ETV Bharat / city

TMC wins in Municipal Corporation Election 2022: গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের ফল, তৃণমূলের বিপুল জয়ে প্রতিক্রিয়া বিরোধীদের

এই চার পৌরসভার ভোটে (Municipal Corporation Election 2022) বামেরা 97টি আসনে ও বিজেপি 87টি আসনে দ্বিতীয় হয়েছে ৷

Bengal Municipal Corporation Election
তৃণমূলের বিপুল জয়ে প্রতিক্রিয়া বিরোধীদের
author img

By

Published : Feb 14, 2022, 10:52 PM IST

কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি : ভোট হয়েছিল চার পৌরসভার 226 আসনে ৷ সোমবার প্রকাশিত ফলাফল বলছে বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি এই চার পৌরসভার (Municipal Corporation Election 2022) 226টি আসনের মধ্যে 198টি আসনই গিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে ৷ বাকি 28 আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে 12টি আসন, বামেরা জিতেছে 7 আসনে ও কংগ্রেস পেয়েছে 5টি আসন ৷ 4 জন নির্দল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৷

ভোট শতাংশের হিসেবে এই চার পৌরসভায় প্রদত্ত ভোটের 87.61 শতাংশ ভোটই পেয়েছে তৃণমূল ৷ সবুজ ঝড়ে প্রায় উড়ে গিয়েছে বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেস ও বামেরা ৷ নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, এই চার পৌরসভা মিলিয়ে বিজেপি পেয়েছে প্রদত্ত ভোটের 5.31 শতাংশ ৷ বামেরা পেয়েছে 3.1 শতাংশ ভোট, কংগ্রেসের পক্ষে গিয়েছে 2.21 শতাংশ ভোট ৷ 1.77 শতাংশ ভোট পেয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা ৷ তথ্য বলছে, প্রথম হতে না-পারলেও দ্বিতীয় স্থান দখল নিয়ে বাম ও বিজেপির মধ্যে টক্কর চলেছে ৷ চার পৌরসভায় বামেরা দ্বিতীয় হয়েছে 97টি আসনে, বিজেপি 87টি আসনে ৷

ভোটের আগে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজ ও নেতৃত্বের উপর ভরসা রেখে এই মার পৌরসভায় মানুষ তৃণমূল প্রার্থীদেরই ভোট দেবেন ৷ ফল প্রকাশ হতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের পক্ষে মানুষ শুধু রায়ই দেননি, ঢেলে ভোট দিয়েছেন ৷ বিরোধীদের জন্য কার্যত কোনও মাটিই ছাড়েননি ভোটাররা ৷ যে শিলিগুড়ি পৌরসভার ভোটের পর রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, চার পৌরসভার মধ্যে তুলনায় অনেকটাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে শিলিগুড়িতে, সেখানেও গেরুয়া শিবিরের ফল শোচনীয় ৷ 47টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে 37 আসন ৷ বিজেপি 5 ও বামেরা 4টি আসন পেয়েছে ৷ 2015 এর পৌর নির্বাচনে এখানে বামেরা পেয়েছিল 23টি আসন, কংগ্রেস 4টি ৷ তৃণমূল পেয়েছিল 17টি আসন ,বিজেপি 2টি ৷

