কলকাতা, 3 ফেব্রুয়ারি : ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগে কোভিড-19-এর ভ্যাকসিনের প্রয়োগ চলবে না। তবে, যদি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল অথবা, প্রয়োগের ফলে যদি কারও কোনও মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হয় কিংবা, জীবনহানির ঘটনার সম্মুখীন হতে হয়, তা হলে তাঁর সম্পূর্ণ দায়িত্ব ও ক্ষতিপূরণ সরকারকেই দিতে হবে। এমনই দাবি করল এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরাম।
গত 16 জানুয়ারি থেকে আপৎকালীন পরিস্থিতির কারণে দেশজুড়ে শুরু হয়েছে কোভিড-19-এর ভ্যাকসিনেশন। এ রাজ্যে গত 16 জানুয়ারি থেকে কোভিড-19-এর একটি ভ্যাকসিন কোভিশিল্ড দেওয়া হচ্ছে স্বাস্থ্যকর্মীদের। বুধবার, 3 ফেব্রুয়ারি থেকে এ রাজ্যে শুরু হয়েছে কোভিড-19-এর অন্য একটি ভ্যাকসিন কোভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ। এ রাজ্যের সরকারি চিকিৎসকদের একটি সংগঠন সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের তরফে জানানো হয়েছে, যে সময় কোভিড-19-এর সংক্রমণ এবং মৃত্যুর সংখ্যা উল্লেখযোগ্য ভাবে কমছে, সেই সময় তড়িঘড়ি কোভিড-19-এর ভ্যাকসিনেশন শুরু করা হয়েছে। বুধবার থেকে শুরু হয়েছে কোভ্যাকসিন দেওয়ার কাজ।
সার্ভিস ডক্টরস ফোরামের সাধারণ সম্পাদক, চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "কিছু সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালে কোভ্যাকসিনের ট্রায়াল চলছে। এর পাশাপাশি এই ভ্যাকসিনের প্রয়োগও শুরু করা হয়েছে।" গত 16 জানুয়ারি থেকে সারা দেশে কোভিশিল্ডের প্রয়োগ করা হচ্ছে। এই ভ্যাকসিনটির ট্রায়ালের ক্ষেত্রেও সমস্ত নিয়ম মানা হয়নি। এ কথা জানিয়ে সজল বিশ্বাস বলেন, "কোভিড-19-এর মহামারি নিয়ন্ত্রণে ভ্যাকসিনেশন তখনই কার্যকর হতে পারে, যখন ভ্যাকসিনেশনের মাধ্যমে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি করা সম্ভব হবে। ভ্যাকসিন কোম্পানিগুলির দাবি অনুযায়ী, এই ভ্যাকসিনগুলির যা কার্যকারিতা রয়েছে, তা যদি সত্যিও হয় তা হলে 70% মানুষের ইমিউনিটি তৈরি করতে হলে দেশের সব মানুষকে অর্থাৎ, 140 কোটি মানুষকেই খুব অল্প সময়ের মধ্যেই ভ্যাকসিনেশন করাতে হয়। আমাদের দেশে সেই পরিকাঠামো নেই। তার উপর, সরকার এই দায়িত্বও নিচ্ছে না।"
আরও পড়ুন : ভীতি কাটিয়ে উৎসাহ বাড়াতে ভ্যাকসিন নিলেন স্বাস্থ্য-আধিকারিকরা
চিকিৎসক সজল বিশ্বাস বলেন, "তাহলে এত তড়িঘড়ি কেন? ভ্যাকসিনের ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগেই অনৈতিকভাবে ও অবৈজ্ঞানিকভাবে এর প্রয়োগ কেন?" তিনি বলেন, "আমরা দাবি করছি, ট্রায়াল শেষ হওয়ার আগে কোভ্যাকসিনের প্রয়োগ চলবে না। এবং, যদি ভ্যাকসিনের ট্রায়াল অথবা, প্রয়োগের ফলে যদি কারও কোনও মারাত্মক পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া দেখা দেয় কিংবা, জীবনহানির সম্মুখীন হতে হয়, তা হলে তার সম্পূর্ণ দায়িত্ব ও ক্ষতিপূরণ সরকারকেই দিতে হবে।"