিল চোখে পড়ে গোয়েন্দাদের ৷ দেখা যায় যে কলকাতার নিউ মার্কেটের একাধিক দোকান থেকে ফল এসেছে পার্থর নাকতলার বাড়িতে৷ যার বিল প্রতিমাসেই প্রায় আড়াই লক্ষ টাকা ৷ তদন্তকারীদের ধারণা, টাইপ টু ডায়াবিটিসে আক্রান্ত পার্থ চট্টোপাধ্যায় এত টাকার ফল প্রতি মাসে খেতে পারেন না ৷ এই ফল কিনে আসলে দুর্নীতি থেকে আসা কালো টাকা সাদা টাকায় পরিণত করতেন তিনি ৷
তদন্তকারীদের অনুমান, নিউ মার্কেটের ফলের দোকানগুলিতে ফল বাইরে রাজ্যেও যায় ৷ ওই ফল পাঠানোর আড়ালেই ভিনরাজ্যে টাকা পাঠানোর কাজ চলত ৷ প্রতি মাসে সেই কারণেই আড়াই লক্ষ টাকার ফলের বিল তৈরি করে নিতেন পার্থ চট্টোপাধ্যায় ৷ এবার এই নিয়েই পার্থকে জেরা করতে চায় ইডি ৷ কিন্তু তার আগে ইডি চিকিৎসকদের থেকে জেনে নিতে চায় যে মাসে আড়াই লক্ষ টাকার ফল খেলে টাইপ টু ডায়াবেটিসের একজন রোগীর শারীরিক অবস্থার পরিণতি কী হতে পারে ? পার্থর কী তেমন কোনও শারীরিক পরিবর্তন হয়েছে ?
গোয়েন্দাদের অনুমান, পার্থর এই ফল-প্রীতি থেকেও উঠে আসবে কোনও চাঞ্চল্যকর তথ্য ৷ যা এই শিক্ষক নিয়োগ দুর্নীতি (Bengal SSC Scam) কাণ্ডে মোড় ঘুরিয়ে দিতে পারে ৷ তাই সঠিক কী তথ্য উঠে আসে, সেই দিকেই তাকিয়ে ওয়াকিবহাল মহল ৷