আরও পড়ুন : চার পৌরনিগমেই তৃণমূলের ‘খেলা হল’, অস্তিত্ব সঙ্কটে বিরোধীরা

চার পৌরসভায় রাজ্যের শাসকদলের এই পর্বত প্রমাণ জয়ের পিছনে যদি পেশি শক্তির আস্ফালন থাকে তাহলে তা গণতন্ত্রের লজ্জা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ । রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক রাজীব রায় বলেছেন, "এটা যদি জনগণের রায়ের প্রতিফলন হয় তাহলে আগামী দশ বছর রাজ্যের শাসক দল চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে, তাদের জয় অবশ্যম্ভাবী । কিন্তু এই ফল যদি ভোটলুঠ, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ এবং পেশি শক্তি প্রয়োগের ফলে সম্ভব হয়ে থাকে তাহলে বলতে হবে বিষয়টি গণতন্ত্রের জন্য লজ্জার ।" এদিন পৌরভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, "শুধু এই সরকারকে দোষ দিলে ভুল হবে, এটা আমাদের রাজ্যের জন্য একটা পরম্পরা হয়ে আসছে । বাম আমলে ঠিক যেভাবে পেশিশক্তি সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভোট হয়েছে এখনও একই ঘটনা ঘটছে । এটা আমাদের রাজ্যের জনগণের জন্য হতাশার ৷ সরকার বদল হলেও তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের পরম্পরা বদলায় না ।"

অন্যদিকে, রাজ্যের শাসকদলের এই ভোট সাফল্যকে কোনও গুরুত্ব দিতেই রাজি নয় বিরোধীদলগুলি । এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, "ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে বাংলায় । এই ঘটনা আবার প্রমাণ করল রাজ্যের মানুষের অধিকার হরণে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল কতটা সিদ্ধহস্ত । যে দল তিনবার জনতার রায় রাজ্যে সরকার গঠন করেছে, তাদের এত ভয় কীসের ? যদি একটি পৌরনিগম তারা জনতার রায়ে হেরে যেতেন তাহলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হতো ?" একই মত, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীরও ৷ তিনি বলেন, "এখানে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে, সাধারণ মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হয়নি । তাই এই ফল কতটা প্রাসঙ্গিক তা নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই । তবে আমাদের এই ভোট থেকে শিক্ষা নিতে হবে । কোথাও যদি কোনও খামতি থাকে তাও সংশোধন করেই এগোতে হবে ।"

আরও পড়ুন : শিলিগুড়িতে হারলেও চার পৌরনিগমে ভোট বৃদ্ধিই বাম শিবিরে আশার আলো

রাজ্য বিজেপির অবস্থা শোচনীয় বলে এদিন কটাক্ষ করেছেন বিজেপি থেকে সাসপেন্ড হওয়া বিক্ষুব্ধ নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার । তিনি বলেন, "যাঁরা মুরলীধর লেনের পার্টি অফিসকে গারদে পরিণত করেছেন তাঁদের ভাবার সময় এসেছে । এখন তাঁরা কী বলবেন? চন্দননগর এবং বিধাননগরে বিজেপি খাতা খুলতে পারেনি । ভার্চুয়াল মাধ্যমে দল চালালে ফলাফল যেমনটি হওয়ার তেমনটি হয়েছে ।" যদিও জনগণের এই বিপুল সমর্থন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় । তিনি বলেন, "এই জয়ের একশো শতাংশ কৃতিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । তবে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন যত বাড়বে, মাথা নিচু করে আমাদের মানুষের কাছে যেতে হবে, তাঁদের উন্নয়নের কাজ করতে হবে । কাজেই ভোট শতাংশ একদিকে যেমন আমাদের জন্য আশীর্বাদ, একই সঙ্গে আমাদের প্রত্যেক কর্মীর জন্য বাড়তি দায়িত্ব । আগামী দিনে সেই দায়িত্ব সঠিক ভাবে আমাদের পালন করতে হবে।"

কলকাতা, 14 ফেব্রুয়ারি : ভোট হয়েছিল চার পৌরসভার 226 আসনে ৷ সোমবার প্রকাশিত ফলাফল বলছে বিধাননগর, চন্দননগর, আসানসোল ও শিলিগুড়ি এই চার পৌরসভার (Municipal Corporation Election 2022) 226টি আসনের মধ্যে 198টি আসনই গিয়েছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের ঝুলিতে ৷ বাকি 28 আসনের মধ্যে বিজেপি পেয়েছে 12টি আসন, বামেরা জিতেছে 7 আসনে ও কংগ্রেস পেয়েছে 5টি আসন ৷ 4 জন নির্দল প্রার্থী জয়ী হয়েছেন ৷

ভোট শতাংশের হিসেবে এই চার পৌরসভায় প্রদত্ত ভোটের 87.61 শতাংশ ভোটই পেয়েছে তৃণমূল ৷ সবুজ ঝড়ে প্রায় উড়ে গিয়েছে বিরোধী বিজেপি, কংগ্রেস ও বামেরা ৷ নির্বাচন কমিশনের দেওয়া হিসেব অনুযায়ী, এই চার পৌরসভা মিলিয়ে বিজেপি পেয়েছে প্রদত্ত ভোটের 5.31 শতাংশ ৷ বামেরা পেয়েছে 3.1 শতাংশ ভোট, কংগ্রেসের পক্ষে গিয়েছে 2.21 শতাংশ ভোট ৷ 1.77 শতাংশ ভোট পেয়েছেন নির্দল প্রার্থীরা ৷ তথ্য বলছে, প্রথম হতে না-পারলেও দ্বিতীয় স্থান দখল নিয়ে বাম ও বিজেপির মধ্যে টক্কর চলেছে ৷ চার পৌরসভায় বামেরা দ্বিতীয় হয়েছে 97টি আসনে, বিজেপি 87টি আসনে ৷

ভোটের আগে তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি ছিল, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাজ ও নেতৃত্বের উপর ভরসা রেখে এই মার পৌরসভায় মানুষ তৃণমূল প্রার্থীদেরই ভোট দেবেন ৷ ফল প্রকাশ হতে দেখা গেল মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দলের পক্ষে মানুষ শুধু রায়ই দেননি, ঢেলে ভোট দিয়েছেন ৷ বিরোধীদের জন্য কার্যত কোনও মাটিই ছাড়েননি ভোটাররা ৷ যে শিলিগুড়ি পৌরসভার ভোটের পর রাজ্য বিজেপি সভাপতি সুকান্ত মজুমদার বলেছিলেন, চার পৌরসভার মধ্যে তুলনায় অনেকটাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন হয়েছে শিলিগুড়িতে, সেখানেও গেরুয়া শিবিরের ফল শোচনীয় ৷ 47টি আসনের মধ্যে তৃণমূল পেয়েছে 37 আসন ৷ বিজেপি 5 ও বামেরা 4টি আসন পেয়েছে ৷ 2015 এর পৌর নির্বাচনে এখানে বামেরা পেয়েছিল 23টি আসন, কংগ্রেস 4টি ৷ তৃণমূল পেয়েছিল 17টি আসন ,বিজেপি 2টি ৷

আরও পড়ুন : চার পৌরনিগমেই তৃণমূলের ‘খেলা হল’, অস্তিত্ব সঙ্কটে বিরোধীরা

চার পৌরসভায় রাজ্যের শাসকদলের এই পর্বত প্রমাণ জয়ের পিছনে যদি পেশি শক্তির আস্ফালন থাকে তাহলে তা গণতন্ত্রের লজ্জা বলে মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ । রাষ্ট্রবিজ্ঞানের অধ্যাপক রাজীব রায় বলেছেন, "এটা যদি জনগণের রায়ের প্রতিফলন হয় তাহলে আগামী দশ বছর রাজ্যের শাসক দল চোখ বন্ধ করে বসে থাকতে পারে, তাদের জয় অবশ্যম্ভাবী । কিন্তু এই ফল যদি ভোটলুঠ, গণতান্ত্রিক অধিকার হরণ এবং পেশি শক্তি প্রয়োগের ফলে সম্ভব হয়ে থাকে তাহলে বলতে হবে বিষয়টি গণতন্ত্রের জন্য লজ্জার ।" এদিন পৌরভোটের ফলাফল বিশ্লেষণ করতে গিয়ে প্রেসিডেন্সি কলেজের প্রাক্তন অধ্যক্ষ অমল মুখোপাধ্যায় বলেন, "শুধু এই সরকারকে দোষ দিলে ভুল হবে, এটা আমাদের রাজ্যের জন্য একটা পরম্পরা হয়ে আসছে । বাম আমলে ঠিক যেভাবে পেশিশক্তি সন্ত্রাসের মাধ্যমে ভোট হয়েছে এখনও একই ঘটনা ঘটছে । এটা আমাদের রাজ্যের জনগণের জন্য হতাশার ৷ সরকার বদল হলেও তাদের গণতান্ত্রিক অধিকার হরণের পরম্পরা বদলায় না ।"

অন্যদিকে, রাজ্যের শাসকদলের এই ভোট সাফল্যকে কোনও গুরুত্ব দিতেই রাজি নয় বিরোধীদলগুলি । এ প্রসঙ্গে প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি অধীর চৌধুরী বলেন, "ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে বাংলায় । এই ঘটনা আবার প্রমাণ করল রাজ্যের মানুষের অধিকার হরণে পশ্চিমবঙ্গের শাসক দল কতটা সিদ্ধহস্ত । যে দল তিনবার জনতার রায় রাজ্যে সরকার গঠন করেছে, তাদের এত ভয় কীসের ? যদি একটি পৌরনিগম তারা জনতার রায়ে হেরে যেতেন তাহলে কী এমন মহাভারত অশুদ্ধ হতো ?" একই মত, সিপিএম নেতা সুজন চক্রবর্তীরও ৷ তিনি বলেন, "এখানে ভোটের নামে প্রহসন হয়েছে, সাধারণ মানুষকে গণতান্ত্রিক অধিকার প্রয়োগ করতে দেওয়া হয়নি । তাই এই ফল কতটা প্রাসঙ্গিক তা নিয়ে প্রশ্ন থাকবেই । তবে আমাদের এই ভোট থেকে শিক্ষা নিতে হবে । কোথাও যদি কোনও খামতি থাকে তাও সংশোধন করেই এগোতে হবে ।"

আরও পড়ুন : শিলিগুড়িতে হারলেও চার পৌরনিগমে ভোট বৃদ্ধিই বাম শিবিরে আশার আলো

রাজ্য বিজেপির অবস্থা শোচনীয় বলে এদিন কটাক্ষ করেছেন বিজেপি থেকে সাসপেন্ড হওয়া বিক্ষুব্ধ নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার । তিনি বলেন, "যাঁরা মুরলীধর লেনের পার্টি অফিসকে গারদে পরিণত করেছেন তাঁদের ভাবার সময় এসেছে । এখন তাঁরা কী বলবেন? চন্দননগর এবং বিধাননগরে বিজেপি খাতা খুলতে পারেনি । ভার্চুয়াল মাধ্যমে দল চালালে ফলাফল যেমনটি হওয়ার তেমনটি হয়েছে ।" যদিও জনগণের এই বিপুল সমর্থন শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেসের দায়িত্ব বহুগুণ বাড়িয়ে দিয়েছে বলে মনে করছেন তৃণমূল বিধায়ক তাপস রায় । তিনি বলেন, "এই জয়ের একশো শতাংশ কৃতিত্ব মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের । তবে তৃণমূল কংগ্রেসের সমর্থন যত বাড়বে, মাথা নিচু করে আমাদের মানুষের কাছে যেতে হবে, তাঁদের উন্নয়নের কাজ করতে হবে । কাজেই ভোট শতাংশ একদিকে যেমন আমাদের জন্য আশীর্বাদ, একই সঙ্গে আমাদের প্রত্যেক কর্মীর জন্য বাড়তি দায়িত্ব । আগামী দিনে সেই দায়িত্ব সঠিক ভাবে আমাদের পালন করতে হবে।"

For All Latest Updates

ETV Bharat Logo

Copyright © 2024 Ushodaya Enterprises Pvt. Ltd., All Rights Reserved